প্রকাশিত: 05/11/2020
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন তার নিজের ভাই ভাতিজাদের সরকারী ঘর করে দিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। ঘর প্রাপ্তরা দুঃস্থ বা হতদরিদ্র নন। রীতিমত প্রভাবশালী এবং বংশ মর্যাদা সম্পন্ন হিসেবে এলাকায় পরিচিত। খোদ চেয়ারম্যানের পৈত্রিক ভিটাই বাহারী রঙের সরকারী ঘর সবার নজর কেড়েছে। এ ধরণের তিনটি সরকারী ঘর তিনি তার নিজের পরিবারের মধ্যে তৈরী করে দিয়েছেন। পথচারিরা এই সরকারী ঘর দেখছেন ও নানা মন্তব্য করছেন। সরেজমিন দেখা গেছে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে টিআর-কাবিটা কর্মসূচির আওতায় দূর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের ২টি ও আগের বছরে জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের একটিসহ মোট ৩টি পাকা সরকারি ঘর নির্মিত হয়েছে শৈলকুপার হুদামাইলমারী গ্রামে। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মকবুল হোসেন তার বড় ভাই মৃত আজিবর মন্ডলের ছেলে নজরুল ইসলাম ও শামছুল ইসলাম এবং মেজো ভাই মোকাদ্দেস মন্ডলের ছেলে আমিরুল ইসলামের একটি পাকা ঘর করে দিয়েছেন। আপন ভাই ভাতিজার ভিটেয় সরকারি পাকা ঘর তুলে দেওয়ায় এলাকাজুড়ে চাপা ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার মাসুদ রানা নামে এক ব্যক্তি জানান, চেয়ারম্যানের ভাই ভাতিজাদের নামে সরকারি ঘর করে দিলেও ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেনা। গ্রামবাসি ভাষ্য আমিরুলের ছেলে ফিরোজুর রহমান গোপালগঞ্জ জেলায় কর্মরত কৃষিব্যাংকের কর্মকর্তা। তাছাড়া চেয়ারম্যান পরিবারে যথেষ্ট সম্পদ এবং প্রভাব প্রতিপত্তি রয়েছে। শেরপুর গ্রামের মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে নুর ইসলাম চুন্টু অভিযোগ করেন, তিনি প্রকৃত গৃহহীন হলেও একাধিকবার চেষ্টা করেও তিনি ঘর পান নাই। জরাজীর্ণ খুপরিঘরে দীর্ঘদিন বসবাস করছেন। শৈলকুপার ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিউটন বাইন জানান, আমি সবে মাত্র অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়েছি। এ ধারণের অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতার কথা আমার জানা নেই। তবে ২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২টি পাকা ঘর যদি কোন চেয়ারম্যান অবস্থাশালীদের দিয়ে থাকেন তবে সেটা হবে নিন্দনীয় কাজ। তিনি বলেন, ঘরের সুবিধাভোগীর নাম নির্বাচনের এখতিয়ার চেয়ারম্যানদের। এই সুযোগে এমনটি হতে পারে। হরিণাকুন্ডুর ইউএনও সাইফুল ইসলাম জানান, আমি শৈলকুপা থেকে বদলী হয়ে চলে যাচ্ছি। বিদায় বেলায় আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না। তবে চেয়ারম্যানের আত্মীয় স্বজনরা যদি অসচ্ছল হয় তবে দিতে পারেন। এ ব্যাপারে মির্জাপুর ইউনিয়ন সচিব রকিব উদ্দীন আল-ফারুক জানান, যতুটুকু জানি চেয়ারম্যানের ভাই-ভাতিজাগনও খুব স্বচ্ছল নন। তবে ব্যাংক কর্মকর্তার ভিটে বাড়িতে ঘর তোলার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন জানান, আমার কোন ভাই বেঁচে নেই। তবে ভাতিজারা দরিদ্র। তাদের মাঠে এক কাঠা জমিও নেই। শর্ত পুরণ ও বিধি মোতাবেক তারা সরকারী ঘর পাওয়ার যোগ্য। তিনি বলেন, সামনে ভোট। এ কারণে আমার প্রতিপক্ষরা এ সব ভিত্তিহীন খবর প্রচার করছে।