প্রকাশিত: 04/08/2020
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অভাবে সরকারি নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে প্রকাশ্যে চলছে প্রাইভেট সেন্টার। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
করোনা সংক্রমণের হাত থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় গত মার্চ মাস থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টারসহ প্রাইভেট সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার সরকারি নিদের্শনা থাকলেও এই নির্দেশনা মানছেন সরকারি ও এমপিও ভুক্ত কলেজসহ মাদ্রাসার বেশকিছু অর্থলোভি শিক্ষক। এইসব শিক্ষক প্রাইভেট সেন্টর খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলছেন। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সদ্য পাস করা শিক্ষার্থীরা আগেভাবে বিষয় কোর্স শেষ করার জন্য ঝুঁকে পড়ছে ভাইভেট সেন্টারের দিকে।
জানা যায়, ফুলবাড়ী দারুস সুন্নাহ সিদ্দিকীয় মাদ্রাসা গণিত শিক্ষক মো. সবুজ মাদ্রাসা সংলগ্ন তার প্রাইভেট সেন্টারে সকাল ৭ থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত তিন ব্যাচে গণিত প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। এতে করে সপ্তাহে তিনদিন মাসে ১২ দিন পড়িয়ে জনপ্রতি নিচ্ছেন এক হাজার টাকা। একই মাদ্রাসার পদার্থ বিদ্যার শিক্ষক মোহাম্মদ আলী একই কায়দায় পড়াচ্ছেন পদার্থ বিদ্যা। রসায়ন শাস্ত্র পড়াচ্ছেন একই মাদ্রাসার শিক্ষক লিটন। তিনি পশ্চিম গৌরীপাড়া গড় ইসলামপুর এলাকার নিজ বাড়ীতেই প্রাইভেট সেন্টার খুলে বসেছেন। এছাড়াও পৌর এলাকার মাদ্রাাসা রোড, সুজাপুর সুরেশ পাবলিক লাইব্রেবি এলাকায়, সুজাপুর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায়, টিটি মোড় এলাকা, প্রফেসরপাড়া, কাঁটাবাড়ী বাংলা স্কুল এলাকায় বেশ কয়েকজন স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক প্রাইভেট পড়াচ্ছেন প্রকাশ্যে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসএসসি পাশ করা এক শিক্ষার্থী জানায়, সহপাঠিরা উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) শ্রেণির ইংরেজি, গণিত, পদার্থ, রসায়ন বিষয়ের কোর্স আগেভাবে শেষ করতে বিভিন্ন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়া শুরু করছে। বিষয়টি জানার পর সেও সহপাঠিদের সাথে যোগ দিয়ে প্রাইভেট পড়ছে।
অভিভাবক চন্দ্রনাথ জানান, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজনদারী না থাকায় কতিপয় শিক্ষক প্রাইভেট সেন্টার খুলে ঘেঁষাঘেঁষি করে বসিয়ে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। এতে কোভিড-১৯ সংক্রমণসহ মৃত্যুর ঝুঁকিতে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ মো. জিল্লুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারি নিদের্শনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হাসানুল হোসেন বলেন, অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। সকলকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সতর্ক থাকবে হবে। কোন অবস্থাতেই ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে কোন প্রকার কার্যক্রম করা যাবে না। যদি এমন কার্যক্রম করা হয় তবে সেখানে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কানিজ আফরোজ বলেন, সরকারি নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।