ফুলবাড়ীতে শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী বলায় সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ-প্রতিবাদ

ফুলবাড়ীতে শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী বলায় সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ-প্রতিবাদ

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরসভার দুইজন কাউন্সিলর ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে সন্ত্রাসী অখ্যায়িত করার প্রতিবাদে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে। শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের ফলে ফুলবাড়ী-দিনাজপুর-বগুড়া সড়ক পথে চলাচলকারী ঢাকাগামী কোচসহ শতাধিক বিভিন্ন প্রকার যানবাহন আটকা পড়ে।

পরে ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কানিজ আফরোজের নেতৃত্বে র‌্যাব ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রাসেল আহম্মেদ, নাসিম মাহমুদ, রাজিউল ইসলাম, শঙ্কর মজুমদার, সাগর ইসলাম, তারেক ইসলাম, শামিম ও শুভ বলেন, পৌর কাউন্সিলর রোকেয়া বেগম দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে কলেজের জায়গায় ঘরবাড়ি ও মার্কেট নির্মাণ করে ভোগদখল করে আসছেন।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানে তার ওইসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই জায়গাটিতে বাউন্ডারি দিতে গেলে পৌর কাউন্সিলর হারান দত্ত ও পৌর কাউন্সিলর রোকেয়া বেগম শিক্ষকদের বাধা দেন।

এতে শিক্ষকদের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে ওই দুই কাউন্সিলর শিক্ষার্থীদেরকে সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করে বিভিন্ন প্রকার গালিগালাজ করেন।

এ কারণে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসী আখ্যাদানকারী ওই দুই কাউন্সিলরের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

পৌর কাউন্সিলর রোকেয়া বেগম বলেন, ২০০৮ সালে জায়গাটি ক্রয় করেন। তিনি ৪০ফিট মাটি ভরাট করে বাসাবাড়ি নির্মাণ করেন কিন্তু সে সময় কেউ বাধা দেননি।

২০১০ সালে কলেজ কর্তৃপক্ষ ৫১৯ নং স্মারকে নোটিশ দেন ওই জায়গা কলেজের সম্পত্তি। এনিয়ে তিনি মামলা দায়ের করলে মামলাটি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।

কলেজ কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক তার বাসাবাড়ি যাতায়াতের রাস্তা অবরুদ্ধ করে দেওয়াল নির্মাণ করতেগেলে তিনিসহ তার লোকজন বাধা দিয়েছে।

তবে কাউকে সন্ত্রাসী কিংবা বলেননি। পৌর কাউন্সিলর হারান দত্ত বলেন, কোন শিক্ষার্থীদেরকে সন্ত্রাসী বলা হয়নি। এটি অপপ্রচার করা হচ্ছে।

কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. নাজমুল বলেন, গত সোমবার (২০ জানুয়ারী) সড়ক ও জনপথ বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানের পর সড়ক সংলগ্ন কলেজের জায়গা কাটা তার দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়।

গতকাল মঙ্গলবার কলেজের ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক জাহিদ হাসান কাদেরী এবং ফাইন্যান্স ও ব্যাংকি বিভাগের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ শিক্ষকরা ওই জায়গায় স্থায়ী বাউন্ডারী ওয়াল দেওয়ার জন্য লেবার ও রাজমিস্ত্রি নিয়ে কাজ করতে গেলে পৌর কাউন্সিলর রোকেয়া বেগম ও কাউন্সিলর হারান দত্ত কাজে বাধা দেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের কাজে সহায়তা দিতে গেলে ওই দুই কাউন্সিলর শিক্ষার্থীদেরকে সন্ত্রাসী বলে গালিগালাজ করেন। এতে বিক্ষুদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করেছে।

তিনি আরো বলেন, কলেজের জায়গা দখলে নিয়ে বাসাবাড়িসহ মার্কেট নির্মাণ করে ভোগদখল করে আসছিলেন রোকেয়া বেগম।

জায়গা ছেড়ে দিতে একাধিকবার লিখিত চিঠি দিয়ে বলার পরও তিনি জায়গা ছেড়ে না দিয়ে উল্টো কলেজের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, রোকেয়া বেগমের বাসাবাড়ি থাকায় তাকে চলাচলের জন্য রাস্তা বের করে দেয়া হয়েছে।

মামলা নিষ্পত্তি ছাড়া কোন সুরাহ বের হচ্ছে না। বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্র্থীদের নিয়ন্ত্রণে এনে ইউএনও মহোদয়সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যাববাহন চলাচলা স্বাভাবিক করে দিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কানিজ আফরোজ বলেন, সড়ক অবেরাধ করে নয়, কোন বিষয়ে বিক্ষুদ্ধ হলে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে শিক্ষার্থীদেরকে।

আরও পড়ুন

×