‘বুলবুলের’ প্রভাবে বেড়েছে যে সব এলাকায় 

প্রকাশিত: 09/11/2019

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘বুলবুলের’ প্রভাবে বেড়েছে যে সব এলাকায় 

‘বুলবুলের’ প্রভাবে বেড়েছে যে সব এলাকায় 

  

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সাগর উত্তাল। নদ-নদীতে বেড়ে চলেছে পানি । উত্তাল সাগরে টিকে থাকতে পারছে না জেলেরা। যার কারনে ফিরে আসছেন তারা। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টির পরিমাণ বেড়েছে।

একই সঙ্গে বেড়েছে ঝোড়ো হাওয়া। চারপাশ অন্ধকার হয়ে এসেছে। নদীতে বড় বড় ঢেউ উঠেছে। সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট এলাকার পরিস্থিতি এখন এমন। গতকাল শুক্রবার সারা দিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলে শনিবার ভোর থেকে বৃষ্টির গতির বেড়ে চলেছে । বইতে শুরু করেছে ঝোড়ো হাওয়া।

সাতক্ষীরা:


সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকা শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার লোকজনকে বেলা ১১টার মধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠতে বলা হয়েছে। বিচ্ছিন্ন দ্বীপ শ্যামনগরের গাবুরা এলাকার মানুষজন সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। চারদিক অন্ধকার হয়ে গেছে। দমকা বাতাস বাড়ছে।

মানুষজন আতঙ্কগ্রস্ত। বেলা ১১টার মধ্যে সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। এ জন্য মাইকিং করা হয়েছে। ১০৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আগের চেয়ে বৃষ্টি বেড়েছে। সুন্দরবনের মধ্যে থেকে সব জেলে বাওয়ালীদের লোকালয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। বনের ভেতর কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরাপদে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাগেরহাট:


বাগেরহাটে শুক্রবার থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। আজ সকালেও প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়েছে। সকালের দিকে আধা ঘন্টা বৃষ্টির থামে পরে আবার শুরু হয়। সঙ্গে মৃদু ঝোড়ো হাওয়া বইছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, এটা সিডরের মতো প্রচণ্ড ঝড়ের লক্ষণ।

শরণখোলাতে সরকারি হিসেবে সিডরের সময় মারা যায় ৯৩০ জন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ সময় বলেশ্বর নদে প্রচুর ইলিশ মাছ থাকায় বিপৎসংকেত উপেক্ষা করে জেলেরা নৌকা, ট্রলার নিয়ে বলেশ্বর নদে ইলিশ ধরতে গেছে।

চারটি উপকূলীয় উপজেলা মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, রামপাল ও মোংলার ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের আজ দুপুরের মধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য কাজ চলছে। সুন্দরবনের দুবলার চরের শুঁটকি পল্লির জেলেদের সরানোর জন্য র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে। মোংলা ও শরণখোলা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে দিয়ে বুলবুল আঘাত হানতে পারে।

খুলনা: 


ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ইতিমধ্যে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত ঘোষণা করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সারা রাতই খুলনার সব এলাকায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় সকাল থেকে হালকা বাতাস বয়েছে। নদী শান্ত রয়েছে। রাতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদীর পানি কিছুটা বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতেও আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে আগ্রহী হচ্ছে না সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ খুলনার দাকোপ,

কয়রা ও পাইকগাছা এলাকার মানুষ। তাঁদের জোর করে সেখানে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছে স্থানীয় প্রশাসন। শুক্রবার দুপুর থেকেই এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য মাইকিং হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষ ওই ঘোষণা খুব বেশি আমল দেয়নি। সকাল থেকে আবারও সবাইকে বুঝিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না। এখন মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে পুলিশের সহযোগিতা নেওয়া হবে। ওই এলাকায় ১১৬টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে।

পর্যাপ্ত শুকনো খাবার প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। ওই উপজেলার অন্তত পাঁচটি ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক ফুট বেড়ে গেলে বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছে উপজেলা প্রশাসন। পাইকগাছা উপজেলায় কোনো বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় নেই বলে জানা যায়  ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য বারবার বলা হচ্ছে কিন্তু তাঁরা তা শুনছেন না। সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।​​​​​​​

আরও পড়ুন

×