প্রকাশিত: 23/12/2019
দুর্নীতির দায়ে ফেঁসে গেছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলারা ইয়াসমিন জোয়ারদার। খাতওয়ারী তদন্তে আর্থিক দুর্নীতির চিত্র ফুটে উঠেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা অধিদপ্তরে উপপরিচালক রসময় কীর্ত্তনীয়া এবং শিক্ষা পরিদর্শক হেমায়েত উদ্দীণ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত করে ৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ১১টি অভিযোগের মধ্যে অধিকাংশই প্রমানিত হয়েছে। অভিযোগের বিভিন্ন অনুচ্ছেদে রেজুলেশন টেম্পারিং, ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি খাতের টাকা আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। অভিযোগের একটি অনুচ্ছেদের উল্লেখ আছে ২০১৮ সালে প্রধান শিক্ষক দিলারা ইয়াসমিন জোয়ারদার একক সাক্ষরে শৈলকুপার সোনালী ব্যাংকে একটি একাউন্ট খোলেন। সেখানে ছাত্র ভর্তি ও এক মাসের বেতনসহ বিভিন্ন খাতের ১০ লাখ টাকা জমা না দিয়ে ৬ লাখ ৬৬ হাজার ২৪৪ টাকা জমা করেন। এছাড়া বেসরকারী আয়ের ২৯ হাজার ১১৬ টাকা টাকা ঋন দেখিয়ে ব্যাংকে জমা দেন নি। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, প্রতারণা ও চাতুর্য্যের মাধ্যমে রেজুলেশন খাতায় ফাঁকা রেখে নিজের ইচ্ছামতো শব্দ বসিয়ে তিনি দুর্নীতি করেছেন। ৮৬ হাজার ৮৫০ টাকা ব্যায় করেও কোন ভাউচার দেখাতে পারেনি। ভাউচার জালিয়াতি করে বেঞ্চ তৈরীর টাকা দুইবার আত্মসাৎ করেন। ফরম পুরণের সময় অতিরিক্ত ৩৬৫ টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করে আত্মসাৎ করেন। প্রতিমাসে তিনি হ্যান্ডক্যাশ নেন ৫ হজার টাকা করে, যা অবৈধ। ২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বেতন স্কেলের ৩০% এবং ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত বেতন স্কেলের ৫০% প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত ভাতা বেআইনী ভাবে গ্রহন করেন। রমজান মাসে অডিটের সময় তিনি আপ্যায়ন বাবদ ৮ হাজার টাকা তুলে পকেটস্থ করেন। এ ধরণের একাধিক অভিযোগ প্রমানিত হওয়ার পরও অদৃশ্য কারণে প্রধান শিক্ষককে চাকরীচ্যুত করা হচ্ছে না। অপরদিকে প্রধান শিক্ষকের অপসারনের দাবিতে বার্ষিক পরীক্ষার মধ্য থেকে স্কুলের সব শিক্ষক কর্মবিরতি চালাচ্ছেন। প্রধান শিক্ষক পিয়ন ও তার অনুগত কিছু শিক্ষক দিয়ে পরীক্ষা নিলেও এখন পরীক্ষার খাতা দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন বিষয় ভিত্তিক শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় জনমনে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে।
ঝিনাইদহ