আজ ফুলবাড়ীয়া হানাদার মুক্ত দিবস

প্রকাশিত: 08/12/2019

তানজিদ শুভ্র

আজ ফুলবাড়ীয়া হানাদার মুক্ত দিবস

তখন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে দেশের নানাপ্রান্তে স্বাধীনতার লাল সূর্য উদিত হওয়া শুরু করেছিল। তেমনি ৮ ডিসেম্বর, বুধবার যুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাক হানাদার মুক্ত হয় ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলা।
'৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর ফুলবাড়ীয়া উপজেলার লক্ষ্মীপুরে ভারী অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত পাকবাহিনীর সাথে উপজেলার লক্ষ্মীপুর বাজারে সম্মুখ সমরে অংশ নিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধারা। সম্মুখ সমরে শেষ হয়েছিল ৬৮ জন পাকহানাদার বাহিনীর সদস্য। ৬৮ জন পাকহানাদার নিহতের খবর ময়মনসিংহে পৌঁছলে পাকবাহিনী প্রতিশোধ নেয়ার জন্য লক্ষ্মীপুর গ্রামের শত শত ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে চার জন নিরীহ গ্রামবাসিকে আটক করে লক্ষ্মীপুর বাজারে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যায়। গণকবর দেওয়া হয়েছিল এই চারজনকে। নিহতদের মধ্যে ক্বারী আবু নাছের ছিলেন নব বিবাহিত। পাকসেনাদের নির্মমতা থেকে রক্ষা পায়নি ফুলবাড়ীয়া খাদেমুল ইসলাম (সিনিয়র) মাদ্রাসার তৎকালীন ছাত্র মোহাম্মদ ইলিয়াসও।
ফুলবাড়ীয়া উপজেলার সম্মুখ যুদ্ধের আরেকটি স্মরণীয় ঘটনা রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নে টানা ৭২ ঘন্টা যুদ্ধ। পাকসেনারা ইউনিয়ন পরিষদের ছাদের উপর মেশিনগান বসিয়ে বৃষ্টির মত গুলি বর্ষণ করে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল বাঙালিদের। পাঁচটি গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিল পাকসেনারা, বানার নদীর ব্রীজের উপর সারিবদ্ধ করে রেখে গুলি করে লাশ ফেলে দিয়েছিল নদীতে। রক্তে লাল হয়ে যাওয়া বানার নদীর পানির প্রবাহে গুলিবিদ্ধ নিথর দেহগুলো ভেসে যেত ভাটির দিকে।
মুক্তি সংগ্রামের এসব বীরত্ব গাঁথা গল্প নিয়েই ফুলবাড়ীয়া জনপদের ইতিহাস সমৃদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধাদের স্মরণে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের দক্ষিণ পাশে মহান মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতিসৌধ স্থাপিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ভালুকজান ব্রীজের পাশে স্থাপন করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের নামসহ স্মৃতিস্তম্ভ এবং নির্মানাধীন রয়েছে রাঙ্গামাটিয়ায় স্মৃতিসৌধটি।
 

আরও পড়ুন

×