প্রকাশিত: 17/08/2020
দেশজুড়ে সিরিজ বোমা হামলার ১৫ বছর আজ। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩ জেলায় ৫৫০টি স্থানে একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালায় জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। এই হামলায় নিহত হয়েছেন ২ জন আহত হয়েছেন ১০৪ জন।
হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে ১৫৯ টি মামলা হয়। এর মধ্যে ৫৯ মামলার বিচার কাজ এখনও শেষ হয়নি। বাকি মামলাগুলো নিষ্পতি হয়েছে। সিরিজ বোমা হামলার ঘটনার পর জড়িত এক হাজারেরও বেশি জঙ্গি ধরা পড়ে। এদের মধ্যে অর্ধশতাধিক জঙ্গি জামিন নিয়ে এখন পলাতক আছে।
আদালত ও পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা যায়, বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা ১৫৯টি মামলায় ১৩০ জনকে আসামি করা হয়। পরে চার্জশিটে এক হাজার ৭২ জনকে আসামি করা হয়। বিভিন্ন অভিযানে গ্রেফতার হয় জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাইসহ ৯৬১ জন।
সাজাপ্রাপ্ত ৩২২ জনের মধ্যে ২৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এর মধ্যে ৬ জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। বাকি ২১ জন এখনও পলাতক। এসব মামলায় খালাস দেয়া হয়েছে ৩৫৩ জনকে। বাকি আসামিরা পলাতক। ফাইনাল রিপোর্ট দেয়া হয় ১৭টি মামলার। আর চার্জশিট দেয়া হয় ১৪২টি মামলায়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে দেশজুড়ে সিরিজ বোমা হামলাকে তারা ‘সাউন্ড বাস্ট’ নামে আখ্যায়িত করেছে। যেসব স্থানে বোমা হামলা হয়েছে, প্রতিটি জায়গায় তারা ‘ইসলামী আইন বাস্তবায়ন’ শিরোনামে লিফলেট ফেলে যায়। এছাড়া জেএমবি প্রতিষ্ঠার পর থেকে একের পর এক রক্তক্ষয়ী হামলা চালায়।
২০০১ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত অন্তত অর্ধশত হামলায় জড়িত ছিল জেএমবি। এসব হামলায় শতাধিক ব্যক্তি নিহত হন। জেএমবির হামলার মধ্যে রয়েছে রাজধানীর গোপীবাগে সিক্স মার্ডার ও ফার্মগেটে মাওলানা ফারুকী হত্যায়ও জেএমবি জড়িত।
জঙ্গি দমনের সঙ্গে যুক্ত দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ২০১৬ সালে গুলশান ও শোলাকিয়ায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলা চালিয়ে আতঙ্ক ছড়ায় জেএমবির নব্য ধারা (নব্য জেএমবি)। এই দুটি হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার মুখে সংগঠনটির শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরীসহ অন্তত ৭০ জঙ্গি নিহত হয়।
অনেক শীর্ষ নেতা গ্রেফতার হয়ে এখন কারাগারে। সংগঠনটি দুর্বল হয়ে পড়লেও নিঃশেষ হয়ে যায়নি। কারাগারের বাইরে থাকা জঙ্গিরা এখনও গোপনে তৎপর হওয়ার চেষ্টা করছে।