প্রকাশিত: 17/04/2020
মাছের বাজার হৈ হৈ হৈ! এই হৈ হৈ হৈ থাকতো অন্যান্য সময়। কিন্তু এখন করোনার সংক্রমণের শঙ্কা থাকলেও মাছ আড়তে গিজ গিজ করছে মানুষ। দাঁড়িয়ে আছেন একজন আরেকজনের গা ঘেঁষে । একদল দরদাম করছেন, কেউ টাকা গুণছেন। কেউ আবার মাছ তুলছেন রিকশা-ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে। অধিকাংশ লোকরেই মুখে মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে ঝুঁকি নিয়ে আড়তে মাছ বেচাকেনা চলছে। এই চিত্র গতকাল শুক্রবার সকালে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরসভার প্রধান মাছ আড়তের।
রংপুরের মিঠাপুকুর থেকে মাছ কিনতে আসা এক পাইকার ক্রেতা বিষু মিয়া বলেন, আড়ৎদার মাছগুলো সেডের নিচে খোলা অবস্থায় ঢেলে দিয়ে দাম হাকেন, তাই মাছগুলো দেখেশুনে নিতে মাছের কাছাকাছি যেতে হয়। দেখেশুনে না নিলে লোকসানে পড়তে হবে। এক সঙ্গে পাইকারক্রেতারা মাছের দাম ডাকাডাকি করায় সেখানে ভিড় হয়ে যায়।
আড়ৎ সংলগ্ন বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রতিদিন ভোর ৬ টা থেকে সকাল ৯ টা জনসমাগম ঘটিয়ে আড়ৎদারেরা তাদের মাছ বেচাকেনা করেন। এতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনকে দেখানোর জন্য মাছ আড়তে বাঁশের বেড়াঘেরা দেওয়া হলেও সেই বেড়াঘেরার বাইরে না রেখে ভেতরে ক্রেতাদের ঢুকিয়ে নিয়ে মাছ বেচাকেনা কারবার করছেন স্থানীয় দুই মাছ আড়ৎদার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাছ আড়ৎ সংলগ্ন ওষুধ দোকানী বলেন, মাছ আড়ৎ নয়, যেন করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানোর আড়ৎ-এ পরিণত করে তুলেছেন আড়ৎদারেরা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রশাসন থেকে বারংবার বলার পরও যেন তাদের সে ব্যাপারে কোন গুরুত্ব নেই। এই ভয়াবহ অবস্থায় গাদাগাদি ও গিজগিজ করে মানুষ না জমিয়ে যেন তাদের মাছ বিক্রিতে মজা হয় না।
কলেজ শিক্ষক আপেল মাহমুদ বলেন, মাছ কিনতে বাজারে এসে লোক সমাগম দেখে বাজারের ভেতর না ঢুকে অপেক্ষা করছেন হাটের জনশূন্য এক কোণে। গাদাগাদি আর জনসমাগম ঘটিয়ে মাছ আড়ৎ এ যেভাবে মাছ বেচাকেনা হচ্ছে, এতেই অনুমান করা যায়, আগামীতে করোনা নিয়ে কি অবস্থা দাাঁড়াবে।
আড়ৎদার নারায়ণ চন্দ্র সরকার বলেন, বাঁশের বেড়াঘেরা দিয়ে বেড়াঘেরার বাহির থেকে মাছের দরদাম করার জন্য ক্রেতাদের বলার পরও তারা সেটি মানছেন না। এ কারণে একটু ভিড় জমে জমাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রশাসনের কাছে অঙ্গীকার দিয়ে ব্যবসায়ীরা সেটি রক্ষা করেননি। এ কারণে খাদ্যপণ্যের দোকান ও আড়ৎ স্থানীয় সুজাপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাছে এবং সরকারী কলেজ মাঠে আজ শনিবার (১৮ এপ্রিল) থেকে স্থানান্তর করা হচ্ছে। সরকারি এই আদেশ অমান্যকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।#