মতানৈক্য না হওয়ায় কেন্দ্রে দুই কমিটি জমা বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত: 05/10/2020

অনলাইন ডেস্ক:

মতানৈক্য না হওয়ায় কেন্দ্রে দুই কমিটি জমা বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের

মতানৈক্য না হওয়ায় কেন্দ্রে পৃথকভাবে দুটি কমিটি জমা দিয়েছে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সম্মেলনে ঘোষিত জেলা কমিটির বর্তমান নেতাদের সাথেও সমন্বয় হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত শুক্রবার ঢাকায় ধানমন্ডি কার্যালয়ে এ কমিটি জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে করে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে দলীয় নেতাকর্মীসহ বগুড়ার রাজনৈতিক মহলে।

নেতাকর্মীরা চেয়ে আছেন এখন কেন্দ্রের দিকে। তবে কেন্দ্র থেকেই সিদ্বান্ত দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৭ ডিসেম্বর বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে মজিবর রহমান মজনুকে সভাপতি এবং রাগেবুল আহসান রিপুকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। 

একই সাথে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সম্মেলনের উদ্বোধক সদ্য প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম, টি জামান নিকেতাকে সহসভাপতি; মঞ্জুরুল আলম মোহন, সাগর কুমার রায়, এ কে এম আসাদুর রহমান দুলুকে যুগ্ম সম্পাদক এবং মাসুদুর রহমান মিলনকে অর্থ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।

সম্মেলনের ১০ মাস পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হলেও মতানৈক্য হয়নি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে। তারা দুজনে পৃথকভাবে দুটি কমিটি জমা দিয়েছেন। সভাপতি মজিবর রহমান মজনু সম্মেলনে ঘোষিত সহসভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক ও অর্থ সম্পাদকের সাথে কথা বলে কমিটি করলেও সাধারণ সম্পাদকের সাথে মতানৈক্য হয়নি।

অপরদিকে, সাধারণ সম্পাদকও অভিযোগ করেছেন সভাপতির সাথে কমিটি গঠন নিয়ে ঐক্য না হওয়ায় সমঝোতা হয়নি। এজন্য কেন্দ্রে তারা পৃথক দুটি কমিটি জমা দিয়েছেন। দুজনেই ত্যাগী ও সাবেক ছাত্রনেতাসহ ক্লিন ইমেজের নেতাদের অন্তর্ভুক্তির কথা বললেও আলাদাভাবে কমিটি জমা দিয়েছেন।

এতে সভাপতির কমিটিতে কেউ পদোন্নতি আবার সাধারণ সম্পাদকের কমিটিতে অবনতি হয়েছে। আবার পুরাতন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তিকে একজন বাদ দিয়েছেন অন্যজন তাকে আগের পদেই রেখেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

দুজনের কমিটিতে পছন্দের লোক নিতে গিয়ে কেউ কেউ প্রত্যাশার চেয়ে বড় পদ পেয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন নেতাকর্মীরা।

জেলা আওয়ামী লীগের বিগত কমিটির প্রচার সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনি জানান, দলের বিভিন্ন স্থরের নেতাকর্মীরা প্রত্যাশা করেন, ত্যাগী ও বঞ্চিত, দীর্ঘদিন সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত, আন্দোলন, কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিল এবং আছে, যারা সুখে-দুখে নেতাকর্মীদের পাশে থাকে তাদেরকেই জেলা কমিটিতে রাখা হোক।

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন জানান, কেন্দ্র থেকে সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি করার নির্দেশনা ছিল। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আমাদের সাথে কমিটির বিষয়ে কথা বললেও সাধারণ সম্পাদক কোনো আলোচনা করেননি।

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু জানান, শেখ হাসিনার প্রত্যাশা অনুযায়ী ত্যাগী, ক্লিন ইমেজের সাবেক ছাত্রনেতা ও পুরাতন অভিজ্ঞ নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে জমা দিয়েছি। সাধারণ সম্পাদকের সাথে মতানৈক্য না হলেও নির্বাচিত অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে কমিটি জমা দেওয়া হয়েছে।

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু জানান, সভাপতির সাথে মতানৈক্য না হওয়ায় পৃথক কমিটি জমা দিয়েছি। নির্বাচিত নেতৃবৃন্দসহ বিগত কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে সমন্বয় করে কমিটি করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংগঠন করে আসা, ত্যাগী, দেশপ্রেমিক, ক্লিন ইমেজের নেতাকর্মীদের কমিটিতে রাখা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা এস এম কামাল হোসেন জানান, সাংগঠনিক কার্যক্রম তৎপরতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কেন্দ্র থেকে বিভাগীয় কমিটি করা হয়েছে। সমন্বয় করেই বগুড়া জেলা কমিটি ঘোষণা করা হবে। শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী কমিটিতে মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, ক্যাসিনো সম্পৃক্ত, হাইব্রিডরা স্থান পাবে না। ত্যাগী নেতাকর্মীদের দিয়ে বগুড়া জেলা কমিটি গঠন হবে।

আরও পড়ুন

×