প্রকাশিত: 30/03/2020
দেশের বিশিষ্ট আলেমদের সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকের পর করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় তাদের নির্দেশনা প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা)।আজ সোমবার সংস্থাটির মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তা তুলে ধরেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ে রোববার দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমরা করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিরাজমান পরিস্থিতিতে জনগণের সুরক্ষা বিষয়ে পরামর্শ প্রদানের লক্ষ্যে জরুরি সভায় মিলিত হন।
এতে তারা নিজ নিজ মতামত উপস্থাপন করেন। এছাড়াও হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফি, পটিয়া মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা মুফতি আব্দুল হালীম বোখারী প্রমুখের কাছ থেকে ই-মেইলে প্রাপ্ত মতামত আলোচনা হয়।
এরপর সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, রোগ ও ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য সতর্কতা অবলম্বন ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সতর্কতা অবলম্বন তাওয়াক্কুল পরিপন্থী নয়। বরং নবীজীর (সা) সুন্নত।
মসজিদের ব্যাপারে বলা হয়, মসজিদে নিয়মিত আযান, ইকামত, জামাত ও জুমার নামাজ অব্যাহত থাকবে। তবে জুমআ ও জামাতে মুসল্লিগণের অংশগ্রহণ সীমিত থাকবে অর্থাৎ যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, যাদের সর্দি, জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট আছে, যারা আক্রান্ত দেশ ও অঞ্চল থেকে এসেছেন, যারা উক্তরূপ মানুষের সংস্পর্শে গিয়েছেন, যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, বয়োঃবৃদ্ধ, দুর্বল, মহিলা ও শিশু, যারা অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিতরা মসজিদে যাবেন না।
আর যারা মসজিদে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করেন তাদেরও মসজিদে না আসার অবকাশ আছে। যারা জুমআ ও জামাতে যাবেন তারা সকলেই যাবতীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা অবলম্বন করবেন।
ওযু করে নিজ নিজ ঘরে সুন্নাত ও নফল আদায় করবেন। শুধু জামাতের সময় মসজিদে যাবেন এবং ফরজ নামাজ শেষে দ্রুত ঘরে চলে আসবেন। সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোয়া, মাস্ক পড়া, জীবাণুনাশক দ্বারা মসজিদ ও ঘরের মেঝে পরিস্কার রাখাসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সকল নির্দেশনা মেনে চলবেন। হঠাৎ হাঁচি-কাশি এসে গেলে টিস্যু বা বাহু দিয়ে মুখ ঢেকে রাখবেন।
খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও মসজিদ কমিটির করণীয় হিসেবে বলা হয়, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদকে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা এবং কার্পেট-কাপড় সরিয়ে ফেলা, জামাত সংক্ষিপ্ত করা, জুমার বয়ান, খুতবা ও দোয়া সংক্ষিপ্ত করা, বর্তমান সংকটকালে দরসে হাদীস, তাফসির ও তা’লীম স্থগিত রাখা, ওযুখানায় অবশ্যই সাবান ও পর্যাপ্ত টিস্যু রাখা, বর্তমান পরিস্থিতিতে জামাতের কাতারে ফাঁক ফাঁক হয়ে দাঁড়ানো, ইশরাক, তিলাওয়াত, যিকির ও অন্যান্য আমল ঘরে করা, ঢাকাসহ দেশের কোন মসজিদে যদি কোন বিদেশী মেহমান অবস্থানরত থাকেন তাদের বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষন করে সত্ত্বর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফন ও জানাযার ব্যাপারে বলা হয়, হাদিসের বর্ণানুযায়ী মহামারিতে মৃত মুমিন ব্যক্তি শহীদের মর্যাদা লাভ করেন।
করোনায় মৃত ব্যক্তির কাফন, জানাযা ও দাফন যথাযথ মর্যাদার সাথে করা জরুরি। করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফনে সহযোগিতা করুন। তাদের প্রতি বিরূপ মনোভাব প্রকাশ বা কোনরূপ অসহযোগিতা করা শরীয়তবিরোধী ও অমানবিক।