বিশ্বনাথের সাদিয়া যুক্তরাজ্যে আবিষ্কার করলেন করোনা নাশক স্প্রে

বিশ্বনাথের সাদিয়া যুক্তরাজ্যে আবিষ্কার করলেন করোনা নাশক স্প্রে

সাদিয়া খানম বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্ভুক্ত মোহাম্মদ পুর গ্রামের সন্তান।তিনি মা-বাবাসহ তিন ভাইবোন নিয়ে যুক্তরাজ্যের চেষ্টার এলাকায় বসবাস করেন।ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। বাবা কবির আহমদ ১৩ বৎসর যাবত অ্যালকোহল মুক্ত রেষ্টুরেন্ট ব্যবসা পরিচালনা করছেন।সাদিয়া ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথারীতি আদায়ের মধ্য দিয়ে জীবন যাপনে অভ্যস্থ।মা ফরিদা আহমদ একজন পুরোদস্তুর গৃহিণী।তার দাদা আজমত আলী ১৯৬৪ সালে যুক্তরাজ্যে গমণ করেন। সাদিয়ার দাদা এক সময় আলজেইমার রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েন। সে সময় থেকে সাদিয়া পণ করেন বড় হয়ে বিজ্ঞানী হবেন ও আলজেইমার রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কার করবেন।তাই ছোট বেলায়ই বিজ্ঞানের প্রতি মনোযোগী হয়ে উঠেন।কিন্তু তার বাবা তাকে ব্ল্যাকবার্ন মাদ্রাসায় ভর্তি করে নেন।বাবার ইচ্ছা ছিল মেয়েকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে।মাদ্রাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে জি সি এস ই পাস করেন। ম্যানচেষ্টার ইউনিভার্সিটিতে বায়ো-মেডিকেলে গ্রাজুয়েশন সমাপ্ত করে চেষ্টার ইউনিভার্সিটি থেকে জেনেটিক্সে মাস্টার সম্পন্ন করেন।অত:পর তিনি আলজাইমার ও নিউরোডিজেনারেশন নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।


   মাত্র এক বৎসর দুই মাসের গবেষণায় আবিষ্কার করলেন সাদিয়া করোনা ভাইরাস বিনাশী এ্যানন্টিসেপ্টিক স্প্রে।ব্রিটেনের হাসপাতালগুলো জানিয়েছে করোনা ধ্বংস করতে সাদিয়ার আবিষ্কৃত স্প্রে ১০০% ইফেক্টিভ। ইতিমধ্যে ১০ মিলিয়ন পাউন্ডের অর্ডার হয়েছে এ স্প্রে ক্রয় করার নিমিত্তে।বিশ্বের ১৩ টি দেশ আগ্রহী হয়েছে স্প্রে নিতে। সাদিয়ার আবিষ্কারে বিশ্বব্যাপি বাঙ্গালীদের মুখ উজ্জ্বল ও আলোকিত করতে সহায়ক এতে কোন প্রকার সন্দেহের অবকাশ নেই।মহামারি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জীবানুনাশক নুতন স্প্রে আবিষ্কার করেন ২৬ বছর বয়সী সাদিয়া ভলটিক নামের স্প্রে , যা ১৪দিনের জন্য যেকোন বস্তুর সারফেসে জীবাণু মুক্ত থাকবে।ভলটিক স্প্রে সব ধরনের করোনাভাইরাস, ইবোলা ভাইরাস, এভিয়েন ফ্লু, ইনফ্লুয়েঞ্জা এ, সার্স, এইচআইভি বি এবং অন্যান্য জীবাণু ধ্বংস করতে সক্ষম।কোভিড মহামারি মোকাবিলায় এই উদ্ভাবনকে বড় ধরনের আবিষ্কার হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে এবং ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা এনএইচএসসহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এটিকে অনুমোদন দিয়েছে।এটা কি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কাজ করতে সক্ষম?এমন প্রশ্নের জবাবে বিবিসি বাংলার কাছে বিজ্ঞানী সাদিয়া খানম দাবি করেন, তার আবিষ্কৃত ভলটিক সব ধরনের করোনাভাইরাস ধ্বংস করতে সক্ষম। তিনি বলেন, আমি চেয়েছি যা সবাই ব্যবহার করতে পারে এমন একটা সহজ লভ্য জিনিস তৈরি করতে । ভলটিক সব ধরনের ভ্যারিয়্যান্টের বিরুদ্ধে কাজ করে। কারণ আমি এই ভাইরাসের আসল স্ট্রেইন নিয়ে কাজ করেছি। যেহেতু আমি করোনা ভাইরাসের আসল জিনিসটিকে মেরে ফেলতে সক্ষম হয়েছি, তাই এটি অন্যান্য ধরনের করোনা ভাইরাসও ধ্বংস করতে পারবে।
   সাদিয়া আরও বলেন,  এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি একটি ঘরে প্রবেশ করলে,  সেই ঘরের ভেতরে জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। সারাক্ষণ ঘরের সবকিছু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা কঠিন। কিন্তু এই ভলটিক স্প্রে দিয়ে ঘরটিকে সারাক্ষণই জীবাণুমুক্ত রাখা সম্ভব। যেমন- আমি যদি কোনো একটি ঘর ভলটিক দিয়ে পরিষ্কার করি তাহলে ওই ঘরটি ১৪ দিনের জন্য সুরক্ষিত থাকবে।”সাদিয়া তার আবিষ্কৃত ভলটিক স্প্রে সব ধরনের করোনাভাইরাস, ইবোলা ভাইরাস, এভিয়েন ফ্লু, ইনফ্লুয়েঞ্জা এ, সার্স, এইচআইভি বি এবং অন্যান্য জীবাণু ধ্বংস করতে পারে বলে দৃঢ আশ্বাস প্রদান করেন।

    সাদিয়া জানান,  কোন কিছুর পৃষ্ঠ বা সারফেসের ওপর যদি কোনো ভাইরাস থেকে  থাকে, তবে এর সাহায্যে তাকে সঙ্গে সঙ্গেই মেরে ফেলা যায়। এটি চামড়া থেকে শুরু করে কাঠ, লোহা থেকে কাপড়- সব ধরনের সারফেসের ওপর কাজ করে বলে গবেষণায় তিনি দেখতে পেয়েছেন।
    সাদিয়ার বাবা কবির আহমদ বলেন, আমরা মহান আল্লাহর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।মহান আল্লাহ সবাইকে সব কিছু দান করেন না।আমার মেয়ের স্প্রে আবিষ্কারের মাধ্যমে বিশ্বের মানুষকে সাহায্য করতে পারার আনন্দ অত্যন্ত ভাল কাজের অন্তর্ভুক্ত।মহামারী থেকে মানুষ স্বস্তি পেলে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত।মানুষের সেবা প্রদান করা বড় ইবাদত তুল্য।
    

আরও পড়ুন

×