ধর্ষণের দর্শন ১

প্রকাশিত: 12/10/2020

শামীম আহমেদ

ধর্ষণের দর্শন ১

ধর্ষণের ঘটনা লিখতে গেলে অন্য সব বিষয়ের গবেষনা বাদ দিয়ে কেবল যৌনতা ও ধর্ষণ নিয়েই গবেষনা করতে ইচ্ছে হয়। লিখে ও পড়ে দুই অবস্থাতেই এর রস পাওয়া যায়। সেই রসের স্বাদ কেবল আমার হৃদয় পর্যন্ত ছুয়ে দেয়। এ বিষয়টি এতোই ইন্টারেষ্টিং যে মাঝে মাঝে আমাকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় করে তোলে। আজ আমার সিজনাল বা খন্ডকালিন প্রেম নিয়ে ছোট্ট একটি ঘটনার অবতারনা করবো এখানে, যেমন প্রেম সিনেমাতেও হয়। সেই সিনেমা দেখে তিন ঘন্টা মানুষ ঘোরের মধ্যে থাকে। কল্পনা নয় সত্যি, আমার চেনা একটি মেয়ে আছে। তার নাম তাহিরা তানজিন তৃষা। বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যের বাণিজ্যিক কার্যালয়ে জব করে মেয়েটি। সেই অফিসে আসা যাওয়ার কারনে তার সাথে আমার একদিন পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে পরষ্পরের আলাপ হয়েছে গত বছরের শীতকালিন সময়ে। আলাপ এখনও আছে। তবে শীতকালিন আলাপ গ্রীষ্মকালে বদলে গেছে। আলাপ নিরিবিলি এবং নির্বিঘ্ন করতে পরিচয়ের গোড়ারদিকে এক পর্যায়ে আমাদের সিদ্ধান্ত হয় আলাদা কোথাও যেতে হবে। তখন শীতের সিজন। সে আমাকে নিয়ে ঢাকার বাইরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তাব করছে। আমিও রাজি হয়েছি। মেয়েদের নিকট থেকে এমন প্রস্তাব বার বার আসে না। তাছাড়া আমি সাধারনত "না" শব্দটা এরিয়ে চলি। তাই শুরুতে "হ্যা" বলে দিয়েছি। পরে যা হয় হোক।

পরিচয়ের কিছুদিনের মধ্যেই ধানমন্ডি লেকের একটি চাইনিজ ফুড কর্নারে এবং সিমান্ত শপিং মলের একটি চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে তার সাথে আমার দুদফায় সাক্ষাৎ। সঙ্গে তার দুজন বোন নিয়ে এসেই আমার সাথে সাক্ষাত করছে তৃষা। কারন তার বোনেরাও আমার ব্যাপারে তৃষার নিকট জেনেছে তাই আমাকে তারা দেখতে চাইছিল। ঢাকার বাইরে এক সপ্তাহ বেড়াতে গিয়ে তৃষার সাথে আমার স্বেচ্ছায় সেক্সের কোন ঘটনা ঘটে কি না এমন সন্ধেহের বিষয়গুলো নিয়ে তৃষা আমার সাথে খোলা মেলা আলাপ করছে। তাই তৃষা তার যৌন নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কিছু প্রস্তাবনা ও কৌশল হাজির করছে যে সব বিষয়গুলো আমাকে বিস্মিত করছে। আমাদের সফর সংঙ্গী হবে তৃষার তিনটি বোন। একটি আপন বোন অন্যদুটি খালাত বোন। এখন তৃষাসহ মেয়ের সংখ্যা দাড়ালো চার জন, অন্যদিকে আমি একা! তৃষার বোনদের আমিও চিনি। একজন বদরুন্নেসা কলেজে অনার্স পড়ে, আরেকজন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ে, অন্য একজন টাঙ্গাইলের একটি কলেজে অনার্স পড়ে। সকলের বয়স ও তাদের দেহের চাহিদা সম্পর্কে পাঠকের ধারনা দেয়ার জন্যই মেয়েগুলির পরিচয় বর্ননা করলাম। তবে, আমার মনের অবস্থা কেবল আমিই বুঝি। কি করে সম্ভব এই চারটি মেয়ের সাথে ঢাকার বাইরে কোন একটি হোটেলে একত্রে বসবাস!

