প্রকাশিত: 27/08/2020
কক্সবাজার জেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি চৌকষ দক্ষ টিম জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে মাঠ পর্যায়ে। লকডাউন শিথিল হওয়ার পর অধিকাংশ মানুষের মাঝে স্বাস্থ্য নির্দেশনা পালনে অনিহা দেখা দিয়েছে। তাই স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নে কঠোর হয়েছে জেলা প্রশাসন।
এ লক্ষ্যে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন স্থানে নির্বাহী ম্যাজিস্টেট দ্বারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযানে শুধু স্বাস্থ্যবিধির পাশাপাশিও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ নানান অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সড়ক পরিবহন আইন সম্পর্কে জনসচেতনতায় লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া রাস্তায় চলাচলকারী জনগণকে মাস্ক পরতে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে প্রদান করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা।
মঙ্গলবার (২৫ আগষ্ট) সকালে শহরের লাবনী পয়েন্ট, বাজারঘাটা ও বৌদ্ধ মন্দির রোডে নির্বাহী ম্যাজিস্টে সাদিয়া ইসলামের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করায় ৮টি মামলায় ৫৫০০ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। বিকেলে নির্বাহী ম্যাজিস্টেট মেহেরুন্নাহারের নেতৃত্বে বড় বাজার, লালদিঘির পাড়, পান বাজার সড়ক ও বিভিন্ন মার্কেটে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এ সময় ৯টি মামলায় ৫০০০ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।
এছাড়া গত সোমবার স্বাস্থ্যবিধি না মানা, অবৈধ পার্কিং, রুট পারমিট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় গণপরিবহণসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে ৩১ হাজার ৮০০ জরিমানা করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে সকাল ও বিকালে জেলা প্রশানের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লাভলী ইয়াসমিনের নেতৃত্বে পরিচালিত মোবাইল কোর্টে এই জরিমান করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লাভলী ইয়াসমিন বলেন, কলাতলী ডলফিন মোড়ে আনসার বাহিনীর সহযোগিতায় সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ অনুযায়ী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এ সময় অবৈধ পার্কিং, রুট পারমিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করায় ৫ টি মামলায় ২৭ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।
এসময় সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ মেনে নিরাপদ যাত্রী পরিবহনে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা হয়। বিকেলে পৌরসভা এলাকায় সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ অনুযায়ী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করায় ৬টি মামলায় ২ হাজার ৫০০ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।
পাশাপাশি সৈকতের কলাতলী পয়েন্টে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে ৯টি মামলায় ২ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় ২জন ক্যামেরাম্যানের ক্যামেরা জব্দ করা হয়। সার্বিকভাবে মাস্ক ছাড়া চলাচলকারী জনগণকে মাস্ক পরতে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
পর্যটন সেক্টর খোলার পর পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী বীচ পয়েন্টসহ বীচ সংলগ্ন ঝিনুক মার্কেট এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য পর্যটকের জন্য নির্দেশিকা” বিতরণ করা। এসময় স্বাস্থ্য নির্দেশনা যথাযথভাবে পালনের জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়। সৈকত এলাকাসহ হোটেল-মোটেল জোনে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করায় সিনিয়র সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দীপংকর তংচইঙ্গার নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১২ টি মামলায় ২০ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘কোভিড-১৯’ করোনা ভাইরাস রোধে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। জনসাধারণের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি মানার মানসিকতা তৈরিতে প্রতিদিন উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। পরিচালিত হচ্ছে মোবাইল কোর্ট। সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ কমিয়ে আনতে হবে। নতুবা এটি ভয়বহতায় রূপ নেবে।