প্রকাশিত: 13/08/2020
পৃথিবীর যে কোনো দেশের তুলনায় কর্মসূত্রে সৌদি আরব, ওমান, ও দুবাই ইত্যাদি সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি থাকেন।কোথায় নেই আমরা? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী থেকে শুরু করে কৃষক, নির্মাণ শ্রমিক কিংবা পরিচ্ছন্নতাকর্মী সব ভূমিকাতেই প্রবাসীরা কাজ করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সমুন্নত রেখে চলেছেন।
অন্যান্যদের চাইতে, বিষেশ করে যারা শ্রমিক দিনমজুর ও আন্যান্য কাজ করে, তারাই খুবই কষ্টের দিন কাটাচ্ছে, কারণ সারাবিশ্বে করোনা ভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করেছে। এই মহামারির কারণে তারা কর্মহীনতায় ভুক্তেছে। কোন কাজ নাই অথচ টিকেই পরিবারের ভারম পোষণ রক্ষা করতে হচ্ছে, এখন তাদের পেটে দু মুঠো খাবার জোটে না তাই " মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাছে তাদের এখন জোর দাবি হচ্ছে, তারা দেশে ফিরে এসে স্বাভাবিক জীবনে যাপন করতে চাই"
এখানে প্রবাসীদের প্রায় সিংহভাগই সাধারণ শ্রমিক। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পেশাজীবীও আছেন। নারীরাও আছেন গৃহকর্মীসহ আরও নানা পেশায়। সাধারণ প্রবাসী শ্রমিকদের বিরাট অংশ পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। তাই এখানে বাংলাদেশের পরিচিতি মূলত পরিচ্ছন্নতাকর্মী রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে। আফসোসের বিষয় হলো দক্ষ কর্মী রপ্তানির তেমন কোনো অবকাঠামো দেশে গড়ে উঠেনি।
তাই আমার দেশের সন্তানেরা মরুর দেশে কঠোর কায়িক শ্রম অথচ কম বেতনে কাজ করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখে চলেছে। অবশ্য তাদের দুর্ভোগের শুরু হয় দেশের মাটিতে। নানা সংঘবদ্ধ চক্রের হাতে পড়ে, ধার দেনা করে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুন বেশি দাম দিয়ে ভিসা কিনে তারা এখানে এসে দেখে, প্রতিশ্রুতির সাথে বাস্তবতার অনেক ফারাক।
অদক্ষতার কারণে কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ, চাকরি ক্ষেত্রে বেতন বৈষম্য, দেশে ঋণের বোঝা, পরিবারের ভরণ পোষণের দায়সহ নানাবিধ কারণে তারা শুরুতেই হতোদ্যম হয়ে পড়ে। তাই বেশিরভাগ শ্রমিক ভাইদের মলিন মুখে ঘুরে বেড়াতে দেখা এখানকার খুব স্বাভাবিক চিত্র। বাংলাদেশিদের এখানে পরিশ্রমী হিসেবে পরিচিতি আছে।
আমাদের রেমিট্যান্স যুদ্ধাদের ফলে, অর্থনৈতিক ভাবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি। তা দিয়ে আমাদের অর্থনৈতিক চাকা সচল থাকে। বর্তমানে তারা নিজেরাই কামায় কর্তে অক্ষম হয়ে পড়ে। আবার, তাদের পরিবার ও তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। মনে করি, একটি পরিবারে যদি পাঁচ সদস্য থাকে তাদের একমাত্র আয়ের উৎস হলো ঐ প্রবাসী বা রেমিট্যান্স যুদ্ধা। কিন্তু আফসোসের বিষয় এখন সে নিজেও খেতে পারছে না, অন্যকে কীভাবে খাওয়াবেন। নিজের পেটে ভাত নেই অন্যের দিকে কীভাবে তাকাবে?
প্রবাসীরা চাই দেশে ফিরে আসতে? কিন্তু তারা কীভাবে আসবে? বিমান তো চালু নেই, তাদের কষ্ট বুঝার মত কেউ নাই, তাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের জোর দাবি হচ্ছে, অতি শীঘ্রই এয়ারলাইন্স চালু করে তাদেরকে দেশে আসার সুযোগ করে দেওয়া হোক। তাই তাদের একমাত্র জোর দাবি হচ্ছে তারা স্বদেশে ফিরে এসে বাকী জীবন টুকু নিজ পরিবারের সঙ্গে কাটাতে চাই।