প্রকাশিত: 03/10/2020
সৌদি আরবের অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও রাজ পরিবারের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত জামাল খাশোগিকে হত্যার দুই বছর পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তার লাশের খোঁজ মেলেনি।
২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন ভিন্ন মতাবলম্বী সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি। এ সময় বাইরে দাঁড়িয়েছিল তার তুর্কি বাগদত্তা হাতিসে সেনগিস।
শুক্রবার তার নিখোঁজের দুই বছর পূর্ণ হয়। এখনও সন্ধান মেলেনি তার। বাগদত্তাসহ খাশোগির পরিবারের অভিযোগ খাশোগিকে গুম করে খুন করা হয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষও বিষয়টি পরে স্বীকার করেছে। খবর আলজাজিরা ও আনাদোলুর।
জুরিখ ফিল্ম ফেস্টিভালে শুক্রবার জামাল খাশোগির ওপর নির্মিত একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। পুরষ্কারপ্রাপ্ত মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক ব্রায়ান ফজেল 'দ্যা ডিসেন্ট' নামে ওই প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করেন। প্রথম দিনেই এটি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের নজর কেড়ে নেয়। প্রদর্শনীর সব টিকিট বিক্রি হয়ে যায়।
এ সময় জামাল খাশোগির বাগদত্তা হাতিসে সেনগিস এবং জাতিসংঘের মানবতাবিরোধী অপরাধ বিষয়ক বিশেষ দূত অ্যাগনেস ক্যালামার্ডও উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেছিলেন খাশোগি। তার নিখোঁজ রহস্য নিয়ে বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হলে তাকে হত্যার কথা স্বীকার করে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
তাদের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় কর্মকর্তাদের ভুলে নিহত হন ওই সাংবাদিক। তবে তার মৃতদেহের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। সৌদি আরবের পাশাপাশি তুরস্ক আলাদাভাবে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গত জুলাইয়ে ২০ সৌদি নাগরিকের অনুপস্থিতিতে তাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করে তুর্কি আদালত।
তুর্কি প্রসিকিউটরদের দাবি, সৌদি উপ-গোয়েন্দা প্রধান আহমেদ আল আসিরি ও রাজকীয় আদালতের মিডিয়াবিষয়ক উপদেষ্টা সৌদ আল কাহতানি এ হত্যা অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সৌদি হিট টিমকে নির্দেশনা দিয়েছেন তারা।
গত মে মাসে খাশোগির সন্তানরা বলেছিলেন, তারা তাদের বাবার হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। এ কারণে হত্যাকারীদের কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে না। ৭ সেপ্টেম্বর খাশোগি হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া পাঁচজনের সাজা কমিয়ে দেয় সৌদি আদালত। তাদেরকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এছাড়া আরও তিন ব্যক্তিকে সাত থেকে দশ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত কারও নাম প্রকাশ করেনি সৌদি কর্তৃপক্ষ।