প্রকাশিত: 07/10/2020
আগামী ডিসেম্বরে ২৫৬ পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে ডিসেম্বরে শীতে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে পারে—এ আশঙ্কায় ভোট না করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) চিঠি দিয়েছেন পৌর মেয়ররা।
৩২৮ পৌরসভার মধ্যে ২৮৪ পৌরসভা নির্বাচন আয়োজনে উপযোগী বলে নির্বাচন কমিশনকে তালিকা পাঠিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে ২৫৬ পৌরসভার মেয়াদ শেষ হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ ইত্তেফাককে বলেন, ‘আমরা ৩২৮টি পৌরসভা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নির্বাচন কমিশনকে দিয়েছি। এর মধ্যে ভোট উপযোগী পৌরসভার সংখ্যাও নির্দিষ্ট ফরম্যাটে জানানো হয়েছে। কমিশন এখন পর্যালোচনা করে দেখবেন, কোন পৌরসভার ভোট আগে করা দরকার, আর কোনটি পরে। এছাড়াও করোনায় ভোট হবে নাকি ভোট হবে না—সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেবেন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।’
ইসির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী অক্টোবর থেকে পৌরসভাগুলো নির্বাচন উপযোগী হবে। ডিসেম্বরে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে গত ৯ সেপ্টেম্বর নির্বাচন উপযোগী পৌরসভা সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য জানতে চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিল ইসি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদকে পাঠানো চিঠিতে পৌরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের লক্ষ্যে (ক) সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর শপথ ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ; (খ) সীমানা পরিবর্তন বা ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এমন পৌরসভার বিবরণী; (গ) সীমানা বা ওয়ার্ড বিন্যাসজনিত কারণে স্থগিত অথবা ইতিপূর্বে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি এরূপ পৌরসভার তথ্য ও সর্বশেষ অবস্থা; (ঘ) মামলাজনিত কারণে ইতিপূর্বে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি অথবা নির্বাচন স্থগিত হয়েছে এরূপ পৌরসভার তথ্যসহ মামলার বর্তমান অবস্থা জানানোর অনুরোধ করা হয়।
আগামী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব পৌরসভা মেয়াদোত্তীর্ণ হবে সেসব পৌরসভার সংখ্যা ২৮৪টি। যার মধ্যে ২৮টি পৌরসভায় ভোট হবে আগামী বছরের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে এবং বাকি ২৫৬ পৌরসভায় আসন্ন ডিসেম্বরে ভোট হওয়ার সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ আছে। এখন এগুলোতে এক দিনে নাকি ধাপে ধাপে ভোটগ্রহণ করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি।
তবে করোনা সংকট পরিস্থিতি ও স্কুল খোলা এবং বার্ষিক পরীক্ষার তারিখ বিবেচনা করে পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হবে। ডিসেম্বরে ভোট হলে নভেম্বরে তপশিল ঘোষণা করা হতে পারে।
শীতে নির্বাচন পেছানোর দাবি: পৌরসভা নির্বাচন করার উদ্যোগ শুরু হলে বিভিন্ন পৌর মেয়র প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার কাছে ভোট না করার জন্য চিঠি দিয়েছেন। এতে তারা উল্লেখ করেন, বিশ্ব আজ করোনা ভাইরাসের ভয়ে কাঁপছে। এ ঝুঁকির মধ্যেও জনপ্রতিনিধিদের জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনি কার্যক্রম গ্রহণ করলে কোনো প্রার্থী ঘর থেকে বের হতে পারবেন না, আবার ভোটাররাও ভোটকেন্দ্রে আসতে পারবেন না। এজন্য দুর্যোগের সময়ে নির্বাচন আয়োজন না করার জন্য অনুরোধ জানান তারা।
এ বিষয়ে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ নিয়ে এখনো নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারেননি। পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় তার ওপর নির্ভর করছে সবকিছু।