সরকার ও কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে ডিজিটাল এম  এল এম ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত

সরকার ও কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে ডিজিটাল এম  এল এম ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত

২০০৯ - ২০১৫ সাল নাগাত নিয়ম কানুনকে তোয়াক্কা না করে কিছু অসাধু চক্র মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (MLM) ব্যবসা বানিজ্যের মাধ্যমে অসচেতন নাগরিকদের কাছ থেকে, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কৌশলে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এবং এটি অল্প পরিসরে কতৃপক্ষের নজর এড়িয়ে চলমান।

যারা এই সকল প্রতিষ্ঠানের লোভনীয় প্ররোচনায় পরে বিভিন্ন অংকের টাকা ইনভেস্ট করেছে তারা সবাই "৯০ শতাংশ নাগরিক" লছ করে হতাস হয়েছেন এবং বেশির ভাগ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যারা একটি পার্টটাইম কাজ করে অনেক টাকা কামিয়ে পরিবারের উপর লেখাপড়ার খরচের চাপ কমানোর বড় উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আর তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। 

এম এল এম ব্যবসায়ীরা তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে ও সুন্দর আকর্ষণীয় ওয়েবসাইট বানিয়ে লোভনীয় অফার দিয়ে মনগড়া নিয়ম বানিয়ে অসচেতন নাগরিকদের থেকে কৌশলে টাকা কামানোর ধান্দা করে থাকেন। কিছু অল্প সুনামধন্য এম এল এম কোম্পানি আছে যারা সব নিয়ম মেনে শর্ত সাপেক্ষে তাদের ব্যবসা বানিজ্য প্রসারিত করে থাকেন কিন্তু এই সুযোগে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অসাধু চক্রগুলো এই রকম বানিজ্যে চলে আসে।

এম এল এম ব্যবসার পদ্ধতি ও নিয়ম কানুন নির্ধারিত থাকলেও আইনের ও কতৃপক্ষের নজর এড়িয়ে "অনেক সময় দুর্নীতির মাধ্যমে" মনগড়া পরিকল্পনা বানিয়ে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ও আস্থার সাথে ধোঁকাবাজি করে কৌশলে টাকা কামানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকে। 

এটি একটি রেফারাল সিস্টেমের ব্যবসা যেখানে একজন নাগরিক ক্রেতা বা ভোক্তা হিসেবে টাকা ইনভেষ্টের মাধ্যমে শর্ত সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানের সাথে ব্যবসায়িক নিবন্ধন করবে এবং প্রাথমিক ভাবে কিছু লোভনীয় অফার বা সুবিধা পাবেন কিন্তু ধীরে ধীরে এক পর্যায়ে নিবন্ধনকৃত ক্রেতা ইনভেস্ট করা টাকার সম পরিমাণ আয় করতে ব্যর্থ হন।

অনেকে শর্তানুযায়ী যথাযথ কাজ করতে ব্যর্থ হয়ে হতাস হয়ে যান এবং কাজ ছেড়ে দিয়ে টাকা ফেরত চান যা আর সম্ভব হয়ে উঠে না। এই ব্যবসায় খুব অল্প নাগরিকরা সুবিধা করতে পারে যারা কথার মাধ্যমে যে কাউকে ভুলিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন এবং খুব চালাক প্রকৃতির মানুষ। 

উদাহরণ সরুপ, Needs IT, Dolencer, Novera Products, Unipay2U, etc. এবং এই জাতীয় প্রতিষ্ঠান সমূহ সাধারণ নাগরিকদের অংশগ্রহণ করিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। 

বর্তমানে কমপক্ষে দুই ডজন সংস্থা এই অবৈধ ব্যবসায় জড়িত। এর মধ্যে অনেকে ব্যবসা  অনলাইনে পরিচালনা করছে। এই সংস্থাগুলি মাঝে মধ্যে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে এবং লোকেদের উচ্চ বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রলুব্দ করে বিনিয়োগের সন্ধান করে। 

কিছু সংস্থাগুলি নির্দিষ্ট অঞ্চলগুলিকে টার্গেট করে এবং মানুষের অর্থ নিয়ে পালায়। দক্ষিণ-পশ্চিমে, বিশেষত খুলনা, কুষ্টিয়া, যশোর এবং সাতক্ষীরায়, এমএলএম ব্যবসা সাম্প্রতিক সময়ে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং হাজার হাজার মানুষ তাদের অর্থ হারিয়ে অভিযোগ করেছেন।

কিছু কিছু সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সজাগ হলেও শত শত ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি তাদের অর্থ ফেরত পাননি। অপরাধীদেরও বিচারের আওতায় আনা হয়নি।

সরকার প্যাকেজিংয়ের সাথে নির্দিষ্ট তথ্য ছাড়াই পিরামিড বিপণন ও পণ্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করেছে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পণ্য বা পরিষেবা বিক্রয় না করা, মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ২০১৩ পাস করে নিম্নমানের পণ্য বা পরিষেবাদি বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

শর্ত ও নিয়ম সত্ত্বেও নতুন এমএলএম সংস্থাগুলি অপরিকল্পিত ভাবে মনগড়া নিয়ম বানিয়ে ব্যবসা বানিজ্যের প্রসার ঘটাচ্ছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা এমএলএম ব্যবসা পরিচালিত সমস্ত সংস্থার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ জাতীয় প্রতারণা কোনওভাবেই চলতে দেয়া যেতে পারে না।


 

আরও পড়ুন

×