প্রকাশিত: 04/11/2020
লাদাখে ভারত-চীন সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যেই গতকাল থেকে বঙ্গোপসাগরে শুরু হলো মালাবার নৌ-মহড়া। ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে চতুর্দেশীয় অক্ষ বা ‘কোয়াড’-এর এই নৌ-মহড়ার প্রেক্ষাপটে বেইজিংয়ের প্রতি ‘বার্তা’ বলেই মনে করছেন সামরিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। এই নৌ-মহড়ার ব্যাপারে আগেই বিরোধিতা করেছিল চীন।
উন্মুক্ত এবং অবাধ সমুদ্র বাণিজ্য পথ তৈরিতে ‘কোয়াড’ ইতিমধ্যে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে আছে। ‘কোয়াড’-এর মোকাবিলায় পাল্টা জোট গঠনের তৎপরতাও শুরু হয়েছে বেইজিংয়ের তরফ থেকে। এই প্রেক্ষাপটে ১৩ বছর পর মালাবার নৌ-মহড়ায় অস্ট্রেলিয়ার অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ‘কোয়াড’-কে ‘ন্যাটো’র ধাঁচে সামরিক অবয়ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলো বলে মনে করা হচ্ছে।
অক্টোবর মাসের গোড়ায় টোকিওতে চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বিশেষ আলোচনা সভায় যোগ দেন। সেখানেই অস্ট্রেলিয়াকে মালাবার নৌ-মহড়ায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রসঙ্গ ওঠে। তাতে সব দেশ সম্মতি দেয়। এর পরে করোনা পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমেই সেসব নিয়ে আলোচনা চলছিল।
১৯৯২ সাল থেকে আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় মালাবার নৌ-মহড়া শুরু করেছিল ভারত। ২০০৭ সালে অস্থায়ী সদস্য হিসেবে যোগ দেয় অস্ট্রেলিয়া। সেবার জাপান এবং সিঙ্গাপুরকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু ওই দেশগুলো অংশগ্রহণ করার পর আপত্তি জানায় চীন। তার জেরে পরবর্তী প্রায় দুই দশক ধরে মালাবার দ্বিদেশীয় মহড়া হিসেবেই চলে আসছিল। কিন্তু দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আধিপত্য বাড়তে থাকায় ২০১৫ সালে জাপানকে মালাবার নৌ-মহড়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
২০১৭ সালে সেই ত্রিদেশীয় মহড়ায় পর্যবেক্ষক হিসেবে যোগ দিতে চেয়ে অনুরোধ জানায় অস্ট্রেলিয়া। চীনের আপত্তির কারণে প্রাথমিকভাবে এ নিয়ে দিল্লির তরফে দ্বিধা ছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভিডিও বৈঠকের পর জট কেটে যায়।
গৌতম লাহিড়ী, নয়াদিল্লি/উৎস:বাংলাদেশ প্রতিদিন