প্রকাশিত: 01/10/2020
বিলিয়নিয়ার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার ঘটনা নিয়ে সারা বিশ্বে বিবেকসম্পন্ন মানুষ যখন হতভম্ব, ঠিক তখনি অবাক করা তথ্য দিলেন একসময় ট্রাম্পের গোল্ফ ক্লাবের বাবুর্চি জেসাস লিরা।
অভিবাসনের মর্যাদা নেই (অবৈধ অভিবাসী) মেক্সিকান লিরার। ট্রাম্পের অধীনে কাজের সময় পাওয়া বেতন বাবদ বার্ষিক যে ট্যাক্স লিরা দিয়েছেন সেটিও ট্রাম্পের দেয়া বার্ষিক ৭৫০ ডলারের বেশী।
ফেডারেল ইনকাম ট্যাক্স প্রদানে ট্রাম্পের এই ভানুমতির খেল লিরাকেও বিস্ময়ে হতবাক করেছে বলে বুধবার জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যমকে। এমনকি লিরার ট্যাক্স রিটার্নের নথিও (ডব্লিউ টু) নিউইয়র্কের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দৈনিক ‘ডেইলি নিউজ’ প্রকাশ করেছে।
নিউইয়র্কের ওয়েস্টচেস্টার কাউন্টি গোল্ফ ক্লাবের সাবেক এই বাবুর্চি লিরা প্রচন্ড ক্ষোভ আর হতাশার সাথে বলেন, আমি বুঝে উঠতে পারছি না আমার সাবেক বস কীভাবে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। এটি কীভাবে সম্ভব?
গত রবিবার নিউইয়র্ক টাইমস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ট্যাক্স ফাঁকির চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ট্রাম্প মাত্র ৭৫০ ডলারের ট্যাক্স দিয়েছেন এবং গত ১৫ বছরের মধ্যে ১০ বছরই এক পেনীও তিনি ট্যাক্স হিসেবে দেননি। এ সংবাদ দেখে লিরার মত আরো কয়েকজন সাবেক কর্মচারি (যারা সকলেই অবৈধ অভিবাসী) তাদের হাজার হাজার ডলার বার্ষিক ট্যাক্স প্রদানের তথ্য গণমাধ্যমে সরবরাহ করেছেন।
এদেশে বসবাসের বৈধ অধিকার না থাকা সত্বেও তারা আয়ের বিপরীতে আইন অনুযায়ী ট্যাক্স দিয়েছেন ট্রাম্পের বাসায়/ক্লাবে কাজের সময়। অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পন্থা অবলম্বন করলেও ট্রাম্পের ফার্মে কর্মরতদের সিংহভাগই হচ্ছে অবৈধ অভিবাসী।
স্যান্দ্রা ডিয়াজ আরেকজন কর্মচারি অনুরূপ তথ্য সরবরাহ করে জানিয়েছেন, আমরা নিয়মিত ট্যাক্স দিয়েছি এবং এখনও দিচ্ছি। অথচ আমরা বৈধতা পাচ্ছি না যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের। স্যান্দ্রা উল্লেখ করেছেন, ট্রাম্পের বাসায়, হোটেল ও ক্লাবে অন্তত: ৩০ জন কর্মী ছিলেন যাদের ওয়ার্ক পারমিট নেই।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারের প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে ডেমক্র্যাট বাইডেনের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প সদম্ভে উল্লেখ করেন, তিনি নাকি শতশত মিলিয়ন ডলারের ট্যাক্স প্রদান করেন প্রতি বছরই। এই বক্তব্যের সমর্থনে ডক্যুমেন্ট প্রদর্শনের আহবান জানালে কৌশলে ট্রাম্প তা এড়িয়ে যান।
গোল্ফ ক্লাবের সাবেক কর্মচারিদের উপরোক্ত তথ্যের ভিত্তিতে হোয়াইট হাউজের মতামত জানতে চাইলে মুখপাত্র যুডডিয়ার সরাসরি বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে ই-মেইলে বুধবার বলেছেন, নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টগুলো ফেইক নিউজ। প্রেসিডেন্ট ট্যাক্স হিসেবে মিলিয়ন ডলার করে প্রদান করছেন।