প্রকাশিত: 19/09/2020
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের পর ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক করা নিয়ে সৌদি আরবের যুবরাজ ও বাদশাহর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে বলে জানা যায়। গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এ প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চান সৌদি যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান। কিন্তু যুবরাজের এ সিদ্ধান্তের প্রচণ্ড বিরোধিতা করেন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ।
এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যস্থতায় ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউজে অনুষ্ঠিত ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাত ও বাহরাইনের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয়। জার্নালটি জানায়, ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করা নিয়ে রাজপরিবারের চলছে তুমুল দ্বন্দ্ব।
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের দাবীতে দীর্ঘকাল ইসরায়েলের ওপর অবরোধ আরোপ করে আছেন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ। কিন্তু যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত বন্ধ করে ইরানের বিরুদ্ধে একক শক্তি গঠন করতে আগ্রহী সৌদি যুবরাজ।
জার্নালটি আরো জানায়, গত ১৩ আগস্ট ইসরায়েলের সঙ্গে আরব আমিরাতের আকস্মিক স্বাভাবিক সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার খবর শুনে বেশ অবাক হোন সৌদি বাদশাহ সালমান। কারণ তখন তিনি অবকাশ যাপনে ছিলেন। এবং যুবরাজ তাঁর কাছে আবুধাবি ও তেলআবিবের মধ্যে সম্পূর্ণ চুক্তি খবর আগে পৌঁছাননি।
খবরে বলা হয়, মুহাম্মাদ বিন সালমান পিতার বিরোধিতা আশঙ্কা করেছিলেন।
এমনকি তিনি ওই সময় বিষয়টি জানতে পারলে এতো সহজেই ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাত কখনও সম্পর্ক চুক্তি সম্পন্ন হত না। আর এ কারণেই আমিরাত-ইসরায়েল চুক্তির ঘোষণার পর সৌদি বাদশাহ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহানের মাধ্যমে স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠায় সৌদি আরব পাশে থাকবে বলে ঘোষণা দেন।
এছাড়া স্বাভাবিক সম্পর্ক ঘোষণার পর রাজপরিবারের একজন সদস্য সৌদির রাষ্ট্রয়াত্ত¡ এক পত্রিকায় সৌদি আরবের অবস্থান ফের সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন। ওই লেখায় আরো বেশি ছাড় দিতে ইসরায়েলকে চাপ দেওয়ার জন্য আরব আমিরাতের প্রতি আহ্বান করা হয়।
স্ট্রিট জার্নাল জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা জ্যারেদ কুশনারের সঙ্গে বৈঠককালে সৌদি যুবরাজ বলেন, তার বাবা কখনও ‘ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরব স্বাভাবিক সম্পর্ক মেনে নেবে না।’ সৌদি যুবরাজ আরও বলেন, ‘তবে বাদশাহর বিরোধিতার কারণে বর্তমানে সৌদি এতটুকু করতে পারে, ইসরায়েলের সঙ্গে বাহরাইনের স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ায় সৌদি সহায়তা করবে।’
উল্লেখ্য, গত ১৩ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে আরব আমিরাত পূর্ণ স্বাভাবিক সম্পর্কের ঘোষণা দেয়। এরপর ১১ সেপ্টেম্বর বাহরাইনও ইসরায়েলও স্বাভাবিক সম্পর্কের ঘোষণা দেয়। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাত ও বাহরাইনের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।