প্রকাশিত: 25/08/2020
কক্সবাজারের উখিয়া থানার ওসি মর্জিনা আকতারসহ ৪ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করেছে ভিকটিম রিয়াদ সোলতানা নুরী।
২৫ আগস্ট মঙ্গলবার কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ মহেশখালীর রিয়াদ সোলতানা নূরী ৯২২) নামের এক তরুণী নারী নির্যাতন মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামীরা হলেন কনস্টেবল সুমন, পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) নুরুল ইসলাম ও এএসআই মো. শামীম।
মামলার বাদী মহেশখালী উপজেলার কালারমারছরার ৬ নং ওয়ার্ডের নয়াপাড়ার বাসিন্দা নুরুচ্ছবির মেয়ে। সে কক্সবাজারের একটি বেসরকারী কলেজের শিক্ষার্থী।
মামলাটি পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। নারী নির্যাতন আইনের ৯(১) সহ মামলায় ৩২৩/৩২৪/৩৪২/৩৭৯/৫০৬ দন্ডবিধি মতে অভিযোগ আনা হয়েছে। নারী ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট একরামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলাটির এজাহারে উল্লেখ করা হযেছে, কনস্টেবল মো. সুমনের (বর্তমানে রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কর্মরত) সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক রিয়াদ সোলতানা নুরীর।
সে সুবাদে বিয়ের কাবিনের কথা বলে গত ৭ জুলাই বেলা দু’টার দিকে খুনিয়াপালং চেকপোস্ট সংলগ্ন তার কক্ষে নিয়ে যায়। কাজী আসার অপেক্ষার অজুহাত দেখিয়ে কক্ষে বসিয়ে রাখে এবং সুযোগ বুঝে ধর্ষণ করে।
এরপর চেকপোস্টের পাশে একটি দোকানে বসতে বলে জরুরী কাজ দেখিয়ে সে স্থান ত্যাগ করে। অবশেষে রাত ১১টায় বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে টেলিফোনে জানান ভিকটিম রিয়াদ সোলতানা নুরী।
এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, উথিয়া থানায় সোলতানা নুরী গেলে অকথা ভাষায় গালিগালাজ করা হয় এবং তার নিকট থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেন ওসি মর্জিনা আকতার।
এরপর অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় তাকে কক্ষে আটকিয়ে রেখে ব্যাপক মারধর ও নির্যাতন চালানো হয়। এমনকি পায়ে রশি ও পরনের হিজাব দিয়ে চোখ বেঁধে একটি কক্ষে ঢুকিয়ে রাখারও অভিযোগ আনেন ভিকটিম নুরী। মামলার আরজির সাথে নির্যাতনের কিছু ছবি যুক্ত করা হয়।
নারী ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট একরামুল হুদা বলেন, বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে উখিয়া থানার ওসি মর্জিনা আকতারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে ৭ জুলাই ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নুরীকে তার থানায় নির্যাতন ঘটনাটি সত্য নয়।
মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর নিজ ষ্টেশনে দায়িত্ব পালন করা যায় কিনা বা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্ন করা হলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, মামলার কাগজপত্র হাতে পেলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।