প্রকাশিত: 29/05/2020
সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা থেকে বিশেষ কৌশলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়কপথে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিষয়টি লুকানোর জন্য ফুলবাড়ী পৌর এলাকা থেকে কিছুটা দূরে বাগধরা, চন্ডিপুর, জয়নগর এলাকায় যাত্রী ওঠানো হচ্ছে। পরিবহনের জন্য যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি ভাড়া।
যাত্রী পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, ফুলবাড়ী-ঢাকা, রাজশাহী, যশোর, বগুড়া, কুষ্টিয়া, নগরবাড়ী, পাবনাসহ বিভিন্ন স্থানে স্বাভাবিক অবস্থায় যাত্রী পরিবহনের জন্য অন্তত শতাধিক যাত্রীবাহী কোচ, বাস ও মিনিবাস চলাচল করে। এতে ফুলবাড়ী থেকে ঢাকায় নরমাল কোচগুলোর ভাড়া ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা এবং এসি কোচের ভাড়া এক হাজার ১০০ টাকা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুইমাস থেকে এসব যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে পরিবহনের সাথে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা পুরোপুরি বেকার হয়ে পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফুলবাড়ী থেকে ঢাকা গামী কয়েকটি নরমাল কোচ রাত ১ টা থেকে রাত ৩ টার মধ্যে বিশেষ কৌশলে ফুলবাড়ী শহর থেকে কিছুটা দূরে যাত্রীদের তুলে নিয়ে ঢাকা উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে। প্রয়োজনের তাগিদে যাত্রীরাও জনশূন্য স্থানে অবস্থান নিয়ে যাতায়াত করছেন গোপনে গোপনে। এতে যাত্রীদের ভাড়া হিসেবে গুণতে হচ্ছে চার থেকে পাঁচ গুণ টাকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কোচ কাউন্টার শ্রমিক বলেন, দুইমাস থেকে গাড়িঘোড়া বন্ধ। আয় রোজগার নেই। যা কিছু সঞ্চয় ছিল সবকিছুই শেষ হয়ে গেছে। পরিবার পরিজন চলে কীভাবে? একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী পাওয়া গেলেই সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেই গোপণে যাত্রীদের পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। চার থেকে পাঁচ গুণ ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এখান থেকে ঢাকা যাওয়া পর্যন্ত পদে পদে হোচট খেতে হচ্ছে কোচের চালক ও হেলপারকে। তবে সবকিছুই ম্যানেজ করতে হচ্ছে অর্থ দিয়ে। পথের ওইসব অর্থ যোগান দিতেই ভাড়া একটু বেশি নিতে হচ্ছে।
ফুলবাড়ী থেকে গোপণে কুমিল্লায় কর্মস্থলে যোগদানকারী এক এনজিও কর্মী মুঠোফোনে জানান, ফুলবাড়ী থেকে গোপণে বিরামপুর হয়ে কুমিল্লায় পৌঁছেছেন। স্বামী-স্ত্রী দুইজনের ভাড়া গুণতে হয়েছে ৬ হাজার ৩০০ টাকা।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘ফুলবাড়ী-ঢাকার মধ্যে যাত্রী নিয়ে কোন যানবাহন চলাচল করছে না। ফুলবাড়ী থেকে অন্যস্থানে এবং অন্যস্থান থেকে ফুলবাড়ীতে যাতে কেউ ঢুকতে না পারে সেজন্য পুলিশ সদস্যরা সজাগ রয়েছেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে যানবাহনে যাত্রী পরিবহনের চেষ্টা করা হলে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।