প্রকাশিত: 23/08/2020
রামগতি-কমলনগর লক্ষীপুরজেলার উপকূলীয় এলাকা । লক্ষীপুর-৪ (রামগতি- কমলনগর) এ দু’উপজেলার মেঘনার ভাঙন নিত্য দিনের ঘঠনা। তার সাথে যোগ হয়েছে বৈশ্বিক মহামারি করোনা।
সম্প্রতি নতুন করে এ দু’উপজেলায় পূর্ণিমা ও আমাবস্যার প্রভাবে দফায় দফায় মেঘনা নদীর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে ওই এলাকার কৃষকের ফসল, ঘেরের মাছ, খামারের হাঁস-মুরগী ও গবাদি পশু এবং বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ২০ সহস্রাধিক কাঁচা ঘর-বাড়ি।
জোয়ারের তীব্র স্রোতে কমলনগর উপজেলায় দু’টি ব্রিজ বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু বিপদ মুহূর্তে স্থানীয় সাংসদ ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব:) আব্দুল মান্নান মানুষের পাশে নেই।
গত এক বছরে রামগতি-কমলনগরে না আসা এবং মানুষের দু:খ-দুর্দশার কোন খোঁজ খবর না নেওয়ায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আবার তার দলের গুটি কয়েক নেতা কর্মী দাবি করছেন দুর্যোগ মুহূর্তে প্রতিনিয়ত তিনি মানুষের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।
তিনি বয়স্ক হওয়াতে হয়ত সব সময় এলাকায় আসতে পারছেন না। আবার করোনার কারণে তিনি কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন বলেও তার দলের নেতা-কর্মীরা দাবি করছেন। জানা যায়, এ দু’উপজেলার মেঘনার ভাঙন দীর্ঘ দিনের।
তিনি এমপি হওয়ার পর প্রথম প্রথম কয়েকবার মেঘনার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসে বলছেন,‘আর এক ইঞ্চি জায়গাও ভাঙতে দেওয়া হবে না’ কিন্তু তাঁর এ বক্তব্যের পরও কয়েক মাইল নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মেঘনার ভাঙন ঠেকাতে এখন পর্যন্ত জরুরী কোন পদক্ষেপ নিতে পারেননি এবং এক ইঞ্চি জায়গাও রক্ষা করতে পারেননি তিনি।
শুধু পানি উন্নয়ন বোর্ডের আপদকালীন বরাদ্দে কিছু কিছু স্পটে জিও ব্যাগ ও জিও টিউবে ডাম্পিং করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এই সব প্রকল্পকে লুটপাটের প্রকল্প বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ।
বাংলাদেশে যখন করোনার প্রাদূর্ভাব দেখা দেয় তখন দল ও তাঁর প্রতিনিধি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন মাষ্টারের মাধ্যমে তিনি এলাকায় অসহায় লোকদের কিছু খাদ্য সহায়তা করেছেন। কিন্তু তার পর থেকে আর কোন খোজ খবর নেই বলে সাধারণ মানুষ দাবি করছেন।
সম্প্রতি দফায় দফায় মেঘনার জোয়ারের পানি উটে দু’উপজেলার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এ দুর্যোগ মুহূর্তে স্থানীয় সাংসদ মেজর (অব:) আব্দুল মান্নানকে মানুষ কাছে পায়নি। তাঁর এ অনুপস্থিতিতে এলাকার মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
কমলনগর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও চরলরেন্স ইউপি চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ হিরণ জানান, কমলনগর-রামগতির প্রধান সমস্যা নদী ভাঙন। বিপদ মুহূর্তে এমপি সাহেবকে ফোন করলেও পাওয়া যায়না। এলাকার কোন বিষয়ে তার কথা বলার কোন সুযোগ পাই না।
তাছাড়া ওনিতো জনগনের এমপি তার এ সব কর্মকান্ডে তিনি জনগনকে সঠিক জবাব দেবে বা জনগন তার কাছে জবাব চাক। এ বিষয়ে জানতে বিকল্পধারা বাংলাদেশের কমলনগর উপজেলা আহবায়ক মোহাম্মদ উল্যাহ জানান, মান্নান সাহেব প্রতিনিয়ত এলাকার মানুষের খোঁজ-খবর আমাদের মাধ্যমে নিচ্ছেন। এ বিপদ মুহূর্তে আমরা সব সময় এমপি সাহেবকে নিয়ে মানুষের পাশে আছি।
স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন মাষ্টার জানান, মেজর মান্নান সাহেবকে আমরা প্রতিনিয়ত এ এলাকার মানুষের দু:খ-দুর্দশার কথা জানাচ্ছি। ওনি সব সময় আন্তরিকভাবে মানুষের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছেন করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষীপুর-৪ (কমলনগর-রামগতি) আসনের সংসদ সদস্য ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব:) আব্দুল মান্নান জানান, তিনি এলাকায় না গেলেও তার লোকজনতো রয়েছে। তার লোক জন সব সময় মানুষের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছে।
সম্প্রতি জোয়ারে পানির স্রোতে কমলনগর উপজেলার দু’টি ব্রিজ বিধ্বস্ত হওয়ার খবর তিনি শুনেছেন এবং দ্রুত ব্রিজ দু’টি নির্মাণে চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে নির্দেশ দিয়েছেন। আর নদী ভাঙন বিষয়ে তিনি জানান, খুব শীঘ্রই পানি সম্পদ মন্ত্রীর সাথে কথা বলে তাকে নিয়ে এলাকায় সফর করবেন। নদীভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান করার চেষ্টা তার অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি আরো জানান।