রোহিঙ্গা সমস্যা ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত: 05/09/2020

রেজাউল করিম :

রোহিঙ্গা সমস্যা ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া

হাজার বছর ধরে মিয়ানমাওে বসবাস করে আসা রোহিঙ্গারা জাতিগত নিপীড়নের শিকার হয় ২০১৭ সালের মাঝামাঝি থেকে। সে দেশের সেনাবাহিনী ও জাতিগত রাখাইনরা গনহত্যা চালায় রোহিঙ্গাদের উপর। সহ বিভিন্ন আন্তজাতিক সংস্থার মতে, এতে প্রাণ হারায় প্রায় ৬৭০০ রোহিঙ্গা এবং শরনার্থী হিসেবে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় ৬,৫০,০০০ রোহিঙ্গা সারা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ এই হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফুসে উঠে। বিশ্বের প্রতিক্রিয়ার সার্বিক চিএ নিম্নে তুলে ধরা হলো –

ড় জাতিসংঘের সাধারন পরিষদ রোহিঙ্গাদের উপর চালানো গনহত্যাকে ‘‘ জাতিগত নিধন ” হিসেবে অভিহিত করেছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব এ্যান্তনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা সংকট নিরসওে ৩ টি ফরমুলা দেন। রোহিঙ্গাদেও সুরক্ষার প্রস্তাব ও দেন জাতিসংঘ। এছাড়া জাতিসংঘের অংগসংস্থা মিয়ানমারের সাথে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন সব সময়ের মতোই রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলেছে এবং মিয়ানমারের ভ’মিকার সমালোচনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র কঠোর অবস্থানের কথা বললেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা বা অবরোধ দেয়নি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে।

মালয়েশিয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে নিরাপদ পূনবার্সনের দাবি জানিয়েছে মিয়ানমারের প্রতি। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ রোহিঙ্গারা মিয়য়ানমারের হাজার বছরের বাসিন্দা বলে দাবি করেন এবং তাদের স্থায়ী প্রত্যাবর্তনের প্রতি জোর দেন। মুসলিম দেশগুলো মিয়ানমারের ভ’মিকার তীব্র সমালোচনা করেছে। মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসির ও তুরুস্ক মিয়ানমারের অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে বিশ্ব মিডিয়ায় কঠোর অবস্থান তুলে ধরেছেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে নোবেল বিজয়ী নেএী অং সাং সুচির ভ’মিকার কঠোর সমালোচনা করে বিভিন্ন দেশ তাকে দেওয়া পদক ও পুরষ্কার প্রত্যাহার করেই চলেছে। তার নোবেল পুরষ্কার বাতিলের দাবিতে পিটিশনে স্বাক্ষর করেছে লাখ লাখ মানুষ। বিশ্বের প্রায় সব বড় বড় মিডিয়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের মানবিক ভূ’মিকার প্রশংসা ও সমর্থন করেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্ব মিডিয়া দিয়েছে ‘‘মাদার অব হিউমিনি ” উপাধি।

কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে ভারত, চীন ও রাশিয়া মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। মানবিক দিককে উপেক্ষা করে চীনের সাথে দ্বৈরথে এগিয়ে থাকতে ভারত বাংলাদেশকে সমর্থন না করে মিয়ানমারকে সমর্থন করেছে। এছাড়াও আসামেনর ৪০ লাখ বাঙ্গালিকে বাংলাদেশের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দাবি করে ভারত সরকার বাংলাদেশকে চাপে রাখতে চায়। ফলে তাদের এ অবস্থানে অবাক হবার কিছু নেই।

সার্বিক দিক বিবেচনায় নিলে বিশ্ব বাসী বাংলাদেশের মানবিক কু’টনীতির পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে। বিভিন্ন দেশ ও এজিও বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সাহায্য করছে। ফলে বলা যায় বৃহৎ তিন পরাশকিÍর বিরুদ্ধে অবস্থান স্বত্ত্বেও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়ার বিচারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের কৌশল এখনো পর্যন্ত কার্যকরি বলা যায।

আরও পড়ুন

×