প্রকাশিত: 29/08/2020
বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি লাগামহীন হতে পারে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণা সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন। বাংলাদেশের কয়েকজন বিশেষজ্ঞকে উদ্ধৃত করে অস্ট্রেলিয়ার পুরস্কারপ্রাপ্ত দক্ষিণ এশিয়ান বিষয়ক লেখিকা সোফি কাজিন্স তার প্রতিবেদনে বলেছেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বাজে অবস্থা এখনও আসেনি।
ল্যানসেটের প্রতিবেদনে আরো আশংকা প্রকাশ করা হয় যে, একদিকে বর্ষা অন্যদিকে ডেঙ্গ এরমধে করোনা। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ জুড়ে লাগামহীনভাবে করোনা ভাইরাস সংক্রমন ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ল্যানসেটের প্রতিবেদনে করোনা পরীক্ষার জন্য সরকার যে ফি নির্ধারণ করেছে তারও সমালোচনা করা হয়েছে। ফি নির্ধারণের ফলে পরীক্ষার হার কমে প্রতিদিন ১ হাজার মানুষে ০.৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আগস্টে প্রতি এক হাজারে ০.৬ হারে টেস্ট হয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এমিনেন্সের প্রধান শামীম তালুকদার দ্য ল্যানসেটকে বলেন, এই মহামারি বাংলাদেশের অনৈতিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে উম্মোচিত করেছে। তিনি বলেন, শুরুতে বেসরকারি খাতকে টেস্ট করতে দেওয় হয়নি, এখন আবার ফি নেওয়ার ফলে গরীব মানুষেরা বাদ পড়ছেন।
ঢাকার কয়েকটি কবরস্থানে ঘুরে সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে কথা তালুকদার বলেছেন, সরকারি হিসাবের চেয়ে চারগুণ বেশি মৃত্যু হয়েছে। অনেকে উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেও করোনা পরীক্ষা হয়নি।
বাংলাদেশের আইইডিসিআর-এর সাবেক পরিচালক মাহমুদুর রহমানও টেস্টের জন্য ফি নির্ধারণের ব্যাপারে সমালোচনা করে বলেছেন, করোনা ও বন্যার ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের হাতে কাজ নেই। এমন অবস্থায় সরকারের টাকা নেওয়া উচিত হচ্ছেনা।
করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার জন্য জুলাই মাসে বাংলাদেশের একজন হাসপাতাল মালিককে গ্রেফতারের পর দেশটির ভঙ্গুর বেসরকারি স্বাস্থ্যখাতকে সামনে তুলে আনে। আইইডিসিআর-এর সাবেক পরিচালক মাহমুদুর রহমান মনে করেন এমন জালিয়াত বন্ধে সরকারে জরুরীভাবে নজরদারি ব্যবস্থা স্থাপন করা উচিত যাতে মানুষের মধ্যে করোনার পরীক্ষা নিয়ে বিশ্বাস স্থাপন করা যায়।
আন্তর্জাতিক জরিপকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশের এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৩ লাখ ৬ হাজার ৭৯৪ জন। মারা গেছেন ৪ হাজার ১৭৪ জন।