প্রকাশিত: 20/03/2020
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসন্দি গ্রামে অবসারপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হাফিজুর রহমানের পরিবার এখন অবরুদ্ধ। তার জমি-জামা দখল করে গাছপালা কেটে নেওয়া হচ্ছে। কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। বরং প্রভাবশালী একটি মহল মক্তিযোদ্ধা এই পরিবারকে এখন গ্রাম থেকে উচ্ছেদের পায়তাঁরা করছে। মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমানের মেয়ে শাহনাজ পারভিন গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে পাঠানো এক লিখিত অভিযোগে এ সব কথা উল্লেখ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ফুরসিন্দ গ্রামের আব্দুল হালিম, অশ্বিন, আনসার আলী ও রেজাউল তার পিতার নামিয় ফুরসন্দি মৌজায় ৩৬৩ নং দাগের উপর অবস্থিত প্রায় ৭০ হাজার টাকা দামের একটি গাছ জোর করে কেটে নিয়েছেন। মিয়া বংশের পক্ষ থেকে একই মৌজার ৩৬৪ নং দাগের ২৪ শতক জমি ঈদগাঁর নামে দান করা হলেও জোর করে ঈদগাঁর জায়গা দখল করে নেওয়া হয়েছে। তার পিতার ৩৫১ নং দাগের ০৭ শতক জমি সোহান নামে এক জন জবর দখল করেছেন। ৩৪৮ দাগের ০৬ শতক জমি প্রভাব খাটিয়ে নিজ নামে রেকর্ড করে নিয়েছে আরশাফ মিয়া। মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম বলেন, আমরা খুবই অসুস্থ। কিন্তু আমাদের উপর চরম ভাবে দমন পীড়ন ও মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। রাষ্ট্র থেকে কোন সুরক্ষা পাচ্ছি না। আমার তিন মেয়ে বিয়ের পর সবাই স্বামী-সংসার করছে। একমাত্র ছেলে ঢাকায় চাকরী করেন। এই সুযোগে গ্রামের একটি মহল আমার সহায় সম্পত্তি একের পর এক দখল করে নিচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান শাহনাজ পারভীন আরো লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, তার দাদার আমলের ঝাড়ের বাশ কাটতে গেলে আরশাফের ছেলে তারিকুল আমার বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে কুড়াল দিয়ে কোপাতে আসে। তারা হত্যার হুমকী দেয়। আমার অসুস্থ পিতা-মাতাকে বাড়িতে একা পেয়ে গ্রামের হারুন মোল্লা তার বাড়ির ময়লা ও নোংড়া পানি ড্রেন দিয়ে আমাদের বাড়ির মধ্যে ঢুুকিয়ে দিচ্ছে। প্রতিবাদ করায় হারুন মোল্লার স্ত্রী আল্লাদি খাতুন সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে আমার বৃদ্ধ মা রোকেয়া বেগমকে মারধর করেছে। এ ছাড়া আরশাফ ও আশ্বিন আমার পিতা-মাতাকে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক নির্যাতন করে আসছে। অথচ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্য হয়েও তার পিতা কোন বিচার পাচ্ছেন না। পরিবারটি ভাষ্য দুই মাস আগে বিষয়টি নারিকেল বাড়িয়া পুলিশ ফাড়ি ও ঝিনাইদহ থানায় জানানো হলেও তারা নুন্যতম কোন প্রতিকার পায়নি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে মুক্তিযোদ্ধা অসহায় এই পরিবারটি। বিষয়টি নিয়ে ফুরসন্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মিনা জানান, অবসারপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হাফিজুর রহমানকে আমি চিনি। তাকে এক ঘরে করে রাখা হয়েছে। ওই পরিবারের সাথে কাউকে মিমতে দেওয়া হচ্ছে না বলে আমি শুনেছি। তিনি বলেন, যরাই এই কাজটি করুক তারা মোটেও ভাল করেনি। একজন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান জানানো উচিৎ। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মিনা জানান। জমিজাতি দখল নিয়ে তিনি বলেন, এক সময় ফুরসিন্দ গ্রামের মিয়াদের জমিজাতি যারা ভাগে বর্গায় করতো তারাই এখন এসবের সাথে জড়িত বলে তিনি মনে করেন।