প্রকাশিত: 03/11/2020
নিজ দলের কর্মীকে হত্যাচেষ্টার আসামি ও বয়স উত্তীর্ণ ছাত্রকে সভাপতি করে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করার অভিযোগ উঠেছে। এ কমিটিকে অবৈধ ও সভাপতিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে শহরের বিভিন্ন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন পদবঞ্চিতরা।
সোমবার রাত ৮টার দিকে শহরের লালদিঘী এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা। জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পরপরই বঞ্চিতদের গ্রুপ বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং সড়কে অবরোধ করে। পরে পুলিশ এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের ১৪ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। কমিটিতে সাদ্দাম হোসেনকে সভাপতি এবং মারুফ আদনানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
সহ-সভাপতি করা হয়েছে- মইন উদ্দীন, কাউসার উল আলম মুন্না চৌধুরী, বোরহান উদ্দীন খোকন ও নারিমা জাহানকে। যুগ্ম-সম্পাদক করা হয়েছে- আনোয়ার হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন, সাজ্জাদুল হক, শওকত হোসেনকে। সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে- ওয়াসিফ কবির, কামরুজ্জামান হিরু, এহসানুল হক মিলন ও গাজী নাজমুল হককে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য আগামী এক বছরের জন্য নতুন কমিটি অনুমোদন দেয়া হলো।
ঘোষিত কমিটিতে প্রকৃত ছাত্র ও ত্যাগীদের বঞ্চিত করে বয়সোত্তীর্ণ ও অছাত্রদের পদ দেয়ার অভিযোগ তুলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ করছে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। তারা রাত ৮টার দিকে শহরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল এবং টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায়। এছাড়া সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয় কেন্দ্র ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে অবৈধ জানিয়ে এই কমিটিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে তার ফেসবুক পেজে বিবৃতি দিয়েছেন।
জানা যায়, সদ্য ঘোষিত ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ২০১৭ সালের ১৩ জানুয়ারি কক্সাবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকায় আরেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সল আবদুল্লাহ’র উপর সরাসরি গুলি করে হত্যাপ্রচেষ্টা চালায়। ওই ঘটনায় আবদুল্লাহর ভাই রেজাউল করিম বাদী হয়ে ১৪ জানুয়ারি সদর মডেল থানায় সাদ্দামকে আসামি করে মামলা করেন।
অন্যদিকে, সাদ্দাম হোসেনের জন্ম ২০/০৩/১৯৯১ সালে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ২৯ বছরের বেশি কেউ ছাত্রলীগের দায়িত্বে আসতে পারবে না। সাদ্দামের জন্ম তারিখ অনুযায়ী বর্তমান বয়স ২৯ বছর ৭ মাস ২২ দিন। যা গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন।
ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যা প্রচেষ্টার আসামি এবং বয়স উত্তীর্ণ ব্যক্তি কিভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা শাখার দায়িত্ব দেয়া হয়? বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগের ভেতরে-বাইরে নানা প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে। এছাড়া কমিটি গঠনে নানা ধরনের অনিয়মের কানা ঘোষা শুরু হয়েছে।