লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে নদীতে বিলিন হওয়া ক্লিনিক পুনঃস্থাপনের কোন উদ্যোগ নেই

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে নদীতে বিলিন হওয়া ক্লিনিক পুনঃস্থাপনের কোন উদ্যোগ নেই

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে উপজেলার প্রথম কমিউনিটি ক্লিনিকটি মেঘনা নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ার প্রায় দুই বছর হলেও পুনঃস্থাপিত হয়নি। বর্তমানে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে একটি ভাড়া দোকানঘরে। এতে বিড়ম্বনায় বেড়েছে রোগীদের; ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। স্থানীয় দুইজন সমাজসেবক ক্লিনিকের জন্য জমি দান করলেও নির্মাণের উদ্যোগ নেই। চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে দ্রুত ক্লিনিকটি স্থায়ীভাবে স্থাপনের দাবি জানান এলাকাবাসী ও জমি দাতারা। এতে মেঘনা পাড়ের অসহায় দরিদ্র রোগীদের দুর্ভোগ লাঘবসহ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত হবে।১৯৯৭ সালে উপজেলার চর ফলকন গ্রামের তালুকদার বাড়ির সামনে উপজেলার প্রথম কমিউনিটি ক্লিনিকটি নির্মাণ করা হয়। চর ফলকন লুধূয়া এলাকার বাসিন্দা মরহুম আবুল হোসেন তালুকদারের ছেলেরা সরকারিভাবে ক্লিনিকটি স্থাপনের জন্য জমি দান করেন। তাদের জমিতে নির্মাণ হওয়ায় ক্লিনিকটির নাম দেয়া হয়েছে ‘আবুয়াল হোসেন কমিউনিটি ক্লিনিক’। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একতলা বিশিষ্ট ওই ক্লিনিকের পাকা ভবনটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়।ক্লিনিকটি নদীতে বিলীন হওয়ার পর পাটারিরহাট ইউনিয়নের বোয়ালিয়া এলাকায় একটি মক্তবে এক বছর ছয় মাস কার্যক্রম চালানো হয়। ওই মক্তবে মাদ্রাসার শ্রেণি কার্যক্রম চালু হওয়ায় ক্লিনিকটি সরিয়ে নেওয়া হয়। গত চার মাস থেকে চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে একটি ভাড়া দোকানঘরে। প্রতিদিন শতাধিক রোগী ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু স্থায়ী ভবন না থাকায় ওই দোকানঘরে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে রোগী চাপ আরও বেড়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ওই ভাড়া ঘরে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকের।জানা গেছে, ক্লিনিকটি পুনঃস্থাপনের জন্য ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি পাটারিরহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা সমাজসেবক অ্যাডভোকেট এম এ মালেক ৫ শতাংশ ও তার ভাই আবুল কালাম ১ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে দান করেন। কিন্তু ওই ৬ শতাংশ জমিতে ক্লিনিক স্থাপনের এখনো কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।জমিদাতা অ্যাডভোকেট এম এ মালেক বলেন, এলাকার দ্ররিদ্র জনগোষ্ঠির কথা বিবেচনা করে স্থানীয়দের চিকিৎসা সেবায় ক্লিনিক নির্মাণের জন্য জমি দান করেছি। জমি দানের দেড় বছর পার হয়ে গেলেও ক্লিনিক নির্মাণ হয়নি; বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) কামরুল আহসান বলেন, উপকূলীয় অসহায় মানুষ প্রতিদিনই চিকিৎসা নিতে ভিড় করেন। ভাড়া করা ওই দোকানঘরে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পরিবেশ নেই। এতে কার্যক্রম চালাতে হিমশিমে পড়তে হচ্ছে। রোগীরাও পড়ছেন বিড়ম্বনায়। নদী ভাঙনে বিলীন হওয়ার পর প্রায় দুই বছর হতে যাচ্ছে কিন্তু ক্লিনিকটির স্থায়ী ঠিকানা এখনও হয়নি।কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তাহের বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকটি বিলীন হওয়ার বিষয়টি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে; আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনঃস্থাপিত হবে।

আরও পড়ুন

×