স্বর্গীয় রনজিৎ কুমার দে মহোদয়ের স্মৃতির শ্রদ্ধায়  শিক্ষক, সাহিত্যিক বাবুল চন্দ্র দাশ 

স্বর্গীয় রনজিৎ কুমার দে মহোদয়ের স্মৃতির শ্রদ্ধায়  শিক্ষক, সাহিত্যিক বাবুল চন্দ্র দাশ 

শ্রদ্ধেয় রনজিৎ কুমার দে,চট্টগ্রাম জেলাস্হ রাঙ্গুনীয়া উপজেলার শান্তিনিকেতন গ্রামের প্রাজ্ঞ পুরুষ।প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যতিরেক একজন মানুষ প্রাজ্ঞতায় এত ধনী হতে পারেন, তাঁকে না দেখলে বা তাঁর সাথে কথা না হলে বোধে আনা কঠিন।

ইস্পাহানী গ্রুপের এক শিল্প কারখানায় চাকরি করতেন।কিন্তু বেশীদিন স্হিতু হননি বদ্ধ নিয়মে।যিনি ছিলেন মুক্ত পুরুষ।কিভাবে থাকতে পারেন বদ্ধ পরিবেশে।তথাকথিত নিয়ম যে তাঁর পছন্দ নয়।উন্মুক্ত পরিবেশে মুক্ত বাতাসে বিশুদ্ধ অক্সিজেন নিতে যিনি উদ্গ্রীব।তাই ছেড়ে দিলেন চাকরী।গ্রামে দৈনিক কাজ করতেন সংসার পরিপালন,পরিপোষণ এর তাগিদে

একপর্যায়ে হলেন বিখ্যাত পাচক।পুরো উপজেলায় পাচক হিসেবে হয়ে উঠলেন সকলের জনপ্রিয়। যা ছিল ঈর্ষনীয়।পাচক কাজকে নিয়েছিলেন শিল্প হিসেবে।রান্নায় এনেছিলেন বৈচিত্র।শেষ অবধি রন্ধন শিল্পে মনোযোগী ছিলেন।

পূর্বে উল্লেখ করেছি এই কৃতি পুরুষের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কথা।প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকা সত্বেও যাঁর মননশীলতা ছিল ক্ষুরধার।বিভিন্ন ধর্ম এবং ইতিহাস সম্পর্কে তাঁর ছিল গভীর জ্ঞান।গ্রামের সন্তানদের নীতি নৈতিকতায় এবং বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতেন নিয়ত।যেখানেই বসত সেখানেই জমে উঠত গল্পের আসর।জড়ো হতো সবাই বিভিন্ন বিষয়ে জানার আগ্রহে।উচ্চ সনদের অধিকারীরাও তাঁর কথায় মুগ্ধ হতেন এবং জেনে নিতেন অনেক অজানা তথ্য।

সমাধান পেতেন বিভিন্ন সমস্যার।এলাকায় সুশিক্ষার আলোয় যেন প্রজন্ম আলোকিত হয় তা'তেই সচেষ্ট থাকতেন।প্রজন্ম যেন ধর্মান্ধ না হয়ে ধার্মিক হয় তার প্রচেষ্টা ছিল নিয়ত।কুসংস্কার এবং ধর্মান্ধ ছিল যাঁর কাছে বিব্রতকর।অনেক আধ্যাত্মিক পুরুষ অর্থাৎ সাধু-সন্ন্যাসীদের সাথে তর্কে জড়াতেন শাস্ত্র বিরুদ্ধ বলা বা আচার ব্যবহারের বিরুদ্ধে।

প্রায়য়শঃ বিকেলবেলা এলাকার তরুন- যুবাদদের নিয়ে খোলা মাঠে নদীর পারে বসতেন বই পড়ায়।বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন উত্তরে আলোকিত হতো পাঠের আনন্দ। এলাকার তরুন-যুবাদের সৃজনশীলতা এবং মননশীলতায় উদ্ভাসিত করেছেন প্রতিনিয়ত। তাঁর কর্ম-প্রচেষ্টা গ্রামকে করেছে আলোকিত ও সমৃদ্ধ। এই কৃতি পুরুষের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও প্রণাম।

আরও পড়ুন

×