বার্ষিক ‘পলো বাওয়া’ উৎসব ঘরে ঘরে আনন্দ

বার্ষিক ‘পলো বাওয়া’ উৎসব ঘরে ঘরে আনন্দ

বিশ্বনাথে এবারও হৈ-হুল্লোড় আর আনন্দ-উৎসবে উদযাপিত হলো গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘পলো বাওয়া’ উৎসব। শিকড়ের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের টানে প্রতি বছরই আয়োজন করা হয় এই উৎসবের।

আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারী) দুপুর ১২টায় বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরী গ্রামের (দক্ষিণের বিল) বড় বিলে এই মৎস্য ধরা উৎসব আয়োজিত হয়। এতে প্রায় চারশতাধিক সৌখিন মৎস্য শিকারী অংশগ্রহণ করেন।

বিলের কাছে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কনকনে শীত উপেক্ষা করে সাতসকালেই বিলের ধারে জড়ো হয়েছেন শিকারীরা। এতে দলভুক্ত হয়েছে শিশু-কিশোরও। মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম পাশে নিয়ে পূর্ব নির্ধারিত সময়ের প্রহর গুনছেন সকলেই।

সময় হলেই একযোগে ‘আনন্দ চিৎকার’ দিয়ে বিলে নামার অপেক্ষায় দাড়িয়ে আছে সবাই। এই উৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে বিলের ধারে ভিড় জমিয়েছেন উৎসুক জনতা।

দুপুর ১২টা হলেই ভূ-দৌড়ে পলো নিয়ে বিলে ঝাঁপ দেন শিকারীর দল। দীর্ঘসময় হীম শীতল জলে মাছ শিকারে মেতে উঠেন তারা। এসময় ধরা পড়ে বোয়াল, রুই, কাতলা, শোল, গজার ও বাউশ মাছ।

ঘোলা জলে উপরে ভেসে আসা প্রচুর টেংরা-পুঁটিও ধরা হয় জাল দিয়ে । গ্রামবাসীরা জানান, গ্রাম পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্তনুযায়ী ভাদ্র মাস থেকে বিলে সকল প্রকার মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়।

এতে বিলে জড়ো হয় বিভিন্ন জাতের প্রচুর মাছ। এই পাঁচ মাসে মাছ গুলো সুযোগ পায় বড়ো হওয়ার। ‘পলো উৎসব’র এক সপ্তাহ পূর্বে পঞ্চায়েতের সভা ডেকে সৃংঙ্খলা রক্ষায় নেয়া হয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

সভার পরপরই উসৎসবের ন্যায় গ্রামের ঘরে ঘরে পলো তৈরী, মেরামত ও সংগ্রহের কাজ চলে। এরপর মাঘ মাসের পহেলা দিনেই আনুষ্ঠানিক ভাবে একযোগে আমরা মাছ ধরতে বিলে নামি এবং অধিকাংশ শিকারীই মাছ হাতে বাড়ি ফিরি।

যুক্তরাজ্য প্রবাসী রহমত আলী, সমছুল ইসলাম, মনোহর আলী বলেন, বিদেশ থেকে আসার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো পলো বাওয়া উৎসবে অংশ গ্রহন করা। আমরা আনন্দ পাই।

আমাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতি বছর এ আয়োজন করেন গ্রামবাসি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গোলাম হোসেন বলেন, আমাদের উপজেলায় এটিই সব’চে বড় ‘পলো বাওয়া উৎসব’।

যুগযুগ ধরে এ ঐতিহ্য চলমান। আমরা গ্রামবাসীরা মিলে প্রতিবছর এ বিল থেকে উৎসবের মতো দেশীয় প্রজাতির সু- স্বাদু মাছ আহরণ করে থাকি।

আরও পড়ুন

×