ব্র্যাকের নতুন জরিপ : দেশে ত্রাণ পাননি ৬৯ ভাগ মানুষ

প্রকাশিত: 10/06/2020

নিজস্ব প্রতিবেদন :

ব্র্যাকের নতুন জরিপ : দেশে ত্রাণ পাননি ৬৯ ভাগ মানুষ

দেশে শতকরা ৬৯ ভাগ উত্তরদাতাই বলেছেন তারা ত্রাণ পাননি। নিম্ন  আয়ের মানুষের জীবনে কোভিড-১৯ এর প্রভাব সবথেকে মারাত্মক। নিম্ন  আয়ের কর্মজীবীদের শতকরা ৯৫ ভাগ বলেছেন, গত ফেব্রুয়ারিতে তারা যতো টাকা আয় করতেন, সেই তুলনায় গড়ে ৭৬ ভাগ কমে গেছে।অন্যদিকে সার্বিকভাবে স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে ৬২ ভাগই কাজ হারিয়েছেন।

এছাড়া করোনা চিকিৎসা নিয়ে উত্তরদাতাদের মধ্যে বিভ্রান্তি চলমান আছে। ১১ ভাগ বলেছেন উপসর্গ দেখা দেয়া মাত্রই দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা দরকার। এবং ৪২.৬ ভাগ উত্তরদাতাদের অর্ধেকের বেশি মনে করেন উপসর্গ দেখা দিলে হোম কোয়ারেন্টিন বা আইসোলেশন উত্তম বিকল্প।

এছাড়া ২৬ শতাংশ মনে করেন করোনার কোনো চিকিৎসা নেই। ৭৮ ভাগই অবশ্য মনে করেন তাদের করোনা হওয়ার কোনো চান্স নেই।

গতাকাল ৯ জুন ঢাকায় এক জুম সম্মেলনে প্রকাশিত ব্র্যাকের র্যা পিড পারসেপশন সার্ভে বা তাৎক্ষণিক ধারণা জরিপে ওই চিত্রই ফুটে উঠেছে।

ব্র্যাক স্টাফরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও পেশার ২৩১৭ ব্যক্তির ওপর জরিপ চালান। শতকরা ৭৯ ভাগের সঙ্গে ফোনে এবং ২১ ভাগের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা করে সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণে ডাটাশিট তৈরি করা হয়েছে।

এছাড়া ৫১ ভাগ বলেছেন, করোনায় তাদের পরিবারের আয় শূণ্যে নেমেছে। ব্র্যাক রিপোর্টে এই তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, প্রায় ২৩ ভাগ মানুষের মধ্যে যারা চাকরি করেন, তারা বেতন পান না। কিংবা যাদের হাতে শস্যদানা আছে, তারা বিক্রি করতে পারেন না।

কিন্তু যখন তাদের কাছে ত্রাণ বন্টন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে, তখন তাতে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি ছিল লক্ষণীয়ভাবে নেতিবাচক ।

কারণ ৩৮ ভাগ উত্তরদাতা মনে করেন, সরকারের সহায়তা এ পর্যন্ত যা মিলেছে, তা অপ্রতুল । এমনকি শতকরা ৪১ ভাগ বলেছেন ত্রাণ কাদের দেয়া হবে, তার টার্গটে যেভাবে স্থির করা হয়েছে, তাতে ভুল হতে পারে।

শতকরা মাত্র ১৪ ভাগ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা সরকারি ত্রাণ পেয়েছেন কিন্তু ৬৯ ভাগই বলেছেন, তারা কোন ত্রাণ পাননি।

ত্রাণ না পাওয়ার হার শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে বেশি। গ্রামের ৭২ ভাগ উত্তরদাতা এবং শহরের ৬২ ভাগ বলেছেন তারা ত্রান পাননি।

উত্তরদাতারা আরো বলেছেন যদি এই করোনা সংকট অব্যাহত থাকে দীর্ঘমেয়াদে, তাহলে এটা খুবই সম্ভাবনা যে, তাদের ১৯ ভাগ জীবনযাপনের খরচ সাত দিনের বেশি নির্বাহ করতে পারবেন না। এরমধ্যে ১৭ ভাগ গ্রামের এবং ২১ ভাগ শহর এলাকার।

২৬ ভাগ মানুষের কোনো পরিকল্পনা নেই যে, তারা কিভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করবেন।

অবশ্য এক-চতুর্থাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা যে আর্থিক সংকটের সম্মুখীন সেটা থেকে বাঁচতে হলে তাদেরকে সঞ্চয় তুলতে হবে অথবা সম্পদ বিক্রি করতে হবে ।

তবে সামগ্রিকভাবে শতকরা ১৯ ভাগ উত্তরদাতা আশা প্রকাশ করেছে যে, সরকার কিংবা অন্যান্য দাতব্য প্রতিষ্ঠান সংকট দীর্ঘতর হলে তারা সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়াবে।

ব্র্যাক রিপোর্টে আরও বলা হয়, ৬৬ ভাগ উত্তরদাতা আশা প্রকাশ করেছেন যে, প্রয়োজনের সময় সরকার তাদেরকে খাদ্য সহায়তা দেবে।

রিপোর্টে বলা হয় উত্তরদাতারা নগদ অর্থ বিতরণ, লকডাউন সম্প্রসারণ এবং প্রতি জেলায় টেস্ট এবং তার চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করতে বলেছেন।

আরও পড়ুন

×