প্রকাশিত: 11/08/2020
নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রথম মাসের (জুলাই) ২৬ দিনে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ৮ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার।তবে এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোন ঋণ নেয়নি সরকার।
বরং আগের দেনা বাবদ পরিশোধ করেছে দুই হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। ফলে জুলাই মাসে সরকারের নিট ব্যাংক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ছয় হাজার ১৪৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এভাবে ঋণ নেয়ায় বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত হবে। কারণ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য উচ্চাভিলাষী। এ লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়। সরকারের বিদেশি সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। তবে এসব লক্ষ্যে পৌঁছানো শুধু কঠিনই নয়, অনেক ক্ষেত্রে সম্ভবও নয়।
আবার সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমছে। সব মিলিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণের চাপ আরও বাড়বে। ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়ানোরও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও লক্ষ্যমাত্রা অনেক বেশি।
জানা যায়, বাজেট ঘাটতি মেটাতে প্রতি বছরই ব্যাংক থেকে ঋণ নেয় সরকার। তবে গত অর্থবছর থেকে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেই চলেছে। এজন্য সমাপ্ত অর্থবছরে সরকারি ঋণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করা হয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত সরকার পৌঁছে যায় সেই লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৭২ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। ঋণের এই অঙ্ক আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১০৯ শতাংশ বেশি।
রাজস্ব আদায়ে নাজুক অবস্থা এবং সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমে যাওয়ায় গত অর্থবছরের শুরু থেকেই ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের বেশি ঋণ নেয়ার প্রবণতা ছিল। তার মধ্যে অর্থবছরের শেষ দিকে এসে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে অর্থনীতির সব হিসাব এলোমেলো হয়ে যাওয়ায় ঋণনির্ভরতা আরও বেড়েছে। নতুন অর্থবছরে ব্যাংক খাত থেকে ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ সরকারের ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক; যা বাজেটে নির্ধারণ করেছে সরকার।