প্রকাশিত: 15/10/2020
জেনিয়া সোহানী খান বুলবুলি নামে এক নারী যাতায়াতের জন্য নিজের জমি প্রধানমস্ত্রীর নামে লিখে দিয়েছেন। অসহায় ভুমিহীন সংখ্যালঘুদের থাকার জন্য জমি দিয়েছেন। এলাকায় দানশীল নারী হিসেবে পরিচিতি তিনি। অথচ তাকেই এখন সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর দখলের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পুরনন্দপুর গ্রামের হালদারপাড়ায় এমন ঘটনায় গ্রামবাসি হতবাক হয়েছে। গ্রামবাসির ভাষ্যমতে পুরনন্দপুর গ্রামের মৃত শফি উদ্দিন খানের মেয়ে জেনিয়া সোহানী খান বুলবুলি পৈত্রিক এবং ক্রয় সুত্রে পাওয়া সম্পত্তির কিছু অংশ এলাকার জনগনের স্বার্থে রাস্তায় দান করেন।
সেই সাথে ১৫ বছর আগে ভারত থেকে আসা সেবা হালদার, দিলীপ হালদার ও শীতল হালদারদের ঘরবাড়ি বানানোর কোন থাকার জায়গা না থাকায় মানবিক কারনে তাদেরকে থাকার জন্য ১৪৪ নং পুন্দরপুর মৌজার ৩৬৫১ নং দাগে ১৭ শতক জমির মধ্যে উত্তর পাশে ১২ শতক জমিতে ঘর বানিয়ে দিয়ে থাকার অনুমতি দেন।
জেনিয়া সোহানী খান বুলবুলি জানান, পরবর্তীতে সেবা হালদার প্রায় তার মায়ের কাছে কান্নাকাটি করে জমি লিখে দিতে বলেন। ফলে মেজো ভাই ও মা ২০১৭ সালে ৩৬৫১ দাগের উত্তর পাশ উল্লেখ করে ১২ শতক জমি সেবা হালদার দিলীপ হালদানের নামে লিখে দেন। বাকী ৫ শতক তার নামে থাকে।
বড় ভাই ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে বুলবুলির নামে দক্ষিন পাশ উল্লেখ করে জমি লিখে দেয়। ১৯৯৮ সালে এই ৫ শতক জায়গাতে শিশু গাছ রোপন করে বাশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। পৈতিক সুত্র পাওয়া এবং ক্রয় কৃত সুত্রে এই বাগান এবং ৫ শতক জমির মালিক বুলবুলি নিজে।
২০১৮ সালে ২ মে দিলীপ হালদার এলাকার কিছু ভুমিদস্যু ও সন্ত্রাসীর সহযোগিতায় বুলবুলির শিশু বাগান কেটে ৫ শতক জমির উপর জোরপুর্বক টিনের ছাউনি দিয়ে ঘর তৈরি করে। খবর পেয়ে বুলবুলি ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে ২০১৮ সালের ৬ মে মহেশপুর থানায় একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ৮ মে থানা কর্তৃক নালিশী ঐ জমিতে সালিশ করে।
সালিশে উপস্থিত ছিলেন মহেশপুর থানার তৎকালীন ওসি, স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম হায়দার নান্টু, বাচ্চু মেম্বার. বাচ্চু খলিফা, সাজ্জাত ও হিন্দু সমাজের খুদিরাম, কালিচরন ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। শালিসে উপস্থিত গন্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে দখলদার দিলীপ হালদার ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত জমি খালি করার সময় নিয়েছিলেন।
সময় পার হয়ে গেলেও তিনি জমি খালি না করায় বুলবুলি মহেশপুর ইউ.এনও বরাবর ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রয়ারি অভিযোগ করলে ইউএনও ৮ মে নোটিশ প্রদান করেন। বুলবুলি নারী হয়েও পরপর দুই বার ঢাকা থেকে এসে শুনানীতে অংশ নিরেও দখলদার দিলীপ হালদারা উপস্থিত হয়নি। বুলবুলির অভিযোগ, দখলদার দিলীপ হালদার গংদের বৈধ কোন কাগজপত্র নেই।
এই জমি তার পৈত্রিক ও ক্রয়সুত্রে প্রাপ্ত। দিলীপ হালদারের পক্ষে কিছু লোভী মানুষ টাকা পয়সা খেয়ে বুলবুলির জমিতে অস্থায়ী ঘরবাড়ি করে দখল দেখানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। গ্রামবাসি জানান, এই জমি নিয়ে সংখ্যালঘুদের উচ্ছেদের কোন প্রশ্নই আসেনা। উদ্দেশ্যপ্রনোদিত হয়ে দিলীপ হালদারের পক্ষে কিছু ব্যক্তি মিথ্যাচার করে জনমনে বিভ্রান্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে গ্রামবাসির অভিযোগ।