ঝিনাইদহ আড়াইশ বেডের হাসপাতাল নির্মান শেষ না হওয়ায় রাগীরা চরম দুর্ভোগে

ঝিনাইদহ আড়াইশ বেডের হাসপাতাল নির্মান শেষ না হওয়ায় রাগীরা চরম দুর্ভোগে

ঝিনাইদহ আড়াইশ বেডের হাসপাতাল নির্মান শেষ না হওয়ায় রাগীরা চরম দুর্ভোগে
ঘুষ নিয়ে ঠিকাদার নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরোধ
থমকে গেছে হাসপাতালের নির্মান কাজ


ঘুষ নিয়ে ঠিকাদার ও নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরোধের জের ধরে ঝিনাইদহে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের  নির্মান কাজ ন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় ৯৫ ভাগ সম্পন্ন হলেও অবশিষ্ট কাজ থমকে গেছে। শতভাগ সম্পন্ন না হওয়ায় ভবন হস্তান্তর হচ্ছে না। এদিকে প্রতিদিন হাজারো রোগীর ভিড় ও চিকিৎসা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিস্ট সুত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৭ সালে টি.ই এন্ড ইউসিসিজেভি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মান কাজ শুরু করে।  চলতি বছরের ডিসেম্বরে নির্মান কাজ সম্পন্ন করে ভবনটি হস্তান্তরের কথা রয়েছে। কিন্তু বিল প্রদান নিয়ে ঠিকাদার ও নির্বাহী প্রকৌশলীর মধ্যে বিরোধের কারণে নির্মান কাজ থেমে গেছে। সুত্র জানায় নির্মান কাজের টেন্ডার এমাউন্টছিল  ৩৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ভেরিয়েশন, রিভাইসড এবং ওপি সমন্বয়সহ মোট  নির্মান  মূল্য ৪৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। কিন্তু বিলের  প্রয়োজনীয় অর্থ পরিশোধে ঝিনাইদহ গনপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখ টাকা ছাড় করছেন না এমন অভিযেগে নির্মান কাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টি.ই এন্ড ইউসিসি। নির্বাহী প্রকৌশলীর দাবি, ঠিকাদার সম্পন্ন কাজ না করেই অতিরিক্ত বিল চাচ্ছেন। অন্যদিকে ঠিকাদারের অভিযোগ একান্ত জেদ ও একগুয়েমি করে নির্বাহী প্রকৌশলী টাকা ছাড় দিচ্ছেন না। এতে ঠিকাদার আর্থিক সংকটে পড়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের টি.ই এন্ড ইউসিসিজেভির যৌথ ঠিকাদার আশফাক মাহমুদের দাবি একাজে তাদের সাড়ে নয় কোটি টাকা পাওনা আছে এবং গ্যারান্টি ও সিকিউরিটি মানি আরো সাড়ে নয় কোটিসহ মোট ১৯ কোটি টাকা পড়ে আছে। গত অক্টোবরে কন্ট্রাক্ট এমাউন্ট হতে মন্ত্রনালয় বরাদ্দকৃত বিল তিন কোটি টাকা ছাড়ের অনুমোদ দিয়েছে। কিন্তু ঝিনাইদহ গনপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী একরকম জিদ করেই পেমেন্ট দিচ্ছেন না। ওই টাকা পেমেন্ট দিলেই  দ্রুততম সময়ে কাজটি সম্পন্ন করা সহজ হয়। বিলটি পেমেন্ট দেয়ার জন্যে অনুরোধ জানান তিনি। ঠিকাদার আরো অভিযোগ করে বলেন, তিন কোটি টাকার ১০ ভাগ টাকা নির্বাহী প্রকৌশলী ঘুস দাবি করেছেন। ঘুসের ওই টাকা না দিলে তিনি বিল ছাড় করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তারা ঘুস দিচ্ছেন না বলে  বিলও পাচ্ছেন না। ঠিকাদার টিপু সুলতান অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ, কালিগজ্ঞ ও হরিনাকুন্ডতে ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে   তিনটি মডেল মসজিদ নির্মান কাজে উক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মসজিদ প্রতি ৪০ লাখ টাকা করে মোট এক কোটি ২০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। এ টাকা দিতে অস্বীকার করায়  তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ঝিনাইদহ ২৫০ বেড জেণারেল হাসপাতাল নির্মান কাজের বিল আটকিয়ে রেখেছেন। পবিত্র মসজিদ তিনটির কাজ কুষ্টিয়া শামীম এন্টারপ্রাইজ এর নিকট থেকে নিয়ে মল্লিক ব্রাদার্সেও মালিক টিপু সুলতান ও পলিট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর মালিক আশফাক মাহমুদ সাব ঠিকাদার হিসেবে কাজ নিয়েছেন বলে জানান টিপু সুলতান। গনপূর্ত বিভাগের  ঝিনাইদহ নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কায়সার ইবনে শাঈখের দাবি,  ঠিকাদার সম্পন্ন কাজ না করেই অতিরিক্ত বিল চাচ্ছেন। তিনি আরো জানান,বিলের জন্য ঠিকাদার তাকে হুমকি দিয়েছেন। তবে ঘুষের টাকা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে জানান তিনি। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল তত্বাবধায়ক ডাঃ আযুব আলী জানান, প্রতিদিন ১০০ বেডের এ হাসপাতালে ৪০০ রোগি ভর্তি থাকে। জায়গা দিতে পারছি নে। জনবল কম। ২৫০ বেডের কাজ ২০১৭ সালে শুরু হয়েছে। ২০১৮ সালের শেষে সমাপ্ত হবার কথা ছিল। কিন্তু হয়নি। আমরা চায়, দ্রত অবশিস্ট কাজ- সাবষ্টেশন, লিফট, জেনারেটর ও ফিনিশিং সম্পন্ন করে হ্যান্ড ওভার করুক। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, ২৫০ বেডের হাসপাতাল নির্মান কাজে পিছিয়ে আছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকৌশলীর ওপর দোষ চাপাচ্ছেন অন্যদিকে প্রকৌশলী বলছেন, ঠিকাদার সম্পন্ন কাজ না করেই অতিরিক্ত বিল চাচ্ছেন। হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে রোগিরা কষ্ট পাচ্ছেন। আমরা চায় দ্রুত কাজটি সম্পন্ন হোক। 

আরও পড়ুন

×