প্রকাশিত: 27/06/2020
ঝিনইদহের কালীগঞ্জের সেই ৫শত বছরের পুরাতন বিশাল তেতুলগাছ বাঁচাতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা বাজারে গ্রীন ভয়েস, আদর্শ ছাত্র সমাজ, বালিয়াডাঙ্গা ছাত্র যুবসমাজ ও ঐতিহ্যবাহি সম্পদ রক্ষাকারী কমিটি, স্বপ্ন ছোঁয়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামবাসীসহ বেশ কয়েকটি পরিবেশ রক্ষাকারী সংগঠন এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা বাজারের মাঝখানে প্রায় ৫শ বছরের পুরাতন এই তেঁতুল গাছটি মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই গাছের ছায়ায় প্রতিবছর বৈশাখী মেলা বসে। গরমের দিনে গাছটির সুশীতল ছায়াতলে বসে পথিকসহ এলাকার পরিশ্রান্ত মানুষ নিজেদের শরীর শীতল করে নেন। এছাড়া এই গাছে প্রচুর পরিমান তেঁতুল উৎপাদন হয়। যার বিক্রিত অর্থ বাজারের একমাত্র মসজিদের উন্নয়ন কাজে জমা দেয়া হয়। মৌসুমে পাকা তেঁতুল কুড়িয়ে রসনা তৃপ্ত করে না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। এছাড়া এই বিশাল গাছটি এতদাঞ্চলের বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের আশ্রয়স্থল। গাছটির অবস্থান শ্রীবৃদ্ধি করে দাঁড়িয়ে থাকা কালের সাক্ষী পরম ভালোবাসার এই মহীরুহকে কাটতে এলাকার কিছু লোক উঠে পড়ে লেগেছে। গত ২২ জুন গাছটিকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে বা নতুন হাট চাঁদনি নির্মাণের কথা বলে এই গাছ কেটে ফেলার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দেওয়া আবেদনে স্থানীয় ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ছানা জোর সুপারিশ করে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। আবেদনটি করেন ইউনিয়নের ৭নং ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ও ৮নং ইউপি সদস্য কে.এম শামছুল হক। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এলাকার সচেতন মানুষ ও পরিবেশবাদীরা। তারা গাছটি কে রক্ষা জন্য মানববন্ধন করেন।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মান্নান (৬০) নামের এক বৃদ্ধ জানান, সম্প্রতি আম্পান ঝড়ে বাজারের তেঁতুল গাছটির একটি ছোট ডালও ভেঙ্গে পড়েনি। গাছের কোন শুকনো ডালও নেই। এই গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে কোন ব্যক্তির হতাহতের ঘটনাও কখনো ঘটেনি। কিন্তু এরই মাঝে এই গাছটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে কাঁটার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই গাছের জন্য আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত আছি বলছিলেন এই বৃদ্ধ। তিনি জানান, বালিয়াডাঙ্গা বাজারের এই তেঁতুল গাছটি আমাদের ঐতিহ্য। বাজারের সবকিছু এই গাছকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।মানববন্ধনের আগে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এসময় তিনি স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। সাংসদ আনার বলেন, স্থানীয়রা না চাইলে গাছ বাঁচিয়ে হাট চাঁদনীর কাজ করা হবে বলে মত দেন।সম্প্রতি স্থানীয় একটি চক্র ঐতিহ্যবাহি এ গাছটি কাটতে ষড়যন্ত্র শুরু করে। গাছটি কাটা হচ্ছে ঘটনা জানাজানির পর এলাকার মানুষ ওই গাছ খেকো চক্রের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। একই দিন দুপুর ১টার দিকে গ্রীণ ভয়েস নামের একটি পরিবেশ রক্ষাকারী সংগঠন তেতুলতলায় মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে।