প্রকাশিত: 13/09/2020
অবৈধ ভুয়া দলিল, খাজনার চেক তৈরি করে ভুয়া দাতাকে রেজিষ্ট্রেরি দেওয়ার চেষ্টায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দলিল লেখক রবিউল ইসলামকে (সনদ নং-১৫৪) তার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম।
গত ৭ সেপ্টেম্বর জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নোটিশ প্রকাশের মাধ্যমে পববর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দলিল লেখা/মুসাবিদার কাজ থেকে দলিল লেখক রবিউল ইসলামকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়ে তার সকল কার্যক্রম স্থগিত করেছেন ওই সাব রেজিষ্ট্রার।
দিনাজপুর জেলা রেজিষ্ট্রারের ভুক্তভোগী বুদা চন্দ্রসহ সাতজনের দাখিলকৃত লিখিত অভিযোগে জানা যায়, বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিলকারী বুদা চন্দ্রসহ সাতজন অভিযো, ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের আলাদীপুর মৌজার ১৮৫ খতিয়ানের বিভিন্ন দাগের ২.৮ একর সম্পত্তির অবৈধ ভুয়া দলিল, খাজনার চেক তৈরি করে ভুয়া দাতা হিসেবে দিনাজপুর সদর উপজেলার যোগীবাড়ী গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে কুদরত-ই-খুদার নামে ফুলবাড়ী সাব রেজিষ্ট্রারের কাছে কবলা রেজিষ্ট্রেরির জন্য দলিল দাখিল করেন ওই দলিল লেখক। কাগজপত্রে গড়মিল থাকায় রেজিষ্ট্রি না করেই রেখে দেন সাব রেজিষ্ট্রার মনিরুল ইসলাম।
বিষয়টি জানতে পেয়ে ওই দাগের সম্পত্তির মূল স্বত্ত¡াধিকারী বুদা চন্দ্রসহ সাতজন গত ২৩ জুলাই দিনাজপুর জেলা রেজিষ্ট্রারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৮ জুলাই তারিখে ফুলবাড়ী সাব-রেজিষ্ট্রার ৩৪৮ (১১) স্মারকে নোটিশ জারি করে গত ৯ আগস্ট যাবতীয় কাগজপত্র নিয়ে উভয়পক্ষেকে নিজ কার্যালয়ে ডাকেন ফুলবাড়ী সাব-রেজিষ্ট্রার মনিরুল ইসলাম। ওইদিন অভিযুক্ত দলিল লেখক রবিউল ইসলাম চৌধুরী সাব রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়ে হাজির হলেও ভুয়া দাতা কুদরত-ই-খুদা উপস্থিত হননি এবং কোনপ্রকার কাগজপত্র দেখাতে পারেননি ওই দলিল লেখক। ওই সম্পত্তির মূল স্বত্ত¡াধিকারী সাব রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়ে হাজির হয়ে যাবতীয় কাগজপত্র লিখিতভাবে ভাবে দাখিল করেন।
পরে গত ৭ সেপ্টেম্বর ফুলবাড়ী সাব রেজিষ্ট্রার তাঁর দফতরের দলিল লেখক ও জনসাধারণের অবগতির জন্য একটি নোটিশ প্রদান করেন। সে নোটিশে লিখা আছে, জেলা সাব রেজিষ্ট্রার গত ৬ সেপ্টেম্বর ৬৯৯ নং স্মারকে ফুলবাড়ী সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক মো. রবিউল ইসলাম চৌধুরী, যার সনদ নং-১৫৪। তাকে পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত দলিল লেখা/মুসাবিদার কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী সাব রেজিষ্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, জেলা রেজিষ্ট্রারের নির্দেশনায় দলিল লেখক রবিউল ইসলাম চৌধুরীকে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত তার কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
দলিল লেখক মো. রবিউল ইসলাম চৌধুরীর সাথে এ বিষয়ে তার মুঠোফোনে (০১৭২৮-১৫০৮৮৭ নম্বরে) কথা বললে তিনি বলেন, এ বিষয়ে পরে কথা হবে।
উল্লেখ্য, উপজেলার কতিপয় দলিল লেখকরা অবৈধভাবে ভুয়া দলিল, খাজনা-খারিজ দিয়ে প্রতারণা চালিয়ে আসছে। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ষ্ট্যাম্প বিক্রির দোকানে অভিযান চালিয়ে শতাধিক জাল দলিল ও দুই শতাধিক সিল উদ্ধারসহ তিনজনকে আটক করে জেল-জরিমানা করেছিল প্রশাসন।