বিচ্ছেদের পর একে অপরের প্রশংসায় অপূর্ব-অদিতি

প্রকাশিত: 18/05/2020

নিজস্ব প্রতিবেদন :

বিচ্ছেদের পর একে অপরের প্রশংসায় অপূর্ব-অদিতি

সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব দ্বিতীয় স্ত্রী নাজিয়া হাসান অদিতির সঙ্গে দীর্ঘ ৯ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানলেন। রোববার (১৭ মে) নাজিয়া হাসান তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বিচ্ছেদের ইঙ্গিত দেন।

তিনি ঐ স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘স্টপ কলিং মি ভাবি এভরিওয়ান।’ এমন খবরে ভক্তদের মধ্যে সৃষ্টি হয় বিস্তারিত জানার আগ্রহ। গণমাধ্যম থেকে ফোনে অপূর্বর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও অদিতি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয় নি। তিনি শুধু বলেন, ‘কোন দিন যদি মনে হয় কী কারণে বিচ্ছেদ হয়েছে তা জানানো উচিত তাহলে জানাবো, এখন কিছুই বলবো না।’

রোববার রাতেই আরেক স্ট্যাটাসে অপূর্বর প্রশংসা করে নাজিয়া লিখেন, অপূর্ব একজন আশ্চর্য বাবা, প্রেমময় ভাই, দায়িত্বশীল পুত্র এবং একজন ভাল মানুষ ছিলেন। নিজের কাজ দিয়েই মিলিয়নস ভক্ত পেয়েছে।

দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা অসংখ্য কারণে একসাথে থাকছি না তবে আমি তাঁর জন্য সুখী ও সমৃদ্ধ জীবন কামনা করছি। তিনি আমাকে আমার পুত্র আয়াস এবং পরিবারের সদস্যদের ভালবাসা উপহার দিয়েছেন।

নাজিয়া আরও লিখেন- তাঁর ব্যক্তিগত জীবন দিয়ে নয়, দয়া করে তাঁর অসাধারণ কাজগুলি দ্বারা বিচার করুন। আপনারা আমাদের সবসময় ভালবাসা দিয়েছেন এবং সমর্থন করেছেন। আশা করি এটি অবিরত থাকবে।

পরবর্তীতে রাত ১২টার পর অপূর্ব তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ এ একটি স্ট্যাটাস দিয়ে তিনিও বিবাহবিচ্ছেদের সত্যতা স্বীকার করেছেন। বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়টি অপ্রত্যাশিত জানিয়ে অপূর্ব লিখেন- নাজিয়া হাসানের সঙ্গে দীর্ঘ ৯ বছরের চমৎকার জার্নির বিষয়টি ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সবার সঙ্গে শেয়ার করছি।

একটি অপ্রত্যাশিত বাঁক আমাদের হতবাক করে দিয়েছে। যদিও এটি আমরা চাইনি। কিন্তু কষ্টের হলেও এই বাঁকবদল আজ আমাদের এখানে এনে দাঁড় করিয়েছে।

প্রাক্তন স্ত্রীর প্রশংসা করে এ অভিনেতা লিখেন- দীর্ঘ সময় আমরা একসঙ্গে ছিলাম। নাজিয়া অসাধারণ একজন জীবনসঙ্গী ও সত্যিকারে শুভাকাঙ্ক্ষী ছিল। আমার জীবনের অনেক সফলতার চাবিকাঠি ছিল নাজিয়া।

সে অসাধারণ একজন মানুষ। আত্মবিশ্বাসী, উদ্যোমী- সবকিছু ছাপিয়ে সে অত্যন্ত দয়ালু ও মানবিক মানুষ। আমার ক্যারিয়ারে অনেক প্রাপ্তির মধ্যে জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন আমাদের পুত্র আয়াশ। এই চমৎকার উপহারের জন্য নাজিয়াকে কখনো ধন্যবাদ দিয়ে ঋণ শোধ করতে পারব না। সে অনুকরণীয় একজন মা।

পুত্র আয়াশের দায়িত্ব একসঙ্গে পালন করার বিষয়টি স্পষ্ট হয় অপূর্বর স্ট্যাটাসে। তিনি লিখেন- আমাদের ছেলের দায়িত্ব আমরা একসঙ্গে পালন করব।

সহকর্মী, ভক্তদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে অপূর্ব লিখেন- আমি বুঝতে পারছি, বিবাহবিচ্ছেদের মতো ভয়ংকর ঘটনা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিবে।

এজন্য বন্ধু, সহকর্মী এবং অসংখ্য ভক্তকে সদয়ভাবে আমাদের বিষয়টি ভাবার জন্য অনুরোধ করছি। যাতে আমি আর নাজিয়া এই কঠিন সময় পার করতে পারি।

নাজিয়া তার স্ট্যাটাসে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করতে মানা করলেও বিভ্রান্তিকর কিছু সংবাদ প্রকাশের পর অপূর্ব তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে আরেকটি স্ট্যাটাসে লিখেন- ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে গসিপ করা এবং তীর্যক, মিথ্যা বানোয়াট মন্তব্য করে তাদের কষ্ট বাড়িয়ে দেওয়ার মতো খারাপ কাজ গুলো থেকে সবাই বিরত থাকবেন এবং এর মধ্যে রসালো কোন গল্প তৈরী করে সংবাদ করার চেষ্টা করবেন না।

বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়টি নিয়ে আবার তিনি লিখেন- আমি এবং আমার স্ত্রী অদিতি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ সমাধানের মধ্যদিয়ে আমাদের সম্পর্কের আইনগত ভাবে ইতি টেনেছি।

মিথ্যে সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে এই অভিনেতা লিখেন- কোন সংবাদ মাধ্যম এই ব্যাপারটাতে তৃতীয় কাউকে জড়িয়ে কোন ধরনের ভুল সংবাদ প্রকাশ করলে আমি তাদের বিরুদ্ধে আইসিটি এক্টে আইনগত ব্যবস্থা নিব। অলরেডি প্রকাশিত কিছু সংবাদের লিংক আমি সংগ্রহ করেছি।

এখানে আরো উল্লেখ্য আমি অদিতিকে সম্মান করি এবং আজীবন করবো। সুতরাং কোনভাবেই অদিতিকে অসম্মান করে তার পাশে অন্য কারো নাম আমি সহ্য করবো না। ভুলে যাবেন না অদিতি এখনো আইনগত ভাবে আমার স্ত্রী না থাকলেও সে আমার সন্তানের মা।

২০১১ সালের ২১ ডিসেম্বর নাজিয়া হাসান অদিতির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন অপূর্ব। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে। এ সংসারে জায়ান ফারুক আয়াশ নামে এক পুত্র সন্তান রয়েছে।

এর আগে জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন অপূর্ব। ২০১০ সালের ১৮ আগস্ট একটি নাটকের শুটিং করতে গিয়ে বিয়ে করেন তারা। কিন্তু রাজিব নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রভার সম্পর্কের কথা জানতে পেরে ২০১১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এ সংসারের ইতি টানেন অপূর্ব।

আরও পড়ুন

×