প্রকাশিত: 03/07/2020
যদি এমন হয়, আপনার সামনে একটা ফাইল রাখা হয়, যেখানে এ যাবতকালে আপনি কি কি ব্রাউজ করেছেন, কিসে লাইক দিয়েছেন, কিসে কমেন্ট করেছেন, কোথায় আড্ডা দিয়েছেন, কোন রেস্ট্রুরেন্টে কি খেয়েছেন, আপনার আশে পাশে তখন কে কে ছিলো, কাকে বকা দিয়েছেন, কাকে কি ম্যাসেজ দিয়েছেন, কাকে ফোনে কি বলছেন, কি আপনার পছন্দ, কি অপছন্দ কার সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন ইত্যাদি সব থাকে? কিংবা আপনি একদিন ল্যাপটপ হাতে নিয়ে দেখলেন এ জীবনের ডিলিট করা সব হিস্ট্রি আবার চলে আসছে?
ব্যাপারটা অনেকটা এমনি।
আপনি কাউকে ম্যাসেজ দিয়ে ডিলিট করে ফেলছেন, ভাবলেন যাক শেষ! ব্যাপারটা এখানেই শেষ না, ওয়েবসাইট গুলো সব জমা রাখছে। আপনি কথা বলছেন, সব কেউ শুনছে, জমা রাখছে। মাঝেমধ্যে এমন হয়, আপনি গুগলে কিছু সার্চ করলেন, সেটা পরেরদিন আপনার ফেইসবুক, ইন্সট্রাগ্রাম সবখানে চলে আসছে. এখন AI এর ব্যবহার বাড়ায় ব্যাপারটা অহরহ হচ্ছে। আজ আর গুগলে সার্চ করা লাগেনা, বন্ধুদের সাথে আড্ডায় কোন পণ্য বা কোর্স নিয়ে আলোচনা করছেন, দেখা যাবে সেটা আপনার ফেইসবুক ওয়ালে চলে আসছে।
ব্যাপারটা প্রথমে আপনাদের কাছে মজার লাগতে পারে, কত সহজেই আপনার পছন্দের জিনিস পেয়ে গেলেন! কিন্তু এটার একটা দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। আজ ইন্টারনেটের যুগে প্রাইভেসি বলতে কিছু নেই। সবটাই রেকর্ড করা হচ্ছে, এনালাইসিস করা হচ্ছে। কিন্তু এত তথ্য জমা রাখা, এনালাইসিস করা যথেষ্ট ব্যয় সাপেক্ষ, তাও তারা নিজের টাকা খরচ করে কেন করে?
এসব তথ্য খুব সহজেই বিক্রি করা যায়। যেমন ধরুন, কেউ মেয়েদের কাপড়ের ব্যবসা শুরু করবে। যদি সে আগেই জানতে পারে কোন এলাকার মেয়েরা কি রঙের কি ড্রেস বেশি কিনে বা পছন্দ করে তাহলে তার ব্যবসায় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। এখন কেউ যদি কাপড়ের ব্যবসায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চায়, মার্কেট সার্ভের মত ঝামেলায় না গিয়ে সহজেই সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে এই তথ্য কিনে ফেলবে।
কিংবা চাকরির নিয়োগেরও এটা ব্যবহার করা হতে পারে। আপনার বিগত বছর গুলোয় কার সাথে মিশছেন, কি কথা বলছেন, কার সাথে কি চ্যাট করছেন, কোথায় কি খেয়েছেন সব তারা পেয়ে যাচ্ছে! এমনকি রাজনৈতিকভাবেও ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন গত নির্বাচনে আমেরিকা অভিযোগ করে রাশিয়া তাদের নির্বাচনে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করেছে।