প্রকাশিত: 09/07/2020
রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদের সাথে তাদের অন্তরঙ্গ ছবি ঘুরপাক খাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেই ছবিতে অনেকেই নানান বিরূপ মন্তব্য করছেন।
অথচ গত ৯ বছরেই রাজধানীর ধানমন্ডি, মিরপুর, উত্তরা, লালবাগ ও আদাবর সহ বিভিন্ন থানায় সাহেদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অন্তত ৩২টি মামলা হয়েছে। এমন অভিযোগের পরেও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা কোনো বাছবিচার ছাড়াই কিভাবে সাহেদের সাথে অন্তরঙ্গ ভঙ্গিতে ছবি তুললেন তা নিয়েই মানুষের যত প্রশ্ন।
জানা গেছে, ২০০৯ সালের দিকে সাহেদ ধানমন্ডি এলাকায় বিডিএস কিক ওয়ান এবং কর্মমুখী কর্মসংস্থান সোসাইটি (কেকেএস) নামে দু’টি এমএলএম কোম্পানি খুলে গ্রাহকদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এ পর্যন্ত সাহেদেরে বিরুদ্ধে ৩২টি মামলা রয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন থানায়। তারমধ্যে ধানমন্ডি, মিরপুর, উত্তরা, লালবাগ ও আদাবরে মামলার সংখ্যা বেশি।
মামলাগুলো হচ্ছে বাড্ডা থানায়-৩৭(৭)০৯, আদাবর-১৪(৭)০৯, লালবাগ-৪৭(৫)০৯, উত্তরা ২০(৭)০৯, উত্তরা ১৬(৭)০৯, উত্তরা ৫৬(৫)০৯, উত্তরা ১৫(৭)০৯, ৩০(৭)০৯, ২৫(৯)০৯, ৪৯(০৯)০৯, ১০(৮)০৯ সবগুলোই প্রতারণার বলে জানা গেছে।
প্রতারণার এসব টাকা রিজেন্ট কেসিএস লি. ইউসিবি ব্যাংক উত্তরা শাখায় অ্যাকাউন্ট নং-০৮৩২১০১০০০০১০০০৩, রিজেন্ট হাসপাতাল লি. ইউসিবি ব্যাংক উত্তরা শাখায় অ্যাকাউন্ট নং-০৮৩১১০১০০০০০০৬১৬, ব্র্যাক ব্যাংক উত্তরাসহ বিভিন্ন ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে তথ্য আছে।
র্যাব সূত্র জানায়, কোভিড-১৯ কালে ১০ হাজার রোগীর করোনা টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করে রিজেন্ট হাসপাতাল। মাত্র চার হাজার ২৬৪টি নমুনা সরকারিভাবে টেস্ট করে রিপোর্ট দেয়। বাকি পাঁচ হাজার ৭৩৬টি পরীক্ষা না করেই রিপোর্ট প্রদান করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের চুক্তি অনুযায়ী, বিনামূল্যে করোনা টেস্ট ও চিকিৎসা দেয়ার কথা ছিল, কিন্তু ১০ হাজার টেস্টের বিপরীতে রিজেন্ট প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এ ছাড়া ভর্তি রোগীপ্রতি এক লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা বাবদ বিল করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধু জুন মাসেই সরকারের কাছে চিকিৎসা বিল বাবদ পাঠানো হয় এক কোটি ৯৬ লাখ টাকার হিসাব। সেবার নামে এভাবেই অনৈতিকভাবে অর্থ আদায় করেছে রিজেন্ট।
এ দিকে, সাহেদের এই প্রতারণার চিত্র জনসমক্ষে এলে বিব্রত অবস্থায় পড়েন প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তি। ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডি-এক্টিভ করার আগেই সাহেদের ওয়াল থেকে অনেকেই ওই সব ছবি নিয়ে ভাইরাল করেন।