প্রকাশিত: 04/11/2020
এ কেমন বর্বর নিষ্ঠুরতা! শ্বশুরের সম্পত্তির লোভের দুই বছরের শিশুশ্যালক সোয়াতকে হত্যা চেষ্টা। শিশুটির শরীরের বেশিরভাগ অংশেই মারপিট, দাঁত দিয়ে কামড়ানোসহ সিগারেটের ছ্যাকা দেওয়ার জ্বলন্ত দাগ এঁকে দিয়েছে পাষÐ দুলাভাই সজল খাঁন।
এ ঘটনায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী থানায় গত মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মেয়ে জামাতা সজল খাঁনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন শিশুটির পিতা সো. বাবুল মÐল।
মামলা বাদী মো. বাবুল মন্ডল ফুলবাড়ী পৌর এলাকার দক্ষিণ কৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত কিনু মন্ডলের ছেলে।
মামলার এজাহারভুক্ত আসামীরা হলেন, ফুলবাড়ী উপজেলা পৌর এলাকার কাঁটাবাড়ী গ্রামের জামাল খাঁনের ছেলে সজল খাঁন (২৮), সজল খাঁনের পিতা জামাল খাঁন (৬০), জামাল খাঁনের স্ত্রী মোছা. শাহানা বেগম (৫৫) ও পশ্চিম গৌরীপাড়া (নিমতলা মোড়) গ্রামের মো. আরিফ খাঁনের স্ত্রী মোছা. ছালমা বেগম (৩০)।
থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাবুল মন্ডলের মেয়ে নিসাত তাছনিমের স্বামী সজল খাঁন দীর্ঘদিন থেকে শ্বশুরের সম্পত্তি তার স্ত্রীর (নিসাত তাছনিম) নামে লিখে দেওয়ার জন্য শ্বশুর বাবুল মন্ডলকে বিভিন্নভাবে চাপ দিয়ে আসছিল। কিন্তু এতে বাবুল হোসেন কোন কর্ণপাত না করায় সে বিভিন্নভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে ক্ষতিসাধণের হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই মধ্যে দীর্ঘ ১৮ বছর পর বাবুল মন্ডলের ছেলে সন্তান হওয়ার কারণে শ্বশুরের সম্পত্তি হাতছাড়া হয়ে যাবে এমন আশঙ্ক থেকে সজল খাঁন আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরই মধ্যে গত ৩১ অক্টোবর শ্বশুরকে নিজ বাড়ীতে দাওয়াত দেয়। শ্বশুর বাবুল মন্ডল তার একমাত্র পুত্রসন্তান সোয়াতকে (২) সাথে নিয়ে মেয়ের বাড়ীতে দাওয়াত খেতে যান। এ সময় ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে মেয়ে জামাতা সজল খাঁন তার শিশু শ্যালক সোয়াতকে বাড়ীর বাহিরে নিয়ে যায়। দুপুর দেড়টার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলার পৌর শহরের উত্তর সুজাপুর গ্রামের মনসুর আলীর ছেলে মুন্না ইসলাম ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ মাঠের পার্শ্বে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে যান। এ সময় ওই নির্জন এলাকায় শিশু বাচ্চার চিৎকারসহ কান্নাকাটি শুনতে পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাচ্চার কি হয়েছে জানতে চাওয়া মাত্র শিশু সোয়াতকে ফেলে সজল খাঁন পালিয়ে যায়। পরে মুন্না ইসলাম শিশু সোয়াতকে উদ্ধার করে সজল খাঁনের স্ত্রীকে ঘটনা জানায়। পরে ঘটনা জানতে পেরে বাবুল মন্ডল তার শিশুপুত্র সোয়াতকে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। শিশুটির শরীরের বেশিরভাগ অংশেই মারপিট, দাঁত দিয়ে কামড়ানোসহ সিগারেটের ছ্যাকা দেওয়ার জ্বলন্ত দাগ গোটা শরীরে ফুটে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে বাবুল মন্ডল সজল খাঁনের পরিবারের সাথে কথা বলার পরও ওই পরিবার থেকে কোন কর্ণপাত না করে উপরোন্ত তার ছেলে সোয়াতকে ভবিষ্যতে সময় ও সুযোগ পেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
থানার ওসি’র চলতি দায়িত্ব থাকা পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত বর্বরোচিত। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকেই এজাহারভুক্ত আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আরিফুজ্জামান অভিযান পরিচালনা করছেন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকেই গ্রেপ্তার করা যায়নি।