সীমান্তে সেনা সমাগম নিয়ে মিয়ানমারের মিথ্যাচার!

প্রকাশিত: 30/09/2020

অনলাইন ডেস্ক:

সীমান্তে সেনা সমাগম নিয়ে মিয়ানমারের মিথ্যাচার!

সম্প্রতি মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশ সেনা সমাবেশ ঘটাচ্ছে বলে মিয়ানমারের সামরিক কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে। দেশটির ইংরেজি পত্রিকা দ্য ইরাবতিতে সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে।

দুই সপ্তাহ আগে একই অভিযোগ করেছিল বাংলাদেশ। বিপরীতে এখন  বাংলাদেশের সেনা সমাবেশের যে অভিযোগ মিয়ানমার করছে তা অস্বীকার করেছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।

দি ইরাবাতিতে সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল জ মিন টুন অভিযোগ করেছেন, সম্প্রতি 'দ্বিপাক্ষিক সামরিক সম্পর্কে ব্যাঘাত না ঘটিয়ে' দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী সীমান্তে টহল বাড়িয়েছিল। কিন্তু এখন বাংলাদেশ সীমান্তে সেনা সমাবেশ করছে বলে অভিযোগ মেজর জেনারেল জ মিন টুনের। 

দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকটি অসমর্থিত সূত্রকে উদ্ধৃত করে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশের ১০ নম্বর ডিভিশনে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি করতে দেখা গেছে। এই সঙ্গে সেখানে ১৫৫ মিমি রকেট লঞ্চার, কাঁধে নিয়ে চালানো অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট মিসাইলস এবং অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট মেশিন গানসহ অস্ত্র সমাগম করছে বাংলাদেশ এমন অভিযোগও করা হয়েছে।

শনিবার এক অনলাইন প্রেস কনফারেন্সে মেজর জেনারেল জ মিন টুন বলেন, বুথিডং ও মংডুতে সম্প্রতি আরাকান আর্মি এবং আরসার তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

এখন বাংলাদেশের এই আপত্তি ও অভিযোগ জানানোর বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র সন্দেহ পোষণ করে বলেছেন, বাংলাদেশের কোনো 'গোপন এজেন্ডা' রয়েছে বলে তারা মনে করেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির কর্মকর্তারা কেউই সীমান্তে সেনা বাড়ানোর কথা স্বীকার করেননি। মিয়ানমারের এ অভিযোগকে কর্মকর্তারা অসত্য বলে দাবি করেছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, দুই সপ্তাহ আগে সীমান্তে মিয়ানমারের সেনাদের গতিবিধি বেড়ে গেছে অভিযোগ করে ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে ডেকে উদ্বেগ জানানো হয়েছিল এবং আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয়া হয়েছিল।

তার জবাবে মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল যে, ওই মহড়া 'হুমকি বা ভয় দেখানোর' জন্য ছিল না। কিন্তু তখনও বাংলাদেশের কর্মকাণ্ড নিয়ে সন্দেহ পোষণ করার মতো কোনো বক্তব্য দেয়নি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।

মিয়ানমারের ওই খবরটির সঙ্গে প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একটি দল একটি রকেট লঞ্চার স্থাপনের চেষ্টা করছেন।

বিজিবির কর্মকর্তারা বলেছেন, ছবিটি বিজিবির কোনো একটি প্রশিক্ষণ কালে তোলা এবং বেশ আগের।

সীমান্তবর্তী টেকনাফ ও বান্দরবানের ঘুমধুমের স্থানীয় মানুষ, সংবাদকর্মী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অনেকে জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি সেনা টহল লক্ষ্য করার পর থেকেই মূলত ওই সব এলাকায় বিজিবি টহল দিচ্ছে। আর এমন সব জায়গায় টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে যেখানে কোনো টহলচৌকি নেই।

এছাড়া অস্ত্র সমাগমের যে অভিযোগ মিয়ানমার তুলেছে, সেটিও সত্য নয় বলে স্থানীয় মানুষেরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন

×