সফর সূচী ও হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে তৃষার রূপরেখা অনুযায়ি কক্সবাজারে সড়ক পথে নয় বিমানে যাবো। পাশাপাশি আসনে সে আমাকে নিয়ে বসবে। দুরের কোন আসনে বসবে তার বোনগুলো। কক্সবাজার সমুদ্রতীর বা তার নিকটবর্তী কোথাও বেড়াতে গেলে আমরা সকলেই একত্রে থাকবো। রাত জাপনের জন্য হোটেলে আমাদের জন্য বরাদ্ধ থাকবে দুটি শয্যা কক্ষ। একটিতে ওরা তিন বোন অন্য একটিতে আমি একা থাকবো। একত্রে চলতে গেলে যদি তার শরিরের কোথাও হাত লেগে যায়, তা আমি ঠেকাবো কি করে? তাখন তৃষা বলছে হাত লাগান তবে সীমালঙ্গন করবেন না। তখনই বুঝছি এই সীমালঙ্নটাই ধর্ষণ। তার ইচ্ছের সাথে ইচ্ছে মিশিয়ে যদি কিছু করি এটা স্বেচ্ছা যৌনতা। সফর কালে সকলের জন্যই নতুন নতুন পোষাক বা উপহার সামগ্রী দিতে হবে। তৃষার জন্য কিনতে হবে অনেক বেশি কিছু। তাকে বেশি কিছু কিনে দিতে হবে কেন? কারন, তৃষার সাথে পরিচয়ের পরে আমাদের নিজেদের মধ্যে বিয়ে হতে পারে এমন প্রস্তাবনা নিয়ে তার পরিবার পর্যায়ে আলাপ হয়েছিল। এতে তৃষার পরিবারের সম্মতিও মিলেছে। সেই সুযোগেই তৃষা আমায় নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিয়ের নাম নেয়ার সাথে সাথেই এতো অর্থ ব্যায় করতে হয় আমার নিকট এটাই যেন তার অভিজ্ঞতা। এটা ঠিক দর্শনের ব্যায়। হঠাৎ করে এতোগুলো মেয়ে‌ আমার দর্শন করার কি দরকার? এখন তো দেখছি সেই "হ্যা" শব্দটায় বিপদ আর বিপদ। তাই শুরু করলাম "না" বলতে। এর পর থেকেই ধীরে ধীরে না বলতে শিখে গেলাম।

কক্সবাজার যাওয়ার পূর্বে সনি ইলেকট্রনিক্সের ধানমন্ডির শোরুমে তৃষা আমাকে নিয়ে গিয়ে একটি মোবাইল সেট কিনে দিতে চাপ ও কৌশল প্রয়োগ করছিলো। এবং তার আরো কিছু কথায় আমি তৃষার লোভ সম্পর্কে সম্যক ও বাস্তব ধারনা নিয়ে তার থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে দেই। এছাড়াও কিছু টুকিটাকি আর্থিক ব্যাপার এখানে উল্লেখ করলাম না। দু-লাখ টাকা ব্যায় করে তার সাথে আমি হোটেলে থাকবো আলাদা রুমে। আরো কয়েক লাখ টাকা ব্যায় করে আমি কেনাকাটা করে দেব। চোখের দর্শনের দাম এতো! না ধরে না ছুয়ে কেবল চোখ দিয়ে আবলোকন করলে এতো টাকা ব্যায় করতে হয় তা তৃষার কাছথেকে বুঝলাম। রবীন্দ্রনাথে বইতে পড়ছি- "ইচ্ছে দমন করতে না পারলে কেউ কোন কালে সুখি হয় না"। আমি যদি তৃষার ইচ্ছেতে ইচ্ছে মেশাতাম এবং কক্সবাজার বা অন্য কোন অঞ্চলে বেড়াতে গিয়ে তার সাথে হোটেলে থাকতাম তবে কোন না কোন পর্যায়ে এসে আজ দেশে নতুন একটি ধর্ষণ গল্প তৈরি হয়ে যেতো। কারন, রবীন্দ্রনাথে আরো একটি কথা আমার পঠককে মনে করিয়ে দেই- “ নরমাংসের স্বাদ পাইলে মানুষের সম্বন্ধে বাঘের যে দশা হয়, স্ত্রীর সম্বন্ধে তাহার ভাবটা সেইরূপ হইয়া উঠে ”। অর্থাৎ মেয়ে মানুষের স্বাদের সূচনা তৃষা যদি আমার হৃদয়ে নিখুঁতভাবে ঢুকিয়ে দিতে পারতো, তাহলে আমি আজ নতুন কোন তৃষার স্বাদ নিতে হন্যে হয়ে ছুটে বেড়াতাম এই শহরে। এবং একের পর এক সেচ্ছা যৌনতা বা ধর্ষণে জন্যে চেষ্টা অব্যাহত রাখতাম।

ঢাকায় এমন অসংখ্য তৃষা আছে যাদের লোভের বর্ননা তাদের‌ পরিচিত জনরাই বলতে পারবে নিজ নিজ অভিজ্ঞতা দিয়ে। যাহার যা প্রবৃত্তি এবং ক্ষমতা সেটার চর্চা না করলে সে সুখী হয় না। শিংঙে শান দেবার জন্য হরিণ শক্ত গাছের গুঁড়ি খোঁজে, কলা গাছে তাহার শিং ঘষলে সুখ হয় না। মেয়েরা যখন কোন ছেলেকে বশ করার আগেই সেই ছেলে তার প্রতি বশ হয়ে থাকে কিছু মেয়েরা তখন ওই ছেলেটিকে ব্যবহার করে। বশ হওয়া ছেলেটিকে কিছু মেয়েরা মুরগি বানায় এবং বার বার জবাই করে। শ্রী রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের বইতে পড়েছি- "স্ত্রীলোক পুরুষকে ভুলাইয়া নিজের শক্তিতে ভালোবাসা আদায় করিয়া লইতে চায়, স্বামী যদি ভালোমানুষ হইয়া সে অবসরটুকু না দেয় তবে স্বামীর অদৃষ্ট মন্দ এবং স্ত্রীরও ততোধিক"। সত্যিকারের প্রেমের বিরোধীতা বা সত্যিকারের প্রেমকে আমি অশ্রদ্ধা করছি না। আমার পরিচিত বহু মেয়েদের দেখিছি প্রেমের অভিনয় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। সেই অভিনয় গুলো ভিডিও করলে বাংলা সিনেমার চেয়েও বেশি কৌতুহলি হইতো।

রবীন্দ্র নাথের মতোই আমি আমার পরিচিত একজন বাংলাদেশের হালের মডেলের নাম "হৈমন্তী" দিয়ে অন্য একটি ঘটনা বলতে চাই। ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখ হৈমন্তি মানবাধিকার বিষয়ক একটি সেমিনারে আমাকে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রন দিয়ে নিয়েছিল। সেই সেমিনারেই তার সাথে আমার প্রথম সাক্ষাৎ ও পরিচয় ঘটে। প্রথম সাক্ষাৎ থেকে ২৪ ঘন্টা পার হতে না হতেই হৈমন্তির নিকট থেকে বন্ধুত্বে প্রস্তাব আসে। সেদিন বিকেলে তার সেমিনারে বক্তব্য দিয়ে আমি বাসায় পৌছানোর ঘন্টা খানেক পরেই হৈমন্তী আমাকে ফোন দিয়ে খোজ নিয়েছে। তার সেমিনার সুন্দর বক্তব্য দিয়েছি তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ধন্যবাদ দিতেই সেই ফোনের উদ্যেশ্য ছিলো তার। ওই রাতে আবারও দু দফায় কথা হয়েছে। কি কথা হয়েছে? তা বুঝতে পাঠককে একটুও বেগ পেতে হবে না। টিভিতে প্রচারিত হৈমন্তীর কয়েকটি নাটক আমাকে ফেসবুকের ম্যসেঞ্জারে পাঠিয়েছে। সেই নাটকে তার নায়িকার পার্ট রয়েছে। তখন মনে পড়ছে নিজের শৈশবের কথা। প্রাইমারিতে পড়া কালে কতো শতো বার নিজেদের বাগানের শুপারি চুরি করে তা বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে সিনেমার টিকিট কিনে সিনেমা দেখছি। নায়িকাদের ছবি (ভিউকার্ড) দুই টাকা এবং বড় সাইজের ছবি পাঁচ টাকা দিয়ে কিনতাম এবং তা বেড রুমে টানিয়ে রাখতাম। এখন নায়িকা বা মডেল সরাসরি আমার বেড রুমে আসতে চায়। কুড়ি বছরে আমার এই পরিবর্তনের কথা ভেবে আমি কুড়ি মিনিট পাগল ছিলাম। শৈশবেই জানতাম মরুভূমির বালি ফুটফুটে সাদা হলেও তাহাতে বীজ বুনিয়া কোন ফল পাওয়া যায় না। ভালো ফসল পাওয়া গেলে কালো জমিতেও বীজ বোনা যায়। তৃষার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমি হৈমন্তির প্রেমে সারা দিয়েছিলাম অফিসিয়াল্লি। মন থেকে সারা দিতে গেলে আসল দুখঃটা আমাকেই ভোগ করতে হবে। রবি ঠাকুরের বইতে পড়ছি- "দানের মন্ত্রে স্ত্রীকে যেটুকো পাওয়া যায় তাহাতে সংসার চলে, কিন্তু পনেরো‌ আনা বাকি থেকে যায়। আমার সন্দেহ হয় অধিকাংশ লোকে স্ত্রীকে বিবাহমাত্র করে, পায় না, এবং জানেও না যে পায়নাই। তাদের স্ত্রীদের কাছেও আমৃত্যুকাল এ খবর ধরা পড়ে না"।

হৈমন্তি আমাকে বুঝিয়েছে, আসলে পুরুষের প্রতিপত্তি জিনিসটা মেয়েদের কাছে দামী। সে আমাকে বলছে, যে পুরুষের ভালোবাসার ঐশ্বর্য আছে তার বিবেচনা শক্তি নাই। আমার বিবেচনা শক্তি দিয়েই যেন আমি তাকে ভালোবাসি। এবং আমার দৃষ্টি যেন হৈমন্তির থেকে না ফেরাই। সে ব্যাপারে তাগিদ দিয়ে বলছে, ভালোবাসার দৃষ্টিতে মানুষ সাধারনকে আসাধারন রূপে দেখে। তবে আমি তোমার দৃষ্টিতে সাধারন হয়েই থাকতে চাই। হৈমন্তী ভাবছে একসময় আমাদের এই চোরাই ধন নিজের ধন রূপে বিবেচিত হবে। যখন আমি বলছি তুমি তো নাটক সিনেমার নায়িকা, অনেক রূপসী। আমার সাথে তোমার যতো উন্নত সম্পর্ক হোক সেই সম্পর্ক খুব বেশি টেকসই হবে বলে আমি মনে করিনা। এর উত্তর দিয়ে হৈমন্তি বলছে, আমি তো নিজেকে এভাবে সাজিয়ে দুনিয়াতে আসিনি। আমার মনে হয় বিধাতা আমার রূপ নিয়ে বাড়াবাড়ি করেনি, আমার রূপের ধর্মের শ্রেষ্ঠতা এখানেই। সত্যিকারে ভালোবাসা ছাড়া এই রূপের দাম নেই। তুমি যদি আমাকে ভালোবাসা দাও তাহলে এই‌ রূপ পুর্নতা পাবে। তার কথা আমাকে ভাবিয়েছে বিধাতার সৃষ্টি জগৎ নিয়ে। সেদিন থেকে আমি মেয়েদের রূপের মাধুর্য নিয়ে মিছামিছি তর্ক করতে যাই না। আসলে নারীকে বেশি রূপ দিয়ে তাদের বড় করে তোলাই প্রকৃতির একটি ফন্দি। তবুও মেয়েরা চায় পুরুষের ঐশ্বর্য আর পুরুষেরা চায় মেয়েদের মাধুর্য। আসলে যে পুরুষ কর্তব্যবোধকে অত্যান্ত সামলে চলে মেয়েরা তাদের পায়ের ধুলো নেয়। আর যেসব দুর্দম দুরন্তের কোন বালাই নেই, ন্যায় অন্যায়ের, মেয়েরা তাদের বাহুবন্ধনে বাঁধে। মেয়েদেরকে বিশেষ মূল্য দিয়ে যখন দামী করে তোলা হয় তখন খুশিতে সেই দাম মেয়েরা নিজেরাই সস্তা করে তোলে। তারা ফাঁকি দেয় নিজের পাওনাকেই। সেরা জিনিসের পুরো দাম দিতে পারে কজন ধনী। ভালোবাসা ধনে আমি পুর্ন। কিন্তু কোন মেয়ে সেই ধনের দিকে ফিরে তাকায়নি। আমি যখনই এই ধন নিয়ে বারাবারি করবো তখন কখনও কখনও যৌনতাকে উস্কে দেয়ার অভিযোগ দিতে পারে। আমার বিরুদ্ধেও শাহাবাগে আন্দোলন হতে পারে। তাই মুখ বন্ধ করেই নিরব রইলাম। আমার ভালোবাসা না পারলাম দাড়িপাল্লায় চড়াতে না পারলাম কষ্টি পাথরে ঘষে দেখাতে। যে কারনে এই ভালোবাসার মূল্য নির্ধারন করা গেল না। এবং হৈমন্তির সাথে ভালোবাসা অবসান ঘটলো। আজকাল আধুনিক মেয়েদের কাছে এসব ভালোবাসার কোন মূল্য নেই।

যে মেয়ের রূপের বহর একটু বেশি তার অহংকারে ব্যাপকতাও একটু বেশি। আমি যতো রূপসী মেয়েদের সাথে পরিচিত হয়েছি তার অভিজ্ঞার ভিত্তিতেই এই মন্তব্য করলাম। সুন্দরী ও অহংকারি মেয়েরা অবশেষে কোন না কোন গাধা পুরুষকেই বিয়ে করে। তখন নিজের অহংকার মাটিতে মিশে যায়। এ ব্যাপারে কোরানে সূরা লোকমানে সুনিদৃষ্ট ব্যাখ্যা আছে:-
وَلَا تُصَعِّرْ خَدَّكَ لِلنَّاسِ وَلَا تَمْشِ فِي الْأَرْضِ مَرَحًا إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُورٍ‎
অহংকারবশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না।
"And swell not thy cheek (for pride) at men, nor walk in insolence through the earth; for Allah loveth not any arrogant boaster.
وَاقْصِدْ فِي مَشْيِكَ وَاغْضُضْ مِن صَوْتِكَ إِنَّ أَنكَرَ الْأَصْوَاتِ لَصَوْتُ الْحَمِيرِ‎
পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন কর এবং কন্ঠস্বর নীচু কর। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর।
"And be moderate in thy pace, and lower thy voice; for the harshest of sounds without doubt is the braying of the ass."। আধুনিক ফ্যাশনাবল মেয়েরা এই কথা মর্ম বুঝতে চাইবে না। শাহাবাহে গিয়ে ওরনা কোমরে বেধেঁ উঁচু কন্ঠে আওয়াজ তুলে তাদের অধিকার আদায় করতে চায়। শাহাবাগ থেকে বাসায় ফিরে নিজের স্বামির সাথে তর্কে লিপ্ত হয়ে মারামারিও করে। যাদের স্বামী নাই তারা নারী বাদি! নারী বাদিটা কি? আমি আজ পর্যন্ত বুঝলাম না।

দস্যুরানী ফুলন দেবীর কথা আমার পাঠককে আজ মনে করিয়ে দেই, কয়েকবার গণধর্ষণের শিকার হয়েও ফুলন কোনোমতে প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফিরে তার বদলা নিতে গিয়ে নিজ হাতে ভারতীয় ২২ ঠাকুরকে খুন করেন এই দেবী। ১১ বছর জেল খেটে ফেরত আসা সেই নারীই দু’বার এমপি নির্বাচিত হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সবাইকে। তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, ফুলন দেবী নিজমুখে কখনো এই গণধর্ষণের কথা সরাসরি স্বীকার করেননি। তার আত্মজীবনীর লেখিকা মালা সেনকে বলেছেন, “ওরা আমার সাথে অনেক অন্যায়-অত্যাচার করেছে”। এই একটি লাইনকেই অবশ্য ফুলন দেবীর সার্বিক অবস্থার প্রতীকীরূপ বলে বিবেচনা করা যায়। ঢাকার শাহাবাগে জড়ো হওয়া নারীরা বা মেয়েরা শ্লোগান দিয়ে বলছে তাদের ওপর অনেকে অন্যায় অত্যাচার করছে। তাদের মধ্যে কেউ গণধর্ষণ হয়েছে কিনা তা সরাসরি বলছে না। শাহাবাগে জড়ো হওয়া মেয়েদে বক্তব্যে অনুযায়ি বুঝা যাচ্ছে, নোয়াখালির নারী, সিলেটের স্ত্রী, অমুক জায়গার বোন, তমুক জায়গার নারী কেন ধর্ষণ হয়েছে তার বিচারের দাবীতে তারা একত্রিত হয়েছে। শাহাবাগে এসে একটি মেয়ে অভিযোগ করছেন (ভিডিওতে দেখলাম) লিফটে মধ্যেই তার শরিরে কোন পুরুষ হাত দিয়েছে। জানিনা কোন পুরুষটি এই কাজ করছে। নারীকে তুই চিনলি নারে ভাই? কেন হাত দিলি?

স্বেচ্ছা যৌনতা ও ধর্ষণ মিলিয়ে ফেলা উচিত নয়। স্বেচ্ছা যৌনতা নারী পুরুষের একটি প্রকৃতিক চাহিদার মতোই দেহ ও মনের খোরাক। এতে আছে বৈজ্ঞানিক শুপারিশ, আছে স্বাস্থ্য সেবা। স্বেচ্ছা যৌনতা করে এবং দেহ প্রদর্শন করে অনেক মেয়েরা বহু অর্থ সম্পদ করছে এমন কিছু মেয়েদের আমি চিনি। সমালচিত চিকিৎসক রানী সাবরিনার কথা এখানে উল্লেখ করতে চাইনা। যেহেতু তাকে আমি চিনি না। সেচ্ছা যৌনতার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে অনেক মেয়েরা ঢাকায় বসবাস করে এবং লেখা পড়াও করে। সেই মেয়েদেরও হয়তো একদিন সংসার করবে, তারা মা হবে, সমাজ ও রাষ্ট্রের দ্বায়িত্ব নেবে। বড় বড় পদে অধিষ্ঠিত হবে। জানিনা সেইদিনের সমাজের বাস্তবতা কেমন হবে। তবে ধর্ষণের ঘটনা যদি মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করে অন্য একটি পরিবারকে অহেতুক আঘাত করা হয় তার ফল হবে ভয়ংঙ্কর। নারী নির্যাতনের ঘটনায় কোর্টে যে কেচগুলো হয় তার ৯০ শাতাংশই মিথ্যা। প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য নারী বা মেয়েদের ব্যাবহার করা হয়।

স্বেচ্ছা যৌনতা নেশা ও পেশা দুই ভাগে বিভক্ত। এমন যৌনতায় বহু নারী বা মেয়েদের নিয়মিত রুজি রোজগার জড়িত। এতে অদৃশ্য ও অবৈধ অর্থের ছড়াছড়ি হয়। এমনকি এই কাজ নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় যা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। আমার মনে হয় এখন মেয়ে ছেলেরা স্বেচ্ছা যৌনতা করার সময় ধর্ষণের আন্দোলন নিয়ে উপহাস করে। মনে রাখতে হবে, হোক বৈধ কিংবা অবৈধ, অনেক সময় এই যৌনতায় বন্ধুত্বের বন্ধন আরো অটুট থাকে। মনে রাখবেন, লোহা আগুনে পুড়ে পুড়েই খাটি হয়। তবে, ধর্ষণ বা অস্বাভাবিক যৌনতার বিচার দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ি হোক। যেখানে ধর্ষণ সেখানেই প্রতিবাদ হোক তা আমিও চাই। তবে শাহাবাগ বা ঢাকার কোন সড়ক বন্ধ করে আন্দোলনের ডাক দিয়ে সরকার পতন চাইবেন না আশা করি। সরকার তো এ ব্যাপারে শূন্য সহলশিলতা দেখিয়েছে। কয়েজন নারীর হুংকারে সরকারের পতন হবে এমন আশা করে মানুষকে আর হাসায়েন না। বরং নারীরা যেন আরো মানবিক হয় আমি তার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এতে সমাজের কল্যাণ ও রাষ্ট্রের মঙ্গল বয়ে আনতে সাহায্য করবে। মনে রাখবেন শাহাবাগের চার দিকেই দেশের বৃহৎ বৃহৎ হাসপাতাল গুলোর অবস্থান। এই মুহুর্তে ঘরে ঘরে অসুস্থ্য রোগী। স্রষ্টার ও প্রকৃতির বিচার তো আছেই। নারী পুরুষ সবাইকেই "মানুষ" হতে হবে। আজ আমাকে এক নারী বলছেন "ধর্ষণের ক্ষেত্রে নারীরা নিজেদের দায় এরাতে পারে না"। যারা ধর্ষণের বিচার চান তাদেরকে বলছি, দয়াকরে বেশি বারাবারি করবেন না। সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের দাবির আগেই তিনি নোয়াখালীতে বিবস্ত্র করে নারীকে নির্যাতনের ঘটনা যেনে, ধর্ষণের বিচার মৃত্যুদন্ডের শুপারিশ করছেন। ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দিয়েছেন শেখ হাসিনা সরকার। শেখ হাসিনাই ন্যায় বিচারক। শেখ হাসিনার চেয়েও বড় দেশ প্রেমিক সাজতে আসবেন না।

শামীম আহমেদ
লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক

আরও পড়ুন

×