প্রকাশিত: 18/08/2020
বিআইজিডি ও পিপিআরসি'র, যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, মহামারির ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের প্রভাব এতদিন পরেও খুব কম মানুষই কাটিয়ে উঠতে পেরেছে।ফলে এখনো ১৭% পরিবারের কোনো আয়মূলক কাজ নেই বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষণাটিতে গ্রাম ও শহরের বস্তি এলাকার হাজার হাজার পরিবারের ওপর জরিপ চালানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার একটি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান এবং বিআইজিডি'র নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন এই উপাত্তগুলো উপস্থাপন করেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, মহামারি শুরু হওয়ার একমাস পর, এপ্রিলে মাসে গ্রামে ৫০% এবং বস্তি এলাকার মাত্র ৩২% পরিবার কোনোরকম আয়মূলক কাজে জড়িত ছিল। লকডাউন তুলে দেয়ার পর অনেকেই কাজে ফিরতে শুরু করেছে, তাই জুন মাসে এর হার যথাক্রমে ৮৩% ও ৮৪% এ উন্নতি হয়েছে। এখনো ১৭% পরিবারের কোনো আয়মূলক কাজ নেই।
গবেষণায় আরো বলা হয়, আয় যে এখনো কম সেটা বোঝা গিয়েছি তাদের খাবারের উপাত্ত থেকে। জন প্রতি খাওয়ার খরচ করোনাভাইরাস আঘাত হানার পরপর আগের চেয়ে অনেক নিচে নেমে এসেছিলো। জুন মাসে সেখান থেকে তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। করোনার আগে প্রায় সবাই তিন বেলা খেত, জুন নাগাদ বস্তি এলাকায় ১১% ও গ্রামে ৬% পরিবার তিন বেলা খেতে পারছিল না, ঢাকায় এই হার ১৫%। বেশিরভাগ শহর ও বস্তি এলাকার পরিবারগুলো মার্চ থেকে কোনো মাংস বা দুধ খেতে পারছে না। সবকিছু মিলে ব্যাপকভাবে তৈরি হয়েছে গোপন ক্ষুধা।
শহরের বস্তি এলাকায় করোনার অর্থনৈতক প্রভাব সবচেয়ে বেশি মারাত্বক। শহরে খাবারের বাইরেও অনেক খরচ রয়েছে, যেমন বাড়িভাড়া, বিভিন্ন বিল, যতায়াত খরচ অনেক বেশি। এসব খরচ মেটাতে না পেরে শহরের দরিদ্ররা অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে। যেমন ঢাকার ১৬% ও চট্টগ্রামের ৮% বস্তি এলাকার মানুষ অন্য জেলায় চলে গেছে। এই গবেষণা থেকে এটা পরিষ্কর, এই মহামারি আমাদের দেশে দারিদ্রের বিস্তার ও প্রকৃতি দুটোই পাল্টে দিচ্ছে।