প্রকাশিত: 03/10/2020
মিজানুর রহমান মিজান, সিলেট থেকে: সিলেটের বিশ্বনাথউপজেলার ০২নং খাজাঞ্চি ইউনিয়নের ইসলামপুর(কৃষ্ণপুর)গ্রামের ধর্ষণের ঘটনায় মামলার তদন্ত কাজ অব্যাহত রয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেল ৫ ঘটিকায় (২ অক্টোবর) বিশ্বনাথ থানার এসআই সঞ্জয় লাল দে সংঙ্গীয় ফোর্সসহ ধর্ষিতার বাড়িতে তদন্ত কাজে উপস্থিত হয়ে বাদী পক্ষের সংশ্লিষ্ট সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ ও আলামত সংগ্রহ করেন।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর মসজিদের ইমাম কর্তৃক বাক-প্রতিবন্ধী এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হন। এই ঘটনায় ধর্ষিতার বড় বোন দিলারা বেগম বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন।বিশ্বনাথ থানার মামলা নং-০১/২০২০ইং)। মামলায় ৬জনের নাম উল্লেখ করে ৩/৪ জনকে অজ্ঞাত করে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিুক্তরা হলেন: রুহুল আমিন শাহার (৩৫) নামের ইমাম।অভিযুক্ত প্রধান আসামীর স্থায়ী বাড়ী সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামে।সে আফজাল উদ্দিনের পুত্র।বাকি আসামীরা ধর্ষিতার নিজ গ্রামের আব্দুশ শহীদ, আব্দুর রাজ্জাক, চান্দ আলী, মখদ্দছ আলী, লিয়াকত আলী ও তাহির আলী ।
সরজমিনে ধর্ষিতার বাড়ি গিয়ে জানা জায়-ইমাম রুহুলআমিন দীর্ঘ ১৫ বছরযাবৎ ইসলামপুর গ্রামের আব্দুস শহীদের বাড়িতেলজিং থেকে জামেয়া ইসলামিয়াআব্বাসিয়া কৌড়িয়া মাদরাসায় লেখাপড়া শেষে ইসলামপুর জামেমসজিদে ইমামতি করতেন।আব্দুস শহীদের ঘরে গৃহকর্মীরকাজ করতেন বাক-প্রতিবন্ধী ঐ কিশোরী। আব্দুস শহীদের ঘরে লজিংয়ে থাকার সুবাধে গৃহকর্মীর উপর ইমামের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। এক পর্যায়ে গত মঙ্গলবার রাতেআব্দুস শহীদের বাড়ির পূর্ব পাশে আধাপাকা একটি ঘরে অর্থাৎ (যে ঘরে ইমাম থাকেন) ঐ ঘরে কিশোরীকে ইমাম কর্তৃক ধর্ষিত অবস্থায়পাওয়া যায়। এসময় মামলার সাক্ষীগন তাকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করেন।
এবিষয়ে ধর্ষিতার বড় বোন বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পর তাৎক্ষণিক থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষণে সহায়তা কারী হিসেবে ইসলামপুর (কৃষ্ণপুর) জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণসুনামগঞ্জ থানার চন্দ্রপুর গ্রামেরমাওলানা আরিফ উদ্দিনের ছেলেমাহফুজ বীন আরিফ (১৯), ইসলামপুর গ্রামের মুরব্বি মখদ্দছ আলী (৬৩) কে মামলার প্রধান আসামী রুহুল আমিন শাহার (৩৫) কে পালিয়ে যেতে সহায়তা করার অভিযোগে গ্রেফতার হন।আটক আসামীরা বর্তমানে জেল হাজতে আছেন। মামলার প্রধান আসামী রুহুলআমিন শাহার (৩৫) ও অন্যান্য আসামীরা এখনও পলাতক রয়েছেন।
উক্ত ঘটনার বাদী ধর্ষিতার বড়বোন দিলারা বেগম সংবাদ মাধ্যমকে কান্নাজড়িত কন্ঠে সুষ্ট বিচারের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে দ্রুত অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ধর্ষিতার চাচা হারুনুর রশিদ বলেন যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তারা ব্যতীত যেন নিরাপরাধ কেউ হয়রানীর শিকার না হয় এবং প্রকৃত অপরাধীরা গ্রেফতার হয় এই বিষয়টা যেন আইনশৃংখলা বাহিনী নজরে রাখেন।
এ ঘটনায় ধর্ষিত কিশোরী গতকাল (১ অক্টোবর) সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ধর্ষণের আলামত ও ডিএনএ পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্বনাথ থানার এসআই সঞ্জয় লাল দে। তিনি আরো বলেন, মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার সাথে সাথে আদালতে তা প্রেরণ করা হবে ।তিনি জানান মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।