প্রকাশিত: 21/04/2020
করোনা প্রভাবে বেতন ও আখের টাকা না পেয়ে ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারি ও আখ চাষিদের মানবেতর দিন কাটছে। কর্তৃপক্ষের কাছে দাবির পরও মিলছে না টাকা।
মিল কর্তৃপক্ষ বলছে বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও চিনি বিক্রি না হলে র্কর্মচারিদের বেতন ও আখ চাষিদের বকেয় টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত মৌসুমে মিলটিতে ১ লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৭ হাজার ৫৯ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করা হয়। গুদামে ৩০ কোটি টাকা মুল্যের ৫ হাজার ১২৫ মেট্রিক টন চিনি এবং ১২ কোটি টাকার চিটাগুড় অবিক্রিত রয়েছে।
করোনার প্রভাবে পার্টি না আসায় চিনি বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারী প্রতিষ্ঠানে চিনি বিক্রি হচ্ছে স্বল্প পরিসরে। এক হাজার ছয় জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর জানুয়ারি- মার্চ মাসের বেতন ৪ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।
দেড় মাসের বেশী সময় বন্ধ রয়েছে আখ চাষীদের বকেয়া পরিশোধ। এ চাষের সাথে জড়িত ৮ হাজার চাষীর পাওনা পড়ে আছে প্রায় ১৯ কোটি টাকা। চিনিকলের কর্মচারীরা জানান, দীর্ঘদিন বেতন না পেয়ে খুবই কষ্টে দিন পার করছি।
করোনা’র কারনে কেউ ধারও দিচ্ছে না। এ অবস্থায় সরকার আমাদের বকেয়া টাকা দিলে খুবই উপকার হতো। চিনিকলের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদেরও একই অবস্থা।
ঘরে চাল নেই, পকেটে টাকা নেই , করোনার কারনে বাইরের কাজেও যেতে পারছে না বলে জানান চিনিকলের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা । এদিকে মিলে বিক্রিত আখের পাওনা টাকা না পেয়ে কষ্টে আছেন চাষীরা।
আখ চাষি আলাউদ্দিন সহ কয়েকজন জানান, অনেক আগে আখ বিক্রি করেছি কিন্তু মিল টাকা দিচ্ছে না। এতে সংসার চালাতে যেমন কষ্ট হচ্ছে তেমনি জমির পরিচর্যাও করতে পারছিনা।
মোবারকগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন সভাপতি গোলাম রসুল বলেন, বেতন তো নেই-ই , ত্রাণের আওতায়ও পড়ছিনা। এ অবস্থায় সরকার বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা না করলে পেটের জ্বালায় রাস্তায় বের হওয়া ছাড়া উপায় থাকবেনা।
সরকারের সুগার কর্পোরেশনকে দেওয়া ৫শ’ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ১শ’ কোটি টাকা ছাড় হয়েছে, বাকি অর্থ মন্ত্রনালয়ে আটকে আছে। এই টাকা ছাড় হলেও কিছু পাওনা পরিশোধ হতো।
মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার কবির জানান, করোনার প্রভাবে পার্টি না আসায় চিনি বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। কর্মচারীদের জানুয়ারি মাসের কিছু টাকা পরিশোধ হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চিনি বিক্রি করে সকলের পাওনা পরিশোধ করা হবে।