আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তুলতে চাই

প্রকাশিত: 19/06/2020

নিজস্ব প্রতিবেদন :

আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তুলতে চাই

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এই বিশাল সমুদ্রসীমা এবং সম্পদ রক্ষার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে আরো শক্তিশালী করা প্রয়োজন এবং সেজন্য ইতিমধ্যেই অনেক আধুনিক সরঞ্জাম এবং জাহাজ আমরা ক্রয় করেছি। 

গতকাল বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নতুন সংযোজিত যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’-এর কমিশনিং প্রদানকালে এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধুর করে যাওয়া দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। আমরা শান্তি চাই। আমরা শান্তি চাই, এটা যেমন সত্য আবার কেউ যদি আমাদের ওপর হামলা করে তাহলে সেটা যেন আমরা যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে পারি সেজন্য যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আমরা গড়ে তুলতে চাই। তিনি বলেন, সেজন্যই আমরা চাচ্ছি আমাদের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীসহ প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যেন আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন হয়।

তিনিই সর্বপ্রথম খুলনা শিপইয়ার্ডকে নৌবাহিনীর দায়িত্বে দিয়ে দেন এবং পাশাপাশি চট্টগ্রাম এবং নারায়ণগঞ্জের দু’টি ড্রাইডককেও নৌবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন।

তিনি কমিশনিং করা এই যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’-এর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যোগদানে লেবাননে যাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’- সেই নীতি নিয়েই আমরা চলবো। কাজেই যেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা দরকার সেখানে আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকবে।

এই সহযোগিতা আমরা করে যাব। জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশ হিসেবে এটাকে আমাদের কর্তব্য বলে আমরা মনে করি। তিনি বলেন, আমি নৌবাহিনীর সকল সদস্যকে বলবো আপনার নিজেদের সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করেই স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করবেন। এই করেনাভাইরাসের সময় নিজেকে এবং পরিবারকে সকলে সুরক্ষিত রাখবেন।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের নৌবাহিনীতে সাবমেরিন এবং এভিয়েশন সিস্টেম যুক্ত হয়েছে। এখন আমাদের নৌবাহিনী ত্রিমাত্রিক। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এবং মিয়ানমারের সঙ্গে বন্ধুত্ব অটুট রেখে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে মামলা করে বাংলাদেশের জন্য বিশাল সমুদ্রসীমা প্রাপ্তিতে তার সরকারের সাফল্যও তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা আমাদের সমুদ্রসীমা সমস্যা দূর করার উদ্যোগ নিলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে ’৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে বানৌজা সংগ্রামের কমিশনিং ফরমান জাহাজটির অধিনায়ক ক্যাপ্টেন আরিফুর রহমানের কাছে হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে জাহাজটি নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রদর্শিত হয়। গণচীনে তৈরি বানৌজা সংগ্রাম ৯০ মিটার দীর্ঘ এবং ১১ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট। শত্রু বিমান, জাহাজ এবং স্থাপনায় আঘাত হানতে সক্ষম জাহাজটি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন কামান, ভূমি থেকে আকাশে এবং ভূমি থেকে ভূমিতে উৎক্ষেপণযোগ্য মিসাইল, অত্যাধুনিক থ্রিডি রাডার, ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম, রাডার জ্যামিং সিস্টেমসহ বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জামাদিতে সুসজ্জিত।

 

জাহাজটিতে হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য ডেক ল্যান্ডিংসহ অন্যান্য সুবিধাদি রয়েছে। জাতিসংঘের অধীনে পরিচালিত শান্তিরক্ষা মিশনে লেবাননের ভূমধ্যসাগরে মোতায়েনের জন্য আজকের কমিশনিং শেষে আজ ১৯শে জুন বানৌজা সংগ্রাম লেবাননের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।

আরও পড়ুন

×