প্রকাশিত: 04/08/2020
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার টুমচর শাকচর ও ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন পৌর শহর এলাকা থেকে যুব মহিলা লীগের নেত্রী সেলিনা পাটওয়ারী বিরুদ্ধে বিধবা, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ভাতার কার্ড দেয়ার কথা বলে টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত চার মাস আগে ওই যুব মহিলা লীগের নেত্রী ভাতার কার্ড পাইয়ে দেয়ার কথা বলে প্রায় ৩০ জন অসহায় নারী-পুরুষের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। কার্ড না পাওয়ায় ২০ জন অসহায় সাধারণ মানুষ রবিবার (২ আগস্ট) গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এ অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত শাকচর মদিন উল্ল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের কেরানী আলমগীর মিয়া ও তার স্ত্রী সেলিনা পাটওয়ারীসহ ভাতা কার্ড পাইয়ে দেয়ার কথা বলে চার মাস আগে ভবনীগঞ্জ, টুমচর ও পৌর শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের গ্রামের ৩০ অসহায় নারী-পুরুষের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে নেন। এদের অনেকেই মাটি কাটার শ্রমিক ও ভিক্ষুক। এদের মধ্যে কয়েকজন সুদে টাকা এনে সেলিনাকে দিয়েছেন। বিধবা, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ভাতা দেয়া শেষ? যারা পাওয়ার তারা সরকারিভাবে উন্মমুক্ত যাচাই-বাচাইয়ে পেয়েছেন। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কেউ পায়নি এবং তাদের টাকাও ফেরত দেয়নি।
এদিকে কমলনগর উপজেলার সুমন মাহমুদ নামে একজনের হাত ধরে টাকা নিয়ে পূর্বের স্বামীকে রেখে সে পালিয়ে যায়। সুমন ঢাকায় বিমানবন্দর ফোর্টের পিয়ন হিসেবে কর্মর্রত রযেছে এমনে দাবি করেন তার স্বামী আলমগীর। এ নিয়ে ইউনিয়ন ও পৌর বাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া ২০২০ সালের মে মাসে ত্রাণ দেয়ার নাম করে প্রায় ২০০ পরিবার থেকে ১০০ টাকা করে ২০ হাজার টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। যুব মহিলা লীগের এ নেত্রীর বিরুদ্ধে। তিনি শাকচর মদিন উল্ল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের কেরানী মো:আলমগীর মিয়ার স্ত্রী।
ভুক্তভোগী পৌর সমসেরাবাদ গ্রামের রিক্সা চালক সফিক উল্ল্যাহ বলেন, আমি রাস্তায় রিক্সা চালাই। অটো চালক রাসেলে স্ত্রী জেসমিন বলেন, স্বর্ণ বন্ধক দিয়ে ৫ হাজার টাকা দিয়েছি। মৃত আবুল কালামের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষা করেন। মৃত খোকার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, আব্দুর রেজ্জাকের স্ত্রী সহিদা বেগম, নাছরিন আক্তার বলেন,আমি দার কর্জ করে টাকা দিয়েছি বিধবা ভাতার কার্ড পাওয়ার আসায়।
এ ছাড়া মৃত আবুল কালাম হোরোনের স্ত্রী মৃত কালা মিয়ার স্ত্রী বাদশা মিয়া, শামীম, দোকানদার মনা বলেন, হাঁস, মুরগী বিক্রি করে প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ভাতার জন্য সেলিনাকে দিয়েছি। তিনি কাগজ একটি ধরিয়ে দিয়ে বলেন, ভাতা পাবেন কিন্তু ভাতার টাকা দেয়া শেষ হয়ে গেছে এখন পর্যন্ত কোনো টাকা পায়নি।
টুমচর ইউনিয়নের রৌশন আরা বেগম, ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের আবদুল্যাহ পুর গ্রামের মনছুর আহম্মদ, শিরীন আক্তার, খতিজা বেগম বলেন, প্রতিবন্ধী-বয়স্ক ও বিধবা ভাতার কার্ড পাওয়ার আসায় তারা প্রত্যেকেই প্রতি মাসে ৩শ টাকা সুদে ৫ হাজার টাকা করে দিয়েছেন। অন্যের বাড়ি কাজ করে প্রতি মাসে ৩শ টাকা করে সুদের প্রায় ৯ হাজার টাকা টাকা পরিশোধ করেছেন। কিন্তু তাদের নামে কোন কার্ড দেওয়া হয়নি। কার্ড না পেয়ে চার মাস অপেক্ষার পর রবিবার সকালে ২০ জন অসহায় নারী পুরুষ সাংবাদিকদের জানিয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত যুব মহিলা লীগের নেত্রী জানায়, আমি কারো কাছ থেকে ভাতার কার্ডের কথা বলে কোনো টাকা নিয়েছি কেউ এমন প্রমাণ দিতে পারবেন না। নতুন করে বিয়ে কথা বললে তিনি বলেন সম্পর্ক থাকতেই পারে।
অপর দিকে তার পূর্বের স্বামী আলমগীর বলেন, আমার সাথে তার ঝগড়া হয়েছে, তার সাথে সুমন নামে একজনের সাথে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ রয়েছে। নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে আমাকে তালাক দিতে হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিদোয়ান আরমান শাকিক সঙ্গে কথা হলে তিনি বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন।