প্রকাশিত: 17/07/2021
স্ত্রী সন্তান রেখে পরকীয়া প্রেমিকাকে বিয়ে, অতঃপর তালাক, অতঃপর আবার বিয়ে! লাবনী আক্তার নামের এক নারীর সুখের সংসার ভেঙ্গে তছনছ করে দিয়েছে বরিশাল নগরীর সিএন্ডবি রোড এলাকার ফাতেমা ছনিয়া নামের এক সন্তানের জননী। শুরুতে পরকীয়া প্রেম তারপর ইকবাল নামের ওই প্রেমিককে বিয়ে করে ৩ মাসের মাথায় তালাক দিয়ে মহরের ৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন ছনিয়া। এরপর নিয়ামানুযায়ী ৩ মাস ১০ দিন অপেক্ষা না করে মাত্র দুই মাসের মাথায় পুনরায় তাকেই আবার বিয়ে করেন। মাঝখানে ভেঙ্গে তছনছ করে দেন প্রথম স্ত্রী লাবনীর সংসার। তালাক হয়ে যায় ইকবাল- লাবনী দম্পতির।
স্বামীকে ধরে রাখতে নিজের সংসারের কথা চিন্তা করে স্বামী ইকবালকে ছনিয়ার থেকে সরিয়ে আনতে দেন মহরের ওই টাকাও ব্যাবস্থা করে দেন তিনি। কিন্তু দেন মহরের টাকা পাওয়ার দুই মাসের মাথায় ইকবাল ছনিয়া পুনরায় বিয়ে করে সংসার শুরু করেন।
এ ঘটনায় দুঃখে-কষ্টে মারা যান প্রথম স্ত্রীর পিতা জব্বার সরদার। এসব ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (গ) ধারায় একটি মামলাও করে প্রথম স্ত্রী লাবনী আক্তার। মামলা নং ৩৩৪/১৮ এমপি নং-২১০/১৮। উক্ত মামলায় ইকবালের নামে ওয়ারেন্ট জারি করে আদালত। এ দিকে ইকবাল বিদেশ থাকার সুযোগে ছনিয়া নতুন করে আরো ২/৩ জনের সাথে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে পরোকিয়ায় আশক্ত হন। সিএন্ডবি রোড এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক জানান, এসকল নোংরামির জন্য আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এমতাবস্থায় ইকবাল দেশে চলে আসলে সে ঘটনা যেমনি ফাস হয়ে যায় ইকবালের কাছে তেমনি ফাস হয়ে যায় নতুন পরকিয়া প্রেমিকদের কাছে। অন্যদিকে পুনরায় ছনিয়ার সাথে সংসার শুরু করায় এবং মামলার ভয়ে ৬ লাখ টাকার আপোষ মিমাংসার মাধ্যমে প্রথম পক্ষের স্ত্রীর লাবনীর সঙ্গেও আপোষ মিমাংসায় তালাক হয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা করে ইকবাল। আর ওই ৬ লাখ টাকার ৩ লাথ টাকা নগদ বুঝিয়ে দিলেও বাকী টাকা বুঝিয়ে দেয়া হয়নি লাবনী আক্তারকে। মাঝপথে ইকবালকে বিয়ে করে তালাক দেয়ার নাটক করে দেন মহরের ৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে ছনিয়া। অবশ্য ইকবালের দাবী এই ৬ লাখ টাকার মধ্যে ১ লাখ টাকা তিনি তার প্রথম স্ত্রীর পিতার কাছ থেকে নিয়েছেন, বাকী টাকা তিনিই দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাগরদী এলাকার নগরীর নবগ্রাম রোড, পশু হাসপাতাল আলতাব মহলের ইকবাল নামের সাথে লাবনী আক্তারের বিয়ে হয় প্রায় ১৫বছর আগে। সেই সংসারে আঃ রহমান তাজিম নামের ১২ বছরের একজন পুত্র সন্তান রয়েছে। ইকবাল থাকেন সৌদি আরব। ভালই চলছিল তাদের সংসার। হঠাৎ করেই নগরীর সিএন্ডবি রোড, বৌদ্ধ পাড়া হাসান ভিলার ফাতেমা (ছনিয়ার সাথে পরিচয় হয় ইকবালের। পরিচয়ের জের ধরে ইকবালের সাথে পরকীয়ায় জড়ায় ছনিয়া। এ ঘটনা প্রথম স্ত্রী লাবনী আক্তার জানতে পারলে সংসারে অশান্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে ছনিয়া এবং ইকবাল বিবাহ বন্ধনে জড়ায়। ঘটনা জানাজানি হলে সাংসারিক কোন্দল আরো বাড়তে থাকে। পরে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ছনিয়া এবং ইকবালের তালাক হয়। দেন মহরের ৬ লাখ টাকা চাওয়া হয় লাবনী আক্তারের কাছে। লাবনীর পিতা ঝালকাঠী জেলার সৈয়দকাঠী, বালুক দিয়া এলাকার জব্বার সরদার তাকে ১লাখ টাকা সংগ্রহ করে দেয়। বাকী টাকা মিলিয়ে ছনিয়াকে ৬ লাখ টাকা দেনমহরের টাকা পরিশোধ করে ইকবাল। এর ঠিক ২মাস পর আবার ২৬ নভেম্বর ২০১৬ইং তারিখে ফের বিয়ে করে ছনিয়া আর ইকবাল। পরে এ সব ঘটনায় তিক্ত বিরক্ত হয়ে লাবনী আক্তার বাদী হয়ে নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করে এবং সর্বশেষ ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে লাবনীর দেন মহরের পাওনা ৩ লাখ টাকা পাওয়ার পর তালাক হওয়ার কথা রয়েছে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ফাতেমা ছনিয়া বলেন, তিনি কাকে বিয়ে করবেন, কাকে ছাড়বেন কি করবেন না করবেন এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়।