প্রকাশিত: 25/07/2020
স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির ১১টি উৎস চিহ্নিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।এসব দুর্নীতি বন্ধে ২৫ দফা সুপারিশও করেছে সংস্থাটি। কেনাকাটা, টেন্ডার, সেবা, নিয়োগ, বদলি, পদায়ন, ইকুইপমেন্ট ব্যবহার ও ওষুধ সরবরাহসহ বিভিন্ন খাতে কী ধরনের দুর্নীতি হয় তা তুলে ধরা হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম বিদায় নিলেও রেখে গেছেন দুর্নীতির নানা কীর্তি। এসবের সঙ্গে তিনি একা জড়িত নন। মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে একজন তৃতীয় শ্রেণির হিসাবরক্ষক পর্যন্ত এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ডে-নাইট নিউজ বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি নানা রকমের দুর্নীতি স্বাস্থ্যসেবাকে কলঙ্কিত করছে। এ কলঙ্কের দাগ অনেকের গায়েই আছে।এ দাগ এতদিন কিছুটা আড়ালে থাকলেও করোনা তা সামনে নিয়ে এসেছে।
দুদকের প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাতের ১১টি দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করা হয়েছিল।
দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্য খাতের নিয়োগ, বদলি কেনাকাটাসহ এ সংক্রান্ত কাজে নীতিমালা মানা হয় না। স্বার্থলোভী মহল রয়েছে এর পেছনে।
হাসপাতালগুলোতে সরকারি ওষুধ থাকার পরও তা রোগীদের দেয়া হয় না। পরে ওষুধ কালোবাজারে বিক্রি করে দেয়া হয়। দুর্নীতিটা এখানেই শেষ নয়, এ চুরির হিসাব রেজিস্টারে মিলিয়ে রাখা হয়।
বেআইনি ভাবে অপ্রয়োজনীয় চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কেনা হয়।এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীন প্রকিউরমেন্টে যুক্ত সিএমএসডিতে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে।
তাদের মাধ্যমে সব কিছু নিশ্চিত হয়ে যন্ত্রপাতি কেনা ও গ্রহণ করার ব্যবস্থা করতে বলা হয়। অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনে সরকারের কোটি কোটি টাকা নষ্ট না করতে বলা হয়। দুদকের সুপারিশে আরও বলা হয়, সব হাসপাতালে জরুরি হটলাইন, পরামর্শ ও অভিযোগ কেন্দ্র এবং যোগাযোগের সার্বক্ষণিক ব্যবস্থা রাখতে হবে।
এছাড়া প্রশাসনিক সুবিধার্থে স্বাস্থ্য অধিদফতর ভেঙে স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা নামে আলাদা দুটো অধিদফতরের প্রস্তাব দেয় দুদক। দুদক মনে করে অন্তত তাদের এ সুপারিশ খুলে দেখলে বা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে দেশের মানুষ হয় তো কিছুটা হলেও বাড়তি সেবা পেত।
এ প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট দফতর দুদকের সুপারিশ আমলে নেয়নি বলেই আমরা মনে করি। কারণ সে মেতাবেক তারা কোনো কাজ করেনি। কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আমরা নীতিমালা করার কথা বলেছিলাম। কাজটি করা হলে অন্তত কিছুটা হলেও স্বস্তির জায়গা তৈরি হতো।
তিনি জানান, দুদক থেকে করা সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে তাগিদ দিয়ে আবারও মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে চিঠি দেয়া হবে। আমরা অনুরোধ করব, দুদক টিম দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে প্রতিবেদনে যে সুপারিশ দিয়েছিল তা যেন বাস্তবায়নে নজর দেয় তারা।