ফুলবাড়ীতে গোলমরিচ, কালিজিরা, আদা খাওয়ার ধুম

ফুলবাড়ীতে গোলমরিচ, কালিজিরা, আদা খাওয়ার ধুম

সদ্যোজাত এক শিশু বলেছে ‘তোমরা আদা, গোল মরিচ আর লবঙ্গ একত্রে খাও। তাহলে কারও করোনাভাইরাস সংক্রমণে রোগ হবে না।’ এই কয়েকটি শব্দ উচ্চারণ করেই শিশুটি মারা গেছে।

গত শনিবার রাতে নানা মাধ্যমে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীসহ এর বিভিন্ন স্থানে। শুরু হয় গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠে আদা, গোলমরিচ কালাজিরা আর লবঙ্গ সংগ্রহ করে খাওয়ার হিড়িক।

গত রবিবার (২৯ মার্চ) রাত স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মী জানান, হঠাৎ করে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি তাকে জানান, বিরলে একটি শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর কথা বলেছে ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তোমরা আদা, গোলমরিচ, কালিজিরা আর লবঙ্গ একত্রে করে খাও।

এতে করোনাভাইরাস সংক্রামণে রোগ হবে না।’ আর এ কয়েকট শব্দ উচ্চারণ করেই শিশুটি মারাও গেছে। এরপর থেকে অনেকে এসব খাওয়া শুরু করেন।

তবে ওই গণ্যমাধ্যমকর্মীটি বিরলে এক গণমাধ্যমকর্মীর সাথে মুঠোফোনে কথা বলে জানতে পারেন সেখানেও একই গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। তবে শিশু কথা বলা ও স্থান ভিন্ন হয়ে চলে গেছে রংপুরের মিঠাপুকুরে।

সেখানেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে গুজব ছড়েছে নীলফামারীতে কথিত ওই শিশুর ভুমিষ্ঠ হওয়া, কথা বলাসহ মারা যাওয়ার গুজব। আদৌ এর কোনা সত্যতা পাওয়া যায়নি। এটি একটি নিছক গুজব।

উপজেলা খড়মপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক নূর আলম বলেন, গত রবিবার (২৯ মার্চ) রাতে মাদিলাহাট এলাকায় ওই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। মুহুর্তে আদা, হলুদ, গোলমরিচ, কালিজিরা, সংগ্রহে ধুম পড়ে যায়।

উত্তর রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক মহিদুল ইসলাম মাজু বলেন, ওই রাতে হঠাৎ করে ওই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে রাঙামাটি এলাকায় আদা, গোলমরিচ, কালিজিরা আর লবঙ্গ সংগ্রহে ধুম পড়ে যায়।

আলাদিপুর গ্রামের কালীপদ রায় বলেন, গতকাল সোমবার বীরগঞ্জ থেকে তার এক নিকট আত্মীয় একই কথা জানান। তিনি আদা, গোলমরিচ, কালিজিরা আর লবঙ্গ একত্রে খাওয়ার জন্য বলেন।

কিন্তু তিনি খাননি। তিনি ধারণা করেছেন, এটি নিচ্ছক গুজব। পৌর এলাকার কাঁটাবাড়ী গ্রামের সঞ্চয় কুমার বলেন, ঘটনাটি জানার পর কষ্ট করে আদা, গোলমরিচ, কালিজিরা আর লবঙ্গ সংগ্রহ করে তিনিও খেয়েছে এবং পরিবারের লোকজনকেও খাইয়েছেন।

তার ধারণা ‘এতে যদি কোন উপকার হলে হতেও পারে, না হলে তো কোন ক্ষতি নেই।’ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, এমন গুজবের কথা কানে এসেছে। বিষয়টি গুজব।

এই গুজবে কান না দেওয়ার জন্য জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে। জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, ‘এটি গুজব। থানার ওসি সাহেবকে বলা হয়েছে, গুজব রটনাকারীদের ধরে আইনের আওতায় আনতে। সেনাবাহিনীও মাঠে কাজ করছে।’

আরও পড়ুন

×