কুলিয়ারচরে ভুয়া কাজী হাবিব উল্লাহর দৌরাত্বে বাল্যবিয়ে বেড়েই চলেছে

প্রকাশিত: 29/08/2020

নিজস্ব প্রতিবেদন :

কুলিয়ারচরে ভুয়া কাজী হাবিব উল্লাহর দৌরাত্বে বাল্যবিয়ে বেড়েই চলেছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নে ভুয়া কাজী হাবিব উল্লাহর দৌরাত্বে কিছুতেই বাল্য বিয়ে বেড়েই চলছে। কাজী না হয়েও হাবিব উল্লাহ নিজেকে কাজী পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত নকল বইয়ে বিয়ে নিবন্ধন করে আসছে। এতে করে একদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে বাল্য বিয়ে বেড়েই চলেছে। এবিষয়ে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী র্কমর্কতার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। জানা যায়, হাবিব উল্লাহ একই ইউনিয়নের আলী নগর গ্রামের মৃত আলিম উদ্দিনের ছেলে।
তার বিরুদ্ধে ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে বাল্য বিয়ে, ভুয়া বিয়ে, কন্টাক্ট বিয়ে নিবন্ধনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অপর্কমের সহযোগিতা করছে এলাকার কিছু সুযোগ সন্ধানী প্রভাবশালী মহল। সম্প্রতি গত ২৩ই আগস্ট রবিবার আলালপুর গ্রামের আয়াত আলী মেম্বার বাড়ির মোঃ বাচ্চু মিয়ার মেয়ে রুকসানা আক্তারের বিয়ে নিবন্ধন করতে গেলে সেখানে ফরিদপুর ইউনিয়নের সরকারি নিয়োগ প্রাপ্ত কাজীও উপস্থিত হন। এতে করে দুজনের মধ্যে অনেক কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ভূয়া কাজী হাবিব উল্লাহর লোকজন আর বিয়ে নিবন্ধন করবে না মর্মে আজকের বিয়েটি নিবন্ধনের অনুরোধ করলে তিনি চলে আসেন।
এছাড়াও সম্প্রতি অনেক গুলো বাল্য বিয়ে নিবন্ধন করেছেন হাবিব উল্লাহ এর মধ্যে গত ১৭ই আগস্ট২০২০ইং (সোমবার) খিদিরপুর গ্রামের করিম মাস্টারের বাড়ি সংলগ্ন মোঃ বাচ্চু মিয়ার ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী সুর্বণা আক্তারের বাল্য বিয়ে নিবন্ধন করেন। এসময় স্থানীয় ৯নং ওর্য়াড়ের গ্রাম পুলিশ মোঃ সাদেক মিয়া ভুয়া কাজী হাবিব উল্লাহকে বিয়ে পড়াতে বাধা দিলেও সে তা শুনেনি। এছাড়াও গত ১৭ই নভেম্বর ২০১৯ইং তারিখে চর পাড়া গ্রামের মোঃ ফারুক মিয়ার মেয়ে ও আব্দুল হামিদ ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী রোল নং ৩৪ সুমাইয়া আক্তার। ১৭ই মার্চ ২০১৯ নাপিতের চর গ্রামের টেকের বাড়ির পশ্চিম পাশের মোঃ জমশেদ মিয়ার মেয়ে ও আব্দুল হামিদ ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী রোল নং ০৭ নুসরাত আক্তার শিমলা এর বাল্য বিয়ে নিবন্ধনসহ প্রায় তিন শতাধিক বাল্য বিয়ে নিবন্ধনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এছাড়াও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভুয়া কাজী হাবিব উল্লাহর বিবাহ নিবন্ধন করার কোন লাইসেন্স না থাকলেও তিনি ইউনিয়ন জুড়ে বাল্য বিবাহ নিবন্ধন করেন। তিনি অন্য ইউনিয়নের কাজিদের কাছ থেকে নিকাহ নিবন্ধন বই এনে বিয়ে নিবন্ধন করছে। সরকার প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে কাজী নিয়োগ করেছেন। নিয়োগ কৃত কাজীগন নিজ নিজ ইউনিয়নে বিয়ে নিবন্ধন করার কথা থাকলেও কিছু অসাধু কাজীগন বিভিন্ন ইউনিয়নে বিভিন্ন লোকজন দিয়ে বিবাহ নিবন্ধন করে থাকে এতে করে বাল্য বিয়ের হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। পাশ্ববর্তী ইউনিয়ন থেকে বই এনে নিজেকে ফরিদপুর ইউনিয়নের কাজী পরিচয় দিয়ে আইনের তোয়াক্কা না করে বাল্য বিবাহ নিবন্ধন করে আসছে। 
ফরিদপুর ইউনিয়নের সরকারি নিয়োগ প্রাপ্ত কাজী বলেন, সরকার প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে কাজী নিয়োগ দিয়েছে। আমি ফরিদপুর ইউনিয়নের নিয়োগ প্রাপ্ত কাজী। কিন্তু হাবিব উল্লাহ র্দীঘদিন থেকে এলাকায় নিজেকে কাজী পরিচয় দিয়ে গোপনে নকল বইয়ে বাল্য বিয়ে নিবন্ধন করে আসছে। বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী র্কমর্কতার কাছে লিখিত অভিযোগ করি তবে এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকার পাইনি। উক্ত বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বলেন, আমি বিষয়টি এই মাত্র জানতে পারলাম । নতুন করে একটি অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইন গত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
 

আরও পড়ুন

